মোঃ মশিউর রহমান বিপুল, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ দিবস স্মরণে দুধকুমার নদীর ভাঙ্গন রোধ, তীর রক্ষা ও পরিকল্পিত বাঁধ নির্মানের দাবিতে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের সহযোগিতায়, ভাসানী পরিষদ, মাওলানা ভাসানী কৃষক সমিতি ও মাওলানা ভাসানী স্মৃতি সেবা সংঘ-এর যৌথ উদ্যাগে রবিবার দুপুরে উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের দুধকুমার নদীর ভাঙন কবলিত বাগবাড়ি গফুরের ঘাট এলাকায় এই মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে নদী ভাঙ্গনের শিকার শত শত মানুষ অংশ গ্রহণ করেন। এর আগে দুধকুমোর পাড়ের ভাসানী বাড়ি থেকে গফুরর ঘাট পর্যন্ত প্রতীকি লংমার্চ পালন করেন তারা।
দিবসটি স্মরণে ও দুধকুমোর নদীর ভাঙন রোধকল্পে মানববন্ধন শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা দেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা, দুধকুমোর নদের ভাঙন রোধ ও তীর রক্ষার স্থায়ী সমাধান, তিস্তা প্রকল্পের অনুরৃপ ‘দুধকুমর নদীর প্রকল্প’ গ্রহনের মাধ্যমে সোনাহাট স্থল বন্দর কেদ্রিক বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জোর দাবী জানান।
ভাসানী পরিষদ ভূরুঙ্গামারী উপজেলা সভাপতি ইউনুস আলী সবুজের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি ও ভাসানী পরিষদর উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা গরিলা লিডার ড. শফিকুল ইসলাম কানু। তিনি বলেন, মজলুম জননেতার দেখানো পথ ধরে বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা আদায় আজ সময়ের দাবী। এই দাবী আদায়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হতে হবে।
সমাবেশের মুখ্য আলোচক মাওলানা ভাসানী কৃষক সমিতির সভাপতি ও ভাসানী পরিষদের সদস্য সচিব আজাদ খান ভাসানী বলেন, ৫৪টি অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা আদায়ের মাধ্যমে আমাদের জীব বৈচিত্র রক্ষা ও অর্থনীতির জন্য টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সোনাহাট স্থল বন্দর সম্প্রসারণ করে দুধকুমোর নদি বহুমুখী প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই অঞ্চলের দারিদ্র্য ও জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবলা করা সম্ভব হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন তিলাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহীন শিকদার, ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম, মওলানা ভাসানী স্মৃতি সেবা সংঘের সভাপতি মনিরুজ্জামান খান ভাসানী, বাংলাদেশ কৃষক মজুর সংহতির কেদ্রীয় কমিটির সদস্য মোকাদ্দেস হোসেন শিকদার, দীপক কুমার রায়, হাফিজুর রহমান খান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, পদ্মা নদীর উজানে ভারত সরকার কর্তৃক অবৈধভাবে ফারাক্কা বাঁধ তৈরির প্রতিবাদে ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে রাজশাহীর মাদরাসা ময়দান থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট পর্যন্ত প্রায় ৬৪ মাইলব্যাপী ফারাক্কা লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ফারাক্কার প্রাণঘাতি ব্যারাজ ধংস করে দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত দুই পাশের মানুষ, পশুপাখি, জীব-অনুজীব অর্থাৎ দৃশ্যমান বা দৃশ্যর বাইরে থাকা সকল প্রাণের রক্ষা এবং তাদের হেফাজত নিশ্চিত করার জন্য এক মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাওলানা ভাসানী, যা ফারাক্কা লংমার্চ নামে পরিচিত।
… [Trackback]
[…] Find More on to that Topic: doinikdak.com/news/15963 […]