আর মাত্র মাস দুয়েক পরই পর্দা উঠছে ক্রিকেটের মারকাটারি সংস্করণ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি আফগানিস্তান মূল পর্বে খেলার সুযোগ পেলেও র্যাংকিংয়ে পিছিয়ে থাকার কারণে আগে বাছাইপর্বের বাধা ডিঙাতে হবে বাংলাদেশকে।
এতেই বোঝা যায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থান। তবে সম্প্রতি জিম্বাবুয়েকে তাদের মাটিতে হারিয়ে ও ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভূমিধস বিজয়ে বিশ্বকাপে ভালো করার স্বপ্ন বুঁনছে বাংলাদেশ।
আর এ স্বপ্নদ্রষ্টা আর কেউ নন; দলের প্রাণভোমরা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এর আগে ক্রিকেটের এ সংক্ষিপ্ত সংস্করণে বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও জানিয়েছেন টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা। অজিদের ৪-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দেওয়ার পর সাকিব দল কাপ্তানের সুরেই বললেন, এমন ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার (৯ আগস্ট)শেষ ম্যাচের পর ধারাভাষ্যকার আনজুম চোপড়া সাকিবকে প্রশ্ন করেন, ঘরের মাঠ আর চেনা কন্ডিশন বলেই এমন জয় কিনা, জবাবে সাকিব বলেন, অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর আগে আমরা জিম্বাবুয়েতে গিয়ে তাদেরও হারিয়েছি। আর প্রতিটি ম্যাচেই আমাদের বোলাররা দুর্দান্ত বল করছে। শুধু স্পিনাররা নয়, মুস্তাফিজ-শরিফুলরা দারুণ করেছে। তাই আমার কাছে মনে হয়, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পাঁচ ম্যাচে বোলিংয়ের যে ধারাবাহিকতা ছিল, এটা যদি ধরে রাখতে পারি বিশ্বকাপ পর্যন্ত, আমাদের পক্ষে ভালো কিছু করা সম্ভব।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৩১ রানের পুঁজি নিয়েও ২৩ রানের দাপুটে জয় পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ১২১ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৮ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জয় পায় টাইগাররা। তৃতীয় ম্যাচে ১২৭ রান করেও দুর্দান্ত বোলিং করে ১০ রানের জয়ে প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। শনিবার (৭ আগস্ট) চতুর্থ ম্যাচে ১০৪ রানে গুটিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ হেরে যায় ৩ উইকেটে। মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ৯ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। আর শেষ ম্যাচে ১৯ বলে ৯ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশ অজিদের ৫ উইকেট নিয়ে নেয়। সাকিব নেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট।
এ সিরিজে সর্বোচ্চ ৮ উইকেট নেন নাসুম আহমেদ। মুস্তাফিজ-শরিফুল-সাকিব নেন ৭টি করে উইকেট। ওভার প্রতি সবচেয়ে কম রান দিয়েছেন মুস্তাফিজ (৩.৫২)। নাসুম দিয়েছেন ৫.১১ রান করে। সাকিব দিয়েছেন ৬.৪৫ ও শরিফুল দিয়েছেন ৬.৩৮ রান করে। বাংলাদেশ দলের বোলিংকে কেন্দ্র করে সাকিব এ সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। এই ছোট পরিসংখ্যানে তাই বোঝা যায়। টানা দুটি সিরিজ জিতে বাংলাদেশের র্যাংকিংয়েও ঘটতে পারে উন্নতি। তবে ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে রান না পাওয়ার কথাও বলেছেন সাকিব। উইকেট কঠিন হওয়ায় এ নিয়ে আপাতত চিন্তিত নন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
সাকিব বলেন, হয়তো প্রতি ম্যাচেই আমরা ১০-১৫ রান করে বেশি করতে পারতাম। একটা সময় ছিল, যেখানে এটা সম্ভব ছিল। তবে সেটা বলার পরও, উইকেট এতটাই কঠিন ছিল যে নতুন ব্যাটসম্যানের জন্য খুবই কঠিন ছিল। আসলে তাই ব্যাটসম্যানদের নিয়ে বলার কিছু নাই। আর একটা সিরিজ দিয়ে কাউকে বিচার করা ঠিক হবে না, কারণ কন্ডিশন খুব কঠিন ছিল ব্যাটসম্যানদের জন্য।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটের সিরিজ জিতে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দেয়। সামনে আসছে নিউজিল্যান্ড। সবকিছু মিলিয়ে এসব সিরিজ বাংলাদেশকে বিশ্বকাপে আশা জোগাবে বলে মন্তব্য করেন সাকিব।
তিনি বলেন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জয়, এখানে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়, এরপর নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে আছে, এসব আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস জোগাবে বিশ্বকাপের দিকে এগিয়ে চলার পথে। আমার মনে হয় ভালো প্রস্তুতিই হবে।