বিনিয়োগ তথা উন্নয়নের পূর্বশর্ত আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা। এক্ষেত্রে অগ্রগামী বিমান যোগাযোগ। কিন্তু বাংলাদেশ এক্ষেত্রে পিছিয়ে। বিমানপথ থাকলেও উড়োজাহাজ চলাচলের জন্য উপযুক্ত বিমানবন্দরের সংখ্যা কম। বরিশাল, কুমিল্লা, ঠাকুরগাঁও ও খুলনায় বিমানবন্দর আছে; কিন্তু পুরোপুরি সচল নয়। কোনোটি পরিত্যক্ত, কোনোটি অব্যবহৃত। এগুলো সচল হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ত। পাশাপাশি সহজ হতো মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহণ
অনাদর-অবহেলার ৪২ বছর: বরিশাল বিমানবন্দর সবার পেছনে
আকতার ফারুক শাহিন, বরিশাল
আকাশ থেকে ফসলের জমিতে কীটনাশক ছিটানোর কাজে ব্যবহৃত এক ইঞ্জিনের বিমানের রেস্ট ও রিফুয়েলিং পয়েন্ট থেকে আজকের বরিশাল বিমানবন্দর। মাঝে প্রায় ৬০ বছর পেরিয়ে গেলেও যেন একই জায়গায় পড়ে আছে বিমানবন্দরটি। দেশের অন্যসব বিমানবন্দরের সঙ্গে তুলনা করলে এখানে কোনো কিছুই মিলবে না।
দৈনিক ৭-৮টি ফ্লাইট চললেও বিমানবন্দরটির উন্নয়ন-সম্প্রসারণ কিংবা আধুনিকীকরণসহ সবকিছুই যেন রহস্যজনক কারণে থমকে আছে। বিমানের ওঠানামা থেকে শুরু করে সবকিছুতেই যাত্রীদের নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সবকিছুতেই যেন সবার পেছনে বরিশাল বিমানবন্দর।
বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১১ জেলার সঙ্গে ঢাকার উড়ালপথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বিমানবন্দরটি পাকিস্তান আমলে এয়ার স্ট্রিপ হিসাবে যাত্রা শুরু করে। এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট বিমান ওঠানামার জন্য তখন বরিশাল নগরী থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে একটি ছোট্ট রানওয়ে নির্মাণ করা হয়। ফসলি জমিতে আকাশ থেকে বিমানের মাধ্যমে কীটনাশক ছিটানো হতো। একটানা খুব বেশি সময় উড়তে না পারা বিমানগুলোর রেস্ট ও রিফুয়েলিংয়ের জন্য এটি ব্যবহার হতো।
মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে পাকিস্তানি বাহিনীর বোমারু বিমানের গোলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্ট্রিপটিকে সংস্কারের পর এক ইঞ্জিনের বিমান ওঠানামায় আরও বেশ কয়েক বছর ব্যবহার করা হয়। এরপর এটি পরিত্যক্ত হয়। ১৯৭৯ সালের দিকে শর্ট টেক-অফ ল্যান্ডিং বা স্টল সার্ভিসের যাত্রীবাহী বিমান ওঠানামার জন্য এখানে ২ হাজার ৮০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে রানওয়ে তৈরি করা হয়। কিছুদিন স্টল সার্ভিসের ছোট বিমান ঢাকা-বরিশাল রুটে যাত্রী পরিবহণ করলেও পরে বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে প্রায় ৪০ বছর চালু ও বন্ধ করার মধ্য দিয়ে বিমানবন্দরটি টিকে রয়েছে। পরিস্থিতির বদল হলেও ভাগ্য বদলায়নি বন্দরটির।
বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট রানওয়ের বিমানবন্দর হলো বরিশাল বিমানবন্দর। এখানে রানওয়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ৬ হাজার ফুট। এত ছোট রানওয়েতে অভ্যন্তরীণ রুটের বিমানের উড্ডয়ন-অবতরণে কষ্ট হয়। এখানে বড় বিমানের ওঠানামা প্রায় অসম্ভব। ২০০৭ সালে সিডরের তাণ্ডবে দক্ষিণ উপকূল বিধ্বস্ত হলে ছোট রানওয়ের জটিলতা বড় হয়ে দেখা দেয়। সেসময় ত্রাণ পরিবহণের কাজে বিমানবন্দরটি ব্যবহৃত হয়। রানওয়ে ছোট হওয়ায় বিদেশি অনেক বিমান এখানে নামতে পারেনি। ফলে ঢাকায় ত্রাণ নামিয়ে তা দক্ষিণে পাঠাতে হয়।
বরিশাল নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব ডা. মিজানুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় প্রতিবছর ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়। এরকম ক্ষেত্রে জরুরি সহায়তার বিষয়টি মাথায় রেখে হলেও দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বিমানবন্দরটির রানওয়ে বড় করা খুবই জরুরি। এখানে যে টার্মিনাল ভবন রয়েছে, সেটিও বেশ পুরোনো। দৈনিক ৭-৮টি ফ্লাইটে আসা-যাওয়া করা যাত্রীদের জন্যও এটি অপ্রতুল। ১৯৯১ সালে নেওয়া প্রকল্পের আওতায় নির্মিত টার্মিনাল ভবনের ব্যবহার ১৯৯৫ সালে শুরু হয়। তখন এ বন্দর দিয়ে সপ্তাহে মাত্র দুইদিন বিমান চলাচল করত। তখনকার তুলনায় বর্তমানে প্রায় ২০ গুণ বেশি যাত্রী চলাচল করলেও আয়তন আর বাড়েনি টার্মিনালের। গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গাটিও তার ধারণক্ষমতা হারিয়েছে বহু বছর আগে।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বিমানবন্দরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের কারণে যাত্রীদের ভিড় সামলাতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। এমন সময় যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করা রীতিমতো কঠিন হয়ে পড়ে। এখানে বিমানের ওঠানামার সব সুবিধা অনুপস্থিত। রানওয়ে এত ছোট যে পাশাপাশি দুটি বিমানের অবস্থান করতেও অসুবিধা হয়। এখানকার অ্যাপ্রোনের আকার ২০০ ফুট প্রস্থ ও ২৫০ ফুট দৈর্ঘ্যরে।
সিভিল এভিয়েশনের প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইটিএও) নীতিমালা অনুযায়ী যে কোনো বিমানবন্দরে রানওয়ের কেন্দ্র থেকে দুইদিকে অন্তত ৫০০ ফুটের মধ্যে কোনো স্থাপনা থাকতে পারবে না। কিন্তু এখানে ২০০ ফুটের মধ্যে নিরাপত্তাবেষ্টনী রয়েছে।
এছাড়া ১৬০ একর জমির ওপর নির্মিত বিমানবন্দরটি নিরাপত্তার দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করে আইটিএও। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী রানওয়ে সম্প্রসারণসহ অবকাঠামোগত ঝুঁকি দূর করতে এর আয়তন ৩২৫ একর বাড়াতে হবে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এখানে বিমান ওঠানামায় ব্যবহৃত ল্যান্ডিং ইকুইপমেন্টও আধুনিক নয়।
বিমানের এক পাইলট জানান, আইএলএস থাকলে ঘন কুয়াশা কিংবা পাইলট অসুস্থবোধ করলেও অটো পাইলটে খুব সহজে বিমান অবতরণ করতে পারে। দেশের যেসব বিমানবন্দরে এখনো আইএলএস নেই, সেখানে অন্তত ডিভি ওয়্যার আছে। এ সিস্টেমেও বিমান উড্ডয়ন কিংবা অবতরণে খুব একটা সমস্যা হয় না। বরিশাল বিমানবন্দরের এনডিবি পুরোনো হওয়ায় অনেক সময় উড্ডয়ন ও অবতরণে মানসিক চাপে পড়তে হয়।
বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, আইএলএস সিস্টেম তো বাংলাদেশের কোনো বিমানবন্দরেই নেই। এছাড়া বরিশাল বিমানবন্দরে বর্তমানে যে সিস্টেম রয়েছে, একে খুব বেশি পুরোনো বলা যাবে না। আমরা বর্তমানে সেখানে পারফরম্যান্স বেইজড ল্যান্ডিং সিস্টেম চালু করেছি। এটা যথেষ্ট আধুনিক। এ সিস্টেমে উড্ডয়ন ও অবতরণে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
এক কর্মকর্তা বলেন, দেশের প্রায় সব বিমানবন্দরে বর্তমানে উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এসব কাজে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার। অথচ এখানে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মেরামত ও সংস্কারের জন্য কিছু টাকা দেওয়া হয়েছিল। এরপর আর কোনো খবর নেই।
এ ব্যাপারে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন বলেন, বরিশাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণসহ আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত জরিপ হয়েছে। তবে করোনার কারণে কাজে কিছুটা ধীরগতি তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সিভিল এভিয়েশনে খুব শিগগিরই দেড় হাজারের বেশি লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। জানা যায়, বরিশাল বিমানবন্দরে ১২২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ থাকলেও আছেন মাত্র ৬২ জন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন ভবনগুলোর অবস্থাও করুণ। নতুন ভবন নির্মাণ করা হলেও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তাবেষ্টনীর অনেকটা অংশ ভাঙা। কেবল জীবজন্তুই নয়, মানুষও ঢুকে পড়ে রানওয়েতে। কিছুদিন আগে এরকম একটি ঘটনায় ইউএস-বাংলার একটি বিমান রানওয়েতে নামতে না পেরে বেশ কিছুক্ষণ আকাশে চক্কর কাটতে হয়। সেবার রানওয়েতে ঢুকে পড়েছিল কুকুর।
ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর: চার দশক ধরে অব্যবহৃত
এটিএম সামসুজ্জোহা, ঠাকুরগাঁও
উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দরটি দীর্ঘ ৪০ বছর ৮ মাস ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এটি এখন একটি গো-চারণভূমি। কিছু জমিতে হচ্ছে চাষাবাদ। রানওয়ে ফসল শুকানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, এভাবে ফেলে না রেখে বিমানবন্দরটি চালু করা হোক। এতে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, খানসামা ও বোচাগঞ্জসহ ১৩টি উপজেলার মানুষকে ঘুরপথে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে যেতে হবে না। বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পাবেন এ এলাকার মানুষ। এ অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে আসবেন শিল্পপতি-ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, ১৯৪০ সালে ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সড়কের পাশে শিবগঞ্জ এলাকায় ৫৫০ একর জমির ওপর ছোট্ট এ বিমানবন্দরটি নির্মিত হয়।
১৯৬৫ সালে ভারত-পাক যুদ্ধের সময় ভারতীয় বিমানবাহিনী হামলা চালালে বিমানবন্দরের রানওয়েটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিমানবন্দরটি সংস্কার করা হয় এবং কয়েক বছর কিছু বাণিজ্যিক ফ্লাইটও পরিচালিত হয়।
ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দরটির রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী মকবুল হোসাইন জানান, ১৯৮০ সালে লোকসানের কারণ দেখিয়ে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরে দাবির মুখে ১৯৯৪ সালে পুনরায় বিমান চলাচল চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে রানওয়ে, টার্মিনাল ভবন ও বিদ্যুতায়নের কাজসহ নানা সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়।
ওই সময় অ্যারো বেঙ্গল ও বোরাকসহ ছয়টি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে ঢাকা-ঠাকুরগাঁও রুটে স্টল বিমান সার্ভিস চালুর জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি হয়। পরে তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। এর কিছুদিন পর স্টল বিমান সার্ভিস চালুর প্রক্রিয়াও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। অব্যবহৃত বিমানবন্দরটিকে দেখভালের জন্য তিনি কর্মরত রয়েছেন।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, উত্তরের অবহেলিত জেলা হলো ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এ অঞ্চলে তেমন কোনো বড় শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেনি। এর একমাত্র কারণ অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। রাজধানীর কোনো শিল্পোদ্যোক্তা এ কারণেই এই দুটি জেলায় ভারী কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি।
বিমানবন্দরটি চালু হলে এই এলাকায় শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে। এতে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মনতোষ কুমার দে বলেন, বিমানবন্দরটি চালু হলে শুধু ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষই সুবিধা ভোগ করবে না; আশপাশের কয়েকটি জেলার মানুষও এর সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
ঠাকুরগাঁও চেম্বারের সাবেক সভাপতি মোদাচ্ছের হোসেন বলেন, বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু হলে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়ের মানুষকে আর ঘুরপথে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে যেতে হবে না।
ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি হাবিবুল ইসলাম বাবলু বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় ঢাকার ব্যবসায়ীরা এ অঞ্চলে শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে আগ্রহী নন। বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু হলে এ এলাকায় অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। এতে মানুষের কর্মসংস্থান ও জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। কার্গো বিমান চালু হলে অন্য জেলা থেকে মালামাল পরিবহণ করা যাবে এবং এ এলাকার মালামাল সহজে ও কম খরচে বিভিন্ন জেলাসহ বহির্বিশ্বে পাঠানো যাবে।
ঠাকুরগাঁও বিসিক উপব্যবস্থাপক নূরেল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী এখানে ৫০ একর জমির ওপর কৃষি ভিত্তিক (খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ) শিল্পকারখানা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া অল্প সময়ের মধ্যে ইকোনোমিক জোনেরও কাজ শুরু হবে। চ্যালেঞ্জিং দুনিয়ায় বিমান এখন আর বিলাসিতা নয়, এসব বিবেচনায় ঠাকুরগাঁওয়ের বিমানবন্দরটি চালু করা জরুরি।
ঠাকুরগঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন বলেন, এ জেলা ফল-ফসলে সমৃদ্ধ। উৎপাদিত কৃষিপণ্য দ্রুত সময়ে বাজারজাতের জন্য বিমানবন্দরটি চালু করা প্রয়োজন।
ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুহম্মদ সাদেক কুরাইশী বলেন, ‘বিমানবন্দরটি চালু হলে অন্য জেলা থেকে শিল্পপতিরা এখানে শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে আগ্রহী হবে।’
জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সাবেক বিমান পরিবহণ ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ঠাকুরগাঁওয়ের শিবগঞ্জ এলাকায় বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন। ওই সময় তিনি বিমানবন্দরটি চালুর প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। এ ব্যাপারে ৩ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা বলেন তিনি। কিন্তু এরপর কি হয়েছে তা আজও অজানা।
জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরটি চালু হলে এ জেলার জন্য নিশ্চই ভালো হবে। তবে শিগগিরই চালুর সম্ভাবনা দেখছি না।
কুমিল্লা বিমানবন্দর: সবই আছে, শুধু ওঠানামা করছে না বিমান
আবুল খায়ের, কুমিল্লা
ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেটের বাইরে দেশে যে কটি বিমানবন্দর রয়েছে কুমিল্লা তার অন্যতম। প্রতিদিনই এ বন্দরের সিগন্যাল ব্যবহার করছে দেশ-বিদেশের কমপক্ষে ৪০টি এয়ার বাস। আর সিগন্যালিং থেকে মাসে আয় হচ্ছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এ বিমানবন্দরে কোনো বিমান নামছে না এবং এখান থেকে কোনো বিমান ওড়ে অন্যত্র যাচ্ছেও না।
একটু উদ্যোগ নিলেই কিন্তু এখানে বিমান ওঠানামার কাজ শুরু করা সম্ভব। কুমিল্লা বিভাগ না হলেও বিভাগীয় সব দপ্তর রয়েছে এ জেলায়। রয়েছে সমৃদ্ধ ইপিজেড, বার্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। বিমানবন্দরটি চালু করা হলে এটি একটি লাভজনক বিমানবন্দর হতে পারে বলে অনেকের মত। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়রা বিমানবন্দরটি পুরোপুরি চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন।
কুমিল্লা এখন শীর্ষ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী জেলা। এখানকার মোট জনসংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ। এর ১৩ শতাংশই বিদেশে কর্মরত। এছাড়া বিমানবন্দরসংলগ্ন রয়েছে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড)।
তাই এটি সচল হলে প্রবাসীদের আসা-যাওয়ার সুবিধার পাশাপাশি ইপিজেডে অনেক বিদেশি বিনিয়োগে আসবেন। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যেরও প্রসার ঘটবে।
জানা যায়, দেশে মোট তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে। এছাড়া সাতটি শর্ট টেক অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং (স্টল) বিমানবন্দর রয়েছে। এই সাতটি স্টল বিমানবন্দরের একটি কুমিল্লা বিমানবন্দর।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪১-৪২ সালে নগরীর দক্ষিণ পাশে নেউরা, ঢুলিপাড়ার ও রাজাপাড়া এলাকার পাশে ৭৭ একর ভূমিতে তৈরি হয় এ বিমানবন্দর। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত বিমানবন্দরটি অভ্যন্তরীণ রুটে সচল ছিল। পরে অজ্ঞাত কারণে এখানে বিমান ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়।
কুমিল্লা বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বিমান ওঠানামা না করলেও এখনও চালু অবস্থাতেই আছে বিমানবন্দরটি। এ বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী অনেক বিমানকে আকাশপথের সিগন্যাল দেওয়া হয়।
প্রতিদিন এ বিমানবন্দর থেকে সিগন্যাল ব্যবহার করে অন্তত ৪০টি বিমান। এটির সিগন্যাল সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে ভারতের অভ্যন্তরীণ রুট, ব্যাংকক ও সিঙ্গাপুরের বিমান। আগরতলা বিমানবন্দরে যাওয়া বিমানও এ রুটে চলাচল করে।
সূত্র আরও জানায়, কুমিল্লা বিমানবন্দরে নেভিগেশন ফ্যাসিলিটিস, কন্ট্রোল টাওয়ার, ভিএইচএফ সেট, এয়ার কমিউনিকেশন যন্ত্রপাতি, ফায়ার স্টেশন, ফায়ার সার্ভিসসহ সব সুবিধাই রয়েছে। যাত্রীদের জন্য আলাদা রুমও আছে। সব সুবিধা থাকার পরও উদ্যোগের অভাবে গত ৪ দশকের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে বিমানবন্দরটি। তবে এটি চালু করতে খুব বেশি অর্থেরও প্রয়োজন নেই। শুধু উদ্যোগ নিয়ে রানওয়ে মেরামত এবং ফায়ার সার্ভিস ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারের কয়েকজন জনবল নিয়োগ করলেই এ বিমানবন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে স্টল বিমান চলাচলের পাশাপাশি কলকাতা, আগরতলাসহ বিভিন্ন রুটে বিমান চলাচল সম্ভব।
এসব কাজের জন্য প্রয়োজন মাত্র ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা। বিমানবন্দরটি চালু হলে বৃহত্তর কুমিল্লার মানুষ সহজেই দেশের বিভিন্ন স্থান ও আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করতে পারবেন। সুবিধা হবে প্রবাসীদেরও, বাঁচবে সময়। পাশাপাশি ইপিজেডসহ জেলার ব্যবসা-বাণিজ্যেও প্রসার ঘটবে।
জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাসিন্দা প্রবাসী জাহাঙ্গীর হোসেন বাবুল বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি প্রবাসী বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়খালী অঞ্চলের ৬ জেলায়। গত ৪ দশকের বেশি সময় ধরে কুমিল্লা বিমানবন্দরটি বন্ধ থাকায় আমরা অনেক পিছিয়ে পড়েছি। দ্রুত বিমানবন্দরটি চালু করা দরকার। পাশাপাশি এ বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসাবে প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা বিমানবন্দর চালুর দাবি করে আসছি। এটি চালু হলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অনেক ভালো হবে। আমাদের বিমানবন্দরতো সচল আছেই, শুধু চালুর দাবি জানাচ্ছি।
কুমিল্লা ইপিজেডে কর্মরত কয়েকজন জানান, এ ইপিজেডে বেশ কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ না হওয়ার কারণে আগ্রহ থাকার পরও অনেক বিদেশি এখানে বিনিয়োগ করতে আসছেন না। ইপিজেডের পাশের বিমানবন্দরটি চালু হলে অনেক বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাপকভাবে বাড়বে।
জানতে চাইলে কুমিল্লা বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক আবদুল গণি বলেন, প্রতিদিন আমাদের সিগন্যাল ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক রুটের ৩৫ থেকে ৪০টি বিমান। এতে মাসে ৩০ লাখ টাকার মতো আয় করছি। এ বিমানবন্দরে সব কিছুই আছে। শুধু উদ্যোগের অভাবে এখানে বিমান ওঠানামা করে না। বর্তমানে আমাদের এখানে ২০ জন কর্মরত রয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে একটু উদ্যোগ নিলেই বিমানবন্দরটি সচল করা সম্ভব। এজন্য রানওয়ে মেরামতসহ কিছু কাজ করতে হবে। পাশাপাশি আরও ২০-২২ জন লোকবল নিয়োগ দিতে হবে। আমরা চাই দ্রুত বিমানবন্দরটি চালু হোক।
খানজাহান আলী বিমানবন্দর: নানা জটিলতায় দুই যুগেও পূর্ণতা পায়নি
নূর ইসলাম রকি, খুলনা
দুই যুগেও বাগেরহাটের খানজাহান আলী বিমানবন্দর পূর্ণতা প্রায়নি। ক্ষমতার পালাবদল, পিপিপি না রাজস্ব খাতে বাস্তবায়ন হবে-সেই প্রশ্ন, করোনাসহ নানা কারণে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত বিমানবন্দরটি এখনও স্বপ্নই রয়ে গেছে। প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য।
১৯৯৬ সালে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ফয়লায় খুলনা-মোংলা সড়কের পাশে ‘খানজাহান আলী বিমানবন্দর’ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। যা একটি ‘শর্ট টেক অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং বন্দর’ হিসাবে চালু করার কথা।
১৯৯৮ সালে ৪১ দশমিক ৩০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। তবে ২০০১ সালে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের ফলে বিমানবন্দরের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
আবার ক্ষমতায় ফিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা খানজাহান আলী বিমানবন্দরটি পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দরে রূপ দিয়ে নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। এর চার বছর পর প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন লাভ করে।
এরপর ৬২৬ দশমিক ৬৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। বতর্মানে সীমানা প্রাচীর ও ল্যান্ড ফিলিংয়ের কাজ চলছে। কিন্তু বিমানবন্দরটি পিপিপির মাধ্যমে হবে নাকি রাজস্ব খাতে হবে এ নিয়ে নতুন করে জটিলতা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কাজি আমিনুল হক যুগান্তরকে বলেন, বিদেশি ব্যবসায়ীরা খুলনা-বাগেরহাট এলাকায় আসতে চান না। কারণ এই এলাকায় কোনো এয়ারপোর্ট নেই। বিমানবন্দর না থাকায় সুন্দরবনে বিদেশি পর্যটকও কম আসছেন। বিমানবন্দরটি হলে মোংলা পোর্টের আয়ও বাড়বে। খুলনা থেকে প্রায় আড়াই-তিন ঘণ্টা সড়ক পথ অতিক্রম করে যশোর বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত ব্যবসায়ীদের জন্য বড় সমস্যা।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, বিমানবন্দরটির জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এখন সীমানা প্রাচীর ও ল্যান্ড ফিলিংয়ের কাজ চলছে। সম্প্রতি সিভিল অ্যাভিয়েশন থেকে একটি টিম এসে বিমানবন্দরের কাজ পরিদর্শন করে গেছে।
বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য বেগম হাবিবুর নাহার যুগান্তরকে বলেন, রামপাল ও মোংলা এলাকায় উন্নয়নের জন্য বিমানবন্দরটির খুবই দরকার। কিন্তু এটা বাস্তবায়নে অভ্যন্তরীণ কিছু জটিলতা আছে যা মিডিয়ার কাছে বলা সম্ভব নয়। জটিলতা দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ লাগবে।
একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও খুলনা সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ১৯৯৬ সালে বিমানবন্দরটি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু এটা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) না রাজস্ব খাতে হবে এটা নিয়ে জটিলতা আছে। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকাসহ নানা কারণে এটা বাস্তবায়নে পেছনে পড়তে হয়েছে।
জানাতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, পিপিইয়ের মাধ্যমে যে সব প্রস্তাবনা পাওয়া গেছে এগুলো যুক্তিসঙ্গত নয়। এর মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সুফল মিলবে না। যেহেতু মোংলা বন্দর, সুন্দরবনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খুলনা-বাগেরহাট এলাকায় আছে তাই রাজস্ব খাতে এটি নির্মাণের পরিকল্পনা সরকারের। পদ্মা সেতুর পূর্ণতা মিললেই ওই এলাকার অর্থনৈতিক চাকা আরও সচল হবে। এ কারণে রেলপথ, নদীপথের পাশাপাশি বিমানবন্দরের চাহিদাও রয়েছে। তবে করোনার কারণে আমরা কিছুটা পিছিয়ে পড়েছি।
… [Trackback]
[…] Info to that Topic: doinikdak.com/news/56268 […]
… [Trackback]
[…] Read More here on that Topic: doinikdak.com/news/56268 […]
I know this if off topic but I’m looking into starting my own weblog and
was wondering what all is required to get setup? I’m assuming
having a blog like yours would cost a pretty penny?
I’m not very internet smart so I’m not 100% sure. Any tips or advice would be greatly appreciated.
Appreciate it
Hi there, I enjoy reading all of your article post.
I wanted to write a little comment to support you.
… [Trackback]
[…] Here you will find 20349 additional Info on that Topic: doinikdak.com/news/56268 […]
buy lasuna cheap – buy generic diarex himcolin online
buy besivance no prescription – order sildamax cheap sildamax for sale
purchase gabapentin generic – ibuprofen 600mg without prescription sulfasalazine 500mg tablet
buy cheap probenecid – order probalan generic purchase carbamazepine
celebrex 100mg tablet – purchase urispas online cheap indocin order
mebeverine 135 mg oral – order arcoxia online cheap pletal 100mg ca
voltaren pills – purchase cambia sale buy cheap generic aspirin
purchase rumalaya online – order endep 50mg pills order elavil pill
pyridostigmine 60mg sale – order azathioprine 50mg without prescription buy imuran tablets
buy baclofen 10mg – order feldene 20 mg without prescription purchase piroxicam generic
order meloxicam 7.5mg generic – order toradol sale order toradol 10mg without prescription
cyproheptadine 4 mg brand – tizanidine price brand zanaflex
buy trihexyphenidyl online cheap – trihexyphenidyl online order voltaren gel online cheap
cefdinir 300mg brand – buy cefdinir pills where to buy clindamycin without a prescription
accutane pill – buy deltasone 40mg deltasone 5mg ca
buy deltasone 10mg pill – buy omnacortil 20mg generic buy cheap elimite
acticin generic – permethrin for sale online order retin cream generic
purchase betnovate online cheap – order betamethasone 20gm cream monobenzone canada
metronidazole price – buy metronidazole tablets cenforce 50mg uk
augmentin tablet – order augmentin online cheap buy levothroid
cheap cleocin 150mg – how to buy clindamycin indocin 75mg drug
losartan online – buy cephalexin 250mg keflex 250mg over the counter
crotamiton brand – bactroban ointment generic order aczone without prescription
purchase modafinil – provigil 100mg generic meloset 3mg pill
zyban 150 mg ca – xenical brand shuddha guggulu pills
buy xeloda 500 mg for sale – buy capecitabine pills danazol 100mg pills
progesterone 200mg for sale – buy progesterone paypal buy fertomid generic
buy generic alendronate for sale – purchase fosamax generic order provera 5mg generic
norethindrone for sale – yasmin cheap buy yasmin online
dostinex 0.25mg without prescription – premarin 600 mg ca cheap alesse for sale
order estradiol 2mg pill – femara 2.5 mg pill anastrozole for sale
バイアグラ еЂ‹дєєијёе…Ґ гЃЉгЃ™гЃ™г‚Ѓ – г‚·г‚ўгѓЄг‚№ гЃ®иіје…Ґ г‚·г‚ўгѓЄг‚№гЃЇи–¬е±ЂгЃ§иІ·гЃ€г‚‹пјџ
гѓ—гѓ¬гѓ‰гѓ‹гѓі жµ·е¤–йЂљиІ© – г‚ёг‚№гѓгѓћгѓѓг‚Ї йЈІгЃїж–№ г‚ўг‚ёг‚№гѓгѓћг‚¤г‚·гѓі гЃ®иіје…Ґ
гѓ—гѓ¬гѓ‰гѓ‹гѓі жµ·е¤–йЂљиІ© – гѓ‰г‚シサイクリン гЃЇйЂљиІ©гЃ§гЃ®иіј г‚ўг‚ュテイン гЃ©гЃ“гЃ§иІ·гЃ€г‚‹
eriacta cheerful – eriacta job forzest throw
… [Trackback]
[…] Read More Info here on that Topic: doinikdak.com/news/56268 […]
indinavir medication – voltaren gel where to order voltaren gel purchase online
valif pills witch – secnidazole cost order sinemet without prescription
valif pills knight – order sustiva 20mg online sinemet over the counter