ঢাকা, রবিবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ অপরাহ্ন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুতে সাত চ্যালেঞ্জ
দৈনিক ডাক অনলাইন ডেস্ক

প্রায় দেড় বছর বন্ধের পর ১২ সেপ্টেম্বর খুলছে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা। যদিও শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে ‘রিওপেনিং’ (পুনরায় ক্লাস চালু করা) পরিকল্পনা তৈরি করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এছাড়া করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিও এ নিয়ে বেশকিছু সুপারিশ দিয়েছে। কিন্তু এরপরও শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর ক্ষেত্রে সরকারকে অন্তত ৭টি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে আছে-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে ও বাইরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নিশ্চিত করা; প্রতিদিনই শিক্ষক, শিক্ষার্থী, স্টাফসহ সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা; খোলার আগে সবাইকে টিকার (এক ডোজ) আওতায় আনা; বন্যাদুর্গত এলাকা; উচ্চ সংক্রমিত জেলা; শিখন ঘাটতি দূর করা; ঝরে পড়া, স্থানান্তরিত ও স্কুলবিহীন শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেড় বছর বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে। আসবাবপত্রে জমেছে ধুলোর পাহাড়। বাথরুমসহ ওয়াশ ব্লক নষ্ট হওয়ার পথে। তাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে স্কুল-কলেজ ব্যবহার উপযোগী করা। খোলার পর ধারাবাহিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণও কঠিন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি কমবেশি ১০ শতাংশ। ১০-১৫ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারী এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সি বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এখনো টিকা পায়নি। এদিকে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৩ জেলায় চলছে বন্যা। বেশকিছু জেলায় সংক্রমণের হার অনেক বেশি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে জ্ঞানগত ঘাটতি। অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। তাদের মধ্যে কারও বিয়ে হয়ে গেছে, আবার কেউ অর্থ উপার্জনে কাজে জড়িয়ে গেছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা খুবই কঠিন। তবুও কাজটি করতে হবে এর সঙ্গে জড়িতদের।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার চালুর ক্ষেত্রে নানান চ্যালেঞ্জ আছে। সেগুলো যথাযথভাবে সামাল দেওয়া না গেলে অভিভাবকের আস্থা অর্জন কঠিন হবে। আর এমন অবস্থায় স্কুল খুলেও লাভ নেই। বরং উদ্যোগ বুমেরাং হবে। কেননা তখন অনেকে সন্তানকে স্কুলে পাঠাবেন না। অন্যদিকে খোলার পরে যদি স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত না করেই স্কুল চালিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তাই এসব দিক নিশ্চিতে স্থানীয় পর্যায়ে তদারকি কমিটি থাকতে হবে। ওই কমিটির প্রতিবেদন কেন্দ্র দেখতে পারে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে তদারকি করে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আজকের (রোববার) বৈঠকেই যেন করোনা সংক্রমণের দিক থেকে ‘লাল’, ‘হলুদ’ ও ‘সবুজ’ চিহ্নিত এলাকাগুলো আলাদা করা হয়। পাশাপাশি এসব এলাকার জন্য আলাদা নীতি গ্রহণ করা হয়। প্রয়োজনে উচ্চঝুঁকির জেলাগুলোতে পরে শ্রেণির কাজ শুরু করা যেতে পারে। আবার প্রয়োজনে পাঠদান বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তুতিও রাখতে হবে। নইলে জাতীয়ভাবে বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়তে হবে।

জানা গেছে, আজ বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে বসছে ওই আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা। এতে শিক্ষা, কৃষি, তথ্য ও সম্প্রচার, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ক্রীড়া, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রীর অংশ নেওয়ার কথা আছে। এছাড়া ৬ জন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এতে যোগ দেবেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন শিক্ষা কার্যক্রম চালুর ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে করোনা সংক্রমণের নিুগতি ধরে রাখা। শ্রেণিকক্ষে একজনও যদি আক্রান্ত অবস্থায় বসে, তাহলে বাকি সবারই সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কা থাকে। তাই স্কুলের গেটেই দৈনিক প্রত্যেকের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য ‘নন-কনট্যাক্ট’ থার্মোমিটার থাকতে হবে। এছাড়া যাদের মাস্ক পরানোর নিয়ম করা হবে তাদের সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আগের মতো স্কুল চালানো যাবে না। একটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একদিন স্কুলে আনা ও তাদের তিন ভাগে বসানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। কেবল পরীক্ষার্থীরা দৈনিক স্কুলে এলেও তাদের বসার ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। বাথরুমসহ গোটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কারের পর প্রস্তুত করা আরেকটি চ্যালেঞ্জ। এটা নিশ্চিতে মাঠ প্রশাসনকে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের তদারকির দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।

এছাড়া আছে জেলাভিত্তিক অতি-সংক্রমণপ্রবণ এবং বন্যাকবলিত ১৩ জেলা। সংক্রমণপ্রবণ এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বন্যাকবলিত জেলাগুলোর পরিকল্পনাও নিতে হবে। ক্লাসের পাঠদান বন্ধ থাকায় দেড় বছরে শিক্ষকদের আচরণগত পরিবর্তন এসেছে। বিপরীত দিকে শিক্ষার্থীদের অভ্যাসের পরিবর্তন হয়েছে। এ দুটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনার ক্ষেত্রে প্রশাসন, অভিভাবক ও শিক্ষকের ভূমিকা প্রয়োজন। বিশেষ করে আগের ক্লাসে ঠিকমতো লেখাপড়া না করায় শিক্ষার্থীর যে শিখন-ঘাটতি তৈরি হয়েছে তা পূরণের মূল কাজ শিক্ষকের। আচরণগত পরিবর্তন পুনঃস্থাপনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীকে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে শিক্ষককে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত করা জরুরি। শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর পর যারা স্কুলে আসবে না, তাদের খোঁজ নিতে বাড়ি বাড়ি যেতে হবে শিক্ষকদের। এছাড়া উপার্জন বন্ধ হওয়ায় শহরের অনেক শিশু গ্রামে চলে গেছে। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এই দুই ধরনের শিক্ষার্থীর নতুন স্কুলের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে স্কুল পরিচালনা কমিটির ভূমিকা থাকা প্রয়োজন।

সারা দেশে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে নেমেছে। শনিবার দেশে সংক্রমণের হার ছিল ৯.৮২ শতাংশ। তবে কয়েকটি জেলায় এখনো শনাক্তের হার ঊর্ধ্বমুখী। রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলোতেই সংক্রমণের হার বেশি। সবশেষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ফরিদপুরে শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। মুন্সীগঞ্জে এ হার ২৫ শতাংশ, গাজীপুর ১৭ দশমিক ৯৯, মাদারীপুরে ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। লক্ষ্মীপুর ১৯ দশমিক ৬৯, ফেনীতে এ হার ১৬ দশমিক শূন্য চার, কুষ্টিয়ায় ১৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক কেএম এনামুল হক যুগান্তরকে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে কোনো এলাকায় সংক্রমণ ৫ শতাংশের বেশি থাকলেই সেটি উচ্চঝুঁকিভুক্ত। জাতীয়ভাবে আমরা এখনো ৯ শতাংশের ওপরে আছি। তাই চ্যালেঞ্জ বিবেচনা করা জরুরি। তবে এটা ঠিক যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হবে। খোলার পরে কীভাবে চালাতে হবে সে বিষয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও বিশ্বব্যাংকের তৈরি গাইডলাইনের আলোকে আমাদের একটি জাতীয় গাইডলাইন আছে। সেটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। বন্যা ও সংক্রমণ ইত্যাদি বিবেচনায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে প্রয়োজনে ‘এডুকেশন ইন ইমার্জেন্সি’র নীতি অনসুরণ করা যেতে পারে।

এসব বিষয়ে কথা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া স্থগিত রাখার কৌশল থেকে বিশ্বের প্রায় সব দেশই সরে এসেছে। এই অবস্থার মধ্যে বৃহস্পতিবার ফ্রান্স শিশুদের জন্য স্কুল খুলে দিয়েছে। তাই আমাদেরও আর বসে থাকার সুযোগ নেই। সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চিন্তা করছে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এরপরও কী চ্যালেঞ্জ আছে বা স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে আর কী করণীয়-তা নির্ধারণেই আজ (রোববার) বৈঠক আছে। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

36 responses to “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুতে সাত চ্যালেঞ্জ”

  1. Koepeb says:

    purchase lasuna generic – purchase himcolin online cheap buy himcolin sale

  2. Wyckdt says:

    purchase besivance online – besivance price sildamax cheap

  3. Qruhna says:

    gabapentin 100mg cheap – neurontin 800mg ca order generic azulfidine 500 mg

  4. Nxbunn says:

    probalan price – order etodolac for sale carbamazepine 200mg canada

  5. Kmchep says:

    buy celebrex 200mg generic – cost urispas indomethacin 50mg pills

  6. Mosbzy says:

    buy generic mebeverine – order cilostazol 100 mg without prescription pletal 100 mg cost

  7. Qlmgye says:

    buy voltaren for sale – voltaren 50mg brand purchase aspirin online cheap

  8. Ounshq says:

    buy rumalaya sale – purchase rumalaya order amitriptyline 10mg generic

  9. Khxurg says:

    buy generic pyridostigmine for sale – order generic sumatriptan how to get imuran without a prescription

  10. Htijkz says:

    buy voveran pills for sale – nimodipine brand cheap nimodipine pill

  11. Ecnwzh says:

    baclofen 25mg cheap – piroxicam 20 mg brand feldene usa

  12. Syldcl says:

    buy generic periactin for sale – cyproheptadine 4mg ca buy tizanidine cheap

  13. Evneal says:

    artane order – emulgel purchase online order voltaren gel online cheap

  14. Penzew says:

    buy cefdinir tablets – buy cheap clindamycin cleocin gel

  15. Egvusv says:

    accutane tablet – order dapsone 100mg deltasone 20mg brand

  16. Mdjedd says:

    deltasone 10mg us – omnacortil 40mg sale brand zovirax

  17. Kpmmuj says:

    buy cheap permethrin – brand permethrin tretinoin gel oral

  18. Wvsiif says:

    betamethasone uk – generic betnovate 20 gm buy benoquin for sale

  19. Mfygcb says:

    metronidazole 200mg usa – order metronidazole 200mg cenforce 100mg cheap

  20. Mitfuk says:

    buy clavulanate medication – order augmentin 1000mg without prescription cheap synthroid for sale

  21. Squmsp says:

    buy clindamycin no prescription – buy cheap generic indomethacin indocin cost

  22. Coxezf says:

    buy hyzaar paypal – order cozaar 25mg keflex 250mg without prescription

  23. Gpwseg says:

    order crotamiton cream – buy bactroban ointment online order aczone online cheap

  24. Jxixvf says:

    buy modafinil 200mg without prescription – order meloset 3 mg online melatonin 3 mg over the counter

  25. Cretcv says:

    buy generic bupropion over the counter – order orlistat without prescription cheap generic shuddha guggulu

  26. Zlklgu says:

    xeloda uk – order danocrine order danazol 100mg for sale

  27. Rcgnkg says:

    buy progesterone 200mg – clomiphene where to buy buy generic clomiphene online

  28. Mqgoos says:

    cost alendronate 35mg – order tamoxifen 20mg pills buy medroxyprogesterone 10mg for sale

  29. Ovnnsq says:

    order norethindrone 5mg online – buy careprost tablets purchase yasmin pills

  30. Fypyna says:

    buy dostinex cheap – purchase cabergoline order alesse without prescription

  31. Pvklap says:

    buy estradiol 2mg for sale – arimidex tablet anastrozole canada

  32. Vuvssa says:

    バイアグラ通販 安全 – г‚їгѓЂгѓ©гѓ•г‚Јгѓ« гЃЇйЂљиІ©гЃ§гЃ®иіј г‚їгѓЂгѓ©гѓ•г‚Јгѓ« и–¬е±ЂгЃ§иІ·гЃ€г‚‹

  33. Awafhl says:

    гѓ—гѓ¬гѓ‰гѓ‹гѓі жµ·е¤–йЂљиІ© – г‚ёг‚№гѓ­гѓћгѓѓг‚ЇгЃ®йЈІгЃїж–№гЃЁеЉ№жћњ アジスロマイシン е‰ЇдЅњз”Ё

  34. Mkdwkv says:

    гѓ—гѓ¬гѓ‰гѓ‹гѓігЃЇи–¬е±ЂгЃ§иІ·гЃ€г‚‹пјџ – 正規品プレドニン錠の正しい処方 アキュテイン гЃ®иіје…Ґ

  35. Qkbpwt says:

    eriacta edge – forzest troll forzest tug

  36. Dfnkmq says:

    valif pills call – secnidazole pills cheap sinemet 10mg

Leave a Reply

Your email address will not be published.