পূর্বেই বলেছি প্রাচীন গ্রিসে দার্শনিক থেলিসের মাধ্যমে শুরু হয় পাশ্চাত্য দর্শনের যাত্রা। থেলিস (খ্রিস্টপূর্ব ৬২৪-৫৪৭) মূলত তার পানি দর্শনের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। দার্শনিক সিসোরে বলেন, “থেলিস বলেছেন যে পানিই সমস্ত বস্তুর উৎপত্তি স্হল, ঈশ্বর জগতের আত্না এবং তিনি পানি হতেই যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করেন।” অনেক দার্শনিক মনে করতেন যে, থেলিস পানির মাঝে গতিশক্তি আছে বলে ভাবতেন। আর এই পানি হতেই জগতের সমস্ত বস্তুর উৎপত্তি। কিন্তু তার প্রকৃত মূল্য পানি দর্শনের জন্য নয়। সেই আদিম যুগে এমন চিন্তাভাবনার সূত্রপাত সর্বপ্রথম তিনিই ঘটান। কোনো রূপক বা কাল্পনিক উপাখ্যান না দিয়ে জগত সৃষ্টির মূল রহস্য সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দানের কৃতিত্ব সর্বপ্রথম থেলিসের মাঝেই দেখা যায়। সেজন্যই তাকে পাশ্চাত্য দর্শনের জনক বলা হয়ে থাকে। থেলিসের দর্শনের নির্যাস নিহিত আছে কিছু মতবাদের মধ্যে যেমন –
জড়বাদ:
জড় বা বস্তুকে ভিত্তি করে জড়বাদ বা বস্তুবাদ গড়ে উঠে। জড়বাদ বা বস্তুবাদ হচ্ছে এমন এক তত্ত্ববিদ্যক মতবাদ, যা জড়কে বিশ্বজগতের আদি সত্তা বলে মনে করে। জড়বাদের মূলকথা এই যে, জড়-ই এ জগতের আদি উপাদান। জগতের সবকিছু জড় থেকেই উদ্ভূত। এমন কি প্রাণ, মন ইত্যাদিও এ জড় থেকে উদ্ভূত।
ভাববাদ:
ভাববাদ এমন একটি দার্শনিক মতবাদ, যা ভাব বা ধারণা বা আত্মাকে একমাত্র প্রকৃত সত্তা বলে মনে করে। ভাববাদকে অধ্যাত্মবাদও বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ এ মতবাদ অনুসারে মন বা আত্মাই প্রাথমিক ও মৌলিক সত্তা। জড়বাদ যেমন জড় থেকে সব বস্তুর উৎপত্তির কথা বলে, তেমনি ভাববাদ যাবতীয় বস্তুর সৃষ্টির মূলে মন, ধারণা, চিন্তা বা আত্মার কথা বলে। জড়, গতি, শক্তি ইত্যাদি বস্তুতান্ত্রিক কথার পরিবর্তে ভাববাদ আত্মা, চেতনা, চিন্তা, বুদ্ধি ইত্যাদির কথা বলে।
অস্তিত্ববাদ:
অস্তিত্ববাদ স্বাধীনতার ওপর অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করে। কেবল সাধারণ মতের মতো স্বাধীনতার অর্থসম্পর্কীয় ব্যাখ্যা দেওয়াই অস্তিত্ববাদের মুখ্য উদ্দেশ্য নয়, বরং স্বাধীনতার অর্থ কি? কোন অর্থে মানুষ স্বাধীন, কতটুকু স্বাধীন ইত্যাদির ব্যাখ্যা দেওয়ার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করাই অস্তিত্ববাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। অস্তিত্ববাদের মতে, মানুষ স্বাধীনতার মধ্য দিয়েই মূল্যের মাপকাঠি তৈরি করে এবং নিজেই নিজের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে।
প্রয়োগবাদ:
এ মতবাদ মনে করে, যে দর্শনের সঙ্গে জীবনের কোনো যোগ নেই এবং যে দর্শন মানুষের কোনো প্রয়োজনে আসে না, সে দর্শন সত্যিকারের দর্শন নয়, কেননা তার কোনো ব্যবহারিক মূল্য নেই। ‘বাস্তবতাই জীবন’-এ কথা বলতে গিয়ে এ মতবাদ মানুষের জীবনের ওপর এমনভাবে গুরুত্বারোপ করে যে, এ মতবাদকে জীবন দর্শনও বলা হয়। ‘মানুষের জন্যই দর্শন’-এ কথাটির ওপর এ মতবাদ গুরুত্বারোপ করে বলে একে মানবতাবাদও বলা হয়।
দেহ ও মনের সম্পর্ক:
দেহ ও মনের সম্পর্ক সম্বন্ধীয় সমস্যাটি দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। সাধারণ দৃষ্টিতে দেখা যায়, মানুষের দেহ ও মন পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত এবং এদের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। দেহ ও মনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও এ সম্পর্কের ব্যাখ্যা নিয়ে বেশ মতভেদের সৃষ্টি হয়েছে। এ মতভেদের ওপর ভিত্তি করে দর্শনের ইতিহাসে যেসব মতভেদ রয়েছে, তার মধ্যে প্রধান মতবাদগুলো হচ্ছে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াবাদ, প্রয়োজনবাদ বা উপলক্ষবাদ, সমান্তরালবাদ, পূর্ব-প্রতিষ্ঠিত শৃঙ্খলাবাদ বা ঐক্যবাদ প্রভৃতি।
ইচ্ছার স্বাধীনতা:
ইচ্ছার স্বাধীনতা-সম্পর্কীয় সমস্যা দর্শনের আলোচনায় একটা গুরুত্বপূর্ণ ও চিত্তাকর্ষক স্থান দখল করে আছে। দুটি বিরোধী কর্মের মধ্যে একটি কর্মকে নির্বাচন করতে মানুষ কীভাবে স্বাধীন? মানুষের প্রত্যেকটি কর্মই কি নিয়ন্ত্রিত? মানুষ কি তার অদৃষ্টের বেড়াজালে আবদ্ধ? প্রাকৃতিক জগতের ঘটনাবলীর মতো মানুষের চিন্তা ও কর্ম নিয়ন্ত্রিত হলে মানুষের কি ইচ্ছার স্বাধীনতা থাকতে পারে? ইচ্ছার স্বাধীনতা না থাকলে মানুষকে কি তার কর্মের জন্য দায়ী করা যেতে পারে? এ ইচ্ছার স্বাধীনতা নিয়ে দর্শনের ইতিহাসে বিভিন্ন মতবাদের সৃষ্টি হয়। এ মতবাদগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অদৃষ্টবাদ, নিয়ন্ত্রণবাদ, অনিয়ন্ত্রণবাদ ও আত্মনিয়ন্ত্রণবাদ বা স্ব-নিয়ন্ত্রণবাদ।
ডায়োজেনিস :
ডায়োজেনিস ছিলেন গ্রিক দার্শনিক। তিনি খ্রিস্টপূর্ব ৪১২ অব্দে জন্মগ্রহণ করেন। ডায়োজেনিস একটি পিপার মধ্যে কয়েকটি কুকুর সঙ্গে করে নিয়ে থাকতেন। তার সম্বল বলতে একটি আলখাল্লা, একটি লাঠি আর রুটি রাখার একটি থলে। কাউকে তোষামোদ কিংবা পরোয়া না করার ব্যাপারে এ মহান দার্শনিকের বেশ খ্যাতি ছিল।
মহান বীর আলেকজান্ডার এ মহান দার্শনিকের জ্ঞানের সুনাম শুনে এক দিন তার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। পিপার মধ্যে শুয়ে থাকা ডায়াজেনিসকে দেখে তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন, আপনার জন্য আমি কী করতে পারি? ডায়োজেনিস তার দিকে তাকিয়ে সূর্যের দিকে ইশারা করে বললেন-আমি রোদ পোহাচ্ছি; আপনি সূর্যটা আড়াল করে দাঁড়িয়ে আছেন। আপাতত একটু সরে দাঁড়ালেই চলবে।
বুদ্ধিবাদ :
বুদ্ধিবাদ জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কীয় এমন একটি মতবাদ, যা মনে করে বুদ্ধিই জ্ঞানের একমাত্র উৎস। বুদ্ধিবাদের ইতিহাস আলোচনা করলে দেখা যায়, গ্রিসের কুটতার্কিক পণ্ডিত সোফিস্টদের জ্ঞানের উৎস প্রত্যক্ষণের সমালোচনা করতে গিয়ে সক্রেটিস (খ্রিস্ট পূর্ব ৪৬৯-৩৯৯) ও প্লেটো (খ্রিস্ট পূর্ব ৪২৭-৩৪৭) বুদ্ধিবাদের বীজ প্রথম বপন করেন।
সক্রেটিসের মতে, প্রত্যক্ষণ নয় বরং বুদ্ধিই জ্ঞানের প্রধান উৎস। তার মতে, বুদ্ধির মাধ্যমেই আমরা সার্বিক ধারণা গঠন করি এবং সার্বিক ধারণার সাহায্যে আমরা সব জ্ঞান পেয়ে থাকি। প্লেটো তার গুরু সক্রেটিসকে অনুসরণ করে বলেন, বুদ্ধিই জ্ঞানের প্রধান উপাদান। আমাদের আত্মা বা মন যেহেতু সক্রিয়, সেহেতু বুদ্ধি হলো এ আত্মার সহজাত ক্ষমতা এবং এর মাধ্যমে আমরা জ্ঞান লাভ করে থাকি।
বিচারবাদ:
জ্ঞানের ক্ষেত্রে বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতা, এ দুটি পন্থাই একতরফা। এদের মধ্যে মিলন প্রয়াসই জার্মান দার্শনিক ইমানুয়েল কান্টের (১৭২৪-১৮০৪) দর্শনের মূল কথা। তার কথা হলো, জ্ঞানের জন্য বুদ্ধি এবং অভিজ্ঞতা এ দুয়েরই প্রয়োজন রয়েছে, কিন্তু এদের একটাও পরিপূর্ণ জ্ঞানের জন্য এককভাবে যথেষ্ট নয়। কান্ট তার দর্শনকে বলেছেন বিচারবাদী দর্শন। কেননা তিনি বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতার মধ্যে যা কিছু অপূর্ণতা রয়েছে তাদের বিচার-বিশ্লেষণ করে, এদের প্রত্যেকটাই যে প্রত্যেকটির পরিপূরক সেটি দেখিয়েছেন।
অভিজ্ঞতাবাদ:
অভিজ্ঞতাবাদ জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কে এমন একটি মতবাদ, যা অভিজ্ঞতাকেই জ্ঞানের একমাত্র উৎস বলে মনে করে। অভিজ্ঞতাবাদের ইতিহাস আলোচনা করলে দেখা যায়, প্রাচীন গ্রিসের পরমাণুবাদীরা এবং সোফিস্টরা সর্বপ্রথম অভিজ্ঞতাবাদের কথা প্রচার করেন। সোফিস্টদের মতে, ইন্দ্রিয়-প্রত্যক্ষণই জ্ঞান লাভের একমাত্র উপায়। প্রোটাগোরাস-এর মতে, (খ্রিস্ট পূর্ব ৪৮০-৪১০) ‘মানুষই সবকিছুর পরিমাপক বা নির্ধারক।’
স্বজ্ঞাবাদ:
স্বজ্ঞাবাদ জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কীয় এমন একটি মতবাদ, যা স্বজ্ঞাকে জ্ঞানের একমাত্র উৎস বলে মনে করে। স্বজ্ঞাবাদ অনুসারে অভিজ্ঞতা বা বুদ্ধি জগত ও জীবন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান দিতে পারে না। একমাত্র সজ্ঞাই জগত ও জীবন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান দিতে পারে। সজ্ঞাবাদের প্রধান সমর্থক হেনরী বার্গসোঁ (১৮৫৯-১৯৪১)। তার রচনাবলীর মধ্যে ‘টাইম অ্যান্ড ফ্রি উইল’, ‘ম্যাটার অ্যান্ড মেমরি’, ‘ইনট্রোডাকশন টু মেটাফিজিকস’, ‘ক্রিয়েটিভ ইভলিউশন’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
মরমিবাদ :
মরমিবাদীরা অভিজ্ঞতা বা বুদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন না, কেননা তাদের মতে এগুলোর মাধ্যমে আসল জ্ঞান পাওয়া যায় না। তারা মনে করেন যে, একমাত্র অতিপ্রাকৃতিক বা মরমি অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই পরমসত্তা বা স্রষ্টার সন্ধান পাওয়া যায়। এই মরমিবাদের মধ্যে দার্শনিক গন্ধের পরিবর্তে ধর্মের গন্ধই বেশি গোচরীভূত হয়। মুসলিম দর্শনে সুফিদের মরমিবাদী দার্শনিক বলা হয়ে থাকে।
এবার সমকালীন পাশ্চাত্য দর্শন নিয়ে কিছু কথা বলার প্রয়াস পাবো-
বিখ্যাত ভাববাদী দার্শনিক হেগেলের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সময়কে দর্শনের আধুনিক যুগ বলা হয়। ১৮৩১ সালে মহামারি কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়ে হেগেলের মৃত্যু হয়। হেগেল তার জীবদ্দশায় এতটাই প্রভাব বিস্তারকারী দার্শনিক ছিলেন যে, তাকে নিয়ে কেউ কোন ধরনের মন্তব্য করতেন না। কিন্তু তার মৃত্যুর পর সুবিধাবাদী দার্শনিকেরা তার মতবাদ ও তত্ত্ব নিয়ে প্রচণ্ড সমালোচনা শুরু করে দেন। এছাড়া রীতিমত হেগেলিয় মতবাদ নিয়ে ডান পন্থী ও বামপন্থী দার্শনিকদের উদ্ভব হয়। ডানপন্থীদের কাজ ছিল হেগেলের তত্ত্ব ও মতবাদ সমূহ কে রক্ষা করা। বামপন্থী দের কাজ ছিল হেগেলের মতবাদকে বর্জন করে নতুন দর্শন প্রতিষ্ঠা করা। হেগেলের মৃত্যুর পর সমকালীন পাশ্চাত্য দর্শন বিকশিত হতে শুরু করে। সমকালীন পাশ্চাত্য দর্শন মূলত প্রতিষ্ঠিত হয়, হেগেলিয় ভাববাদের বিরুদ্ধে ও বস্তুবাদী দর্শনের পক্ষে। এই সময়ে ভাববাদী দর্শনকে প্রচণ্ড তিরস্কারের মুখোমু্খি হতে হয়েছে। ভাববাদী দর্শনের এত সমালোচনা হওয়ার পর এবং হেগেলের মৃত্যুর পর কিছু ভাববাদের জন্ম হয়। এছাড়াও সমকালীন পাশ্চাত্য দর্শনে অধিবিদ্যার প্রতি অনেক ক্ষোভ দেখা যায়; যেটা আমরা দর্শনের আধুনিক যুগে দেখিনি। কিন্তু অতি সাম্প্রতিক যুগে অধিবিদ্যাকে প্রায় প্রত্যাখ্যান করা হয়। সমকালীন পাশ্চাত্য দর্শনে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয় তা হলো জীবনমুখী দর্শন। এই যুগ ছাড়া অন্য কোন যুগে দর্শনকে এত জীবনমুখীটা হতে দেখা যায় নি। এই যুগকে বলা যায় জীবনের জন্য দর্শন। এই যুগে দর্শনের প্রধান বিষয় ছিল বস্তুবাদ দর্শন। বস্তুবাদ ছাড়াও অন্যান্য দর্শন আলোচিত হয়েছে। প্রথমে আমরা পাশ্চাত্য দর্শনের শাখা সমূহ সম্পর্কে জেনে নিই –
ক) বস্তুবাদী দর্শন
খ) বাস্তববাদী দর্শন
গ) ভাববাদী দর্শন
গ) বিবর্তনবাদী দর্শন
ঘ) প্রয়োগবাদী দর্শন
ঙ) দুঃখবাদী দর্শন
চ) রুপ বিজ্ঞান দর্শন
ছ) অস্তিত্ববাদ দর্শন
জ) বিশ্লেষণী দর্শন
ঝ) যৌক্তিক প্রত্যক্ষবাদ দর্শন
বস্তুবাদী দর্শন : বস্তুবাদী দর্শন প্রতিষ্ঠিত করা হয় হেগেলের মৃত্যুর পর তার ভাববাদী দর্শনের বিরুদ্ধে। এই বস্তুবাদী দার্শনিকরা ছিলেন হেগলীয় বামপন্থী দার্শনিক। বস্তুবাদী দার্শনিক মতবাদের ভেতর যান্ত্রিক বস্তুবাদ, মার্কসবাদ বা দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ মতবাদ অন্যতম।
বাস্তববাদী দর্শন : আমেরিকান ও বৃটিশ দার্শনিকদের দ্বারা এই বাস্তববাদী দর্শনের মতবাদ তৈরি হয়। হেগেলের ভাববাদী দর্শনকে প্রচন্ড সমালোচার মাধ্যমে নিয়ে আসেন এই বাস্তববাদী দার্শনিকগণ। বাস্তববাদী দর্শনের মধ্যে নব্য-বাস্তববাদ ও নব্য-সবিচার বাস্তববাদী প্রণিধানযোগ্য।
ভাববাদী দর্শন : হেগেলের ভাববাদী দর্শনকে সংস্করণের লক্ষ্যে সমকালীন পাশ্চাত্য দর্শনের যুগে কিছু দার্শনিক মতবাদ প্রতিষ্ঠিত হতে দেখা যায়। এদের ভিতর ছিল, আমেরিকান ভাববাদ , বৃটিশ ভাববাদ ও ইতালিও ভাববাদ।
বিবর্তনবাদী দর্শন : সমকালীন পাশ্চাত্য দর্শনের যুগে চার্লস ডারউইন ও হার্বাট স্পেন্সারের বিবর্তনবাদ প্রচন্ড গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক মতবাদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিবর্তনবাদ শুধু দর্শন ক্ষেত্রে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে আসেনি, তখন বিজ্ঞানের আলোচনার প্রধান কেন্দ্র বিন্দুতেও পরিণত হয়েছিল।
প্রয়োগবাদী দর্শন : প্রয়োগবাদী দর্শন আমেরিকান দার্শনিক পিয়ার্স উইলিয়াম জেমস এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রয়োগবাদী দর্শন সর্ব প্রথম জীবনমুখী দর্শনের পথ দেখায়। এর মাধ্যমে মানুষের জীবনের নানা মুখী সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসে দর্শন।
দুঃখবাদী দর্শন : জার্মান দার্শনিক শোপেনহাওয়ার তার ‘ইচ্ছাতত্ত্ব’ দার্শনিক মতবাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুঃখবাদী দর্শন প্রতিষ্ঠা করেন।
রুপ বিজ্ঞান দর্শন : জার্মান দার্শনিক এডমন হুসার্ল বস্তুর অবভাসের মাধ্যমে প্রকৃত সারসত্তা আবিষ্কারের মাধ্যমে রুপ বিজ্ঞান দর্শন আবিষ্কার করেন।
অস্তিত্ববাদ : ডাচ দার্শনিক সোরেন কিয়ার্কেগার্ডের মাধ্যমে অস্তিত্ববাদ দর্শন প্রতিষ্ঠিত হয়। জীবনমুখী দর্শন চর্চার জন্য অস্তিত্ববাদকে সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক মতবাদ বলা হয়। এই দার্শনিক মতবাদ ২য় বিশ্ব যুদ্ধের পর দর্শন শাস্ত্রের পাশাপাশি সাহিত্যে ব্যপক প্রভাব বিস্তার লাভ করে।
বিশ্লেষণী দর্শন : দর্শনের বর্তমান যুগকে বিশ্লেষণী দর্শনের যুগ বলা হয়। সমকালীন পাশ্চাত্য দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মতবাদ হল বিশ্লেষণী দর্শন মতবাদ এবং এর প্রভাব ইউরোপ আমেরিকা পর্যন্ত বিস্তৃত।
যৌক্তিক প্রত্যক্ষবাদ : দর্শনকে বৈজ্ঞানিক তথ্য বিশ্লেষণের মত, দার্শনিক মতবাদগুলোকে আরো স্বচ্ছকরণের লক্ষ্যে কিছু দার্শনিকগণ যৌক্তিক প্রত্যক্ষবাদ দর্শন প্রতিষ্ঠা করেন। এই গোত্রের দার্শনিকদের উদ্দেশ্য ছিল, অধিবিদ্যাকে বর্জন করা।
এভাবে বিভিন্ন দার্শনিকদের মাধ্যমে বিভিন্ন যুগে দর্শনের শাখাসমূহ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং দর্শন চর্চার পরিধি বিস্তৃত হয় ৷
তথ্যসূত্র :
১. পাশ্চাত্য দর্শন, শ্রী রমেশ চন্দ্র মুন্সী, বৈকুণ্ঠ বুক হাউজ, কলিকাতা ৷
২. পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস, ব্রার্ট্রান্ড রাসেল, অবসর, ঢাকা ৷
৩. গ্রিক দর্শন : প্রজ্ঞা ও প্রসার, মুহাম্মদ আব্দুল হালিম, নালন্দা, ঢাকা ৷
প্রাবন্ধিক: ভাস্কর সরকার,
পিএইচ.ডি গবেষক,
ফোকলোর বিভাগ,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
… [Trackback]
[…] Information on that Topic: doinikdak.com/news/23067 […]
… [Trackback]
[…] Information on that Topic: doinikdak.com/news/23067 […]
lasuna cheap – buy himcolin medication buy himcolin generic
cheap besifloxacin – besifloxacin over the counter purchase sildamax online
gabapentin 800mg over the counter – oral motrin 600mg how to get azulfidine without a prescription
order benemid 500 mg generic – etodolac us buy carbamazepine without a prescription
buy celebrex pill – urispas for sale indomethacin 75mg for sale
colospa oral – buy generic etoricoxib 60mg order pletal 100mg
buy diclofenac online cheap – voltaren 100mg oral order aspirin 75 mg for sale
buy rumalaya online cheap – buy elavil 10mg online buy endep without a prescription
buy pyridostigmine 60 mg generic – imuran 25mg over the counter buy imuran pills for sale
cheap voveran – isosorbide 40mg over the counter purchase nimodipine pill
purchase baclofen without prescription – feldene 20mg oral order feldene 20 mg for sale
order meloxicam for sale – buy ketorolac generic order toradol 10mg generic
how to buy cyproheptadine – zanaflex generic buy tizanidine 2mg for sale
artane tablets – artane generic voltaren gel purchase online
order omnicef 300mg – buy cefdinir paypal clindamycin over the counter
absorica price – buy dapsone 100 mg for sale deltasone 10mg ca
deltasone 40mg drug – omnacortil ca buy elimite paypal
buy permethrin without prescription – buy cheap generic benzac tretinoin generic
betamethasone usa – buy cheap generic monobenzone buy monobenzone no prescription