ঢাকা, রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৪ পূর্বাহ্ন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনিযুক্ত উপাচার্যের যোগদান
ভাস্কর সরকার (রাবি):
পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার রবিবার বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ তাঁকে চার বছর মেয়াদে এ পদে নিয়োগ দেন। যোগদানকালে সেখানে উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়া, উপ-উপাচার্য প্রফেসর মো. সুলতান-উল-ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ, রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. আবদুস সালামসহ অনুষদ অধিকর্তা, হল প্রাধ্যক্ষ, বিভাগীয় সভাপতি ও অফিস প্রধান, বিশিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
দায়িত্বভার গ্রহণের পর তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও এক মিনিট নীরবতা পালনসহ মোনাজাত করেন। তিনি ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ড. শামসুজ্জোহার মাজার, শহীদ মিনার, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকেও পুষ্পস্তবক অর্পণসহ মোনাজাত করেন। পরে তিনি শহীদ জাতীয় চার নেতার এ এইচ এম কামারুজ্জামানের কবরেও পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাত করেন।
দায়িত্বে যোগদানের পর উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম নিরবিচ্ছিন্ন রাখাসহ সার্বিক প্রশাসন পরিচালনায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সচেতন সমাজের সহযোগিতা কামনা করেন। এসময় অন্যদের মধ্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়া, উপ-উপাচার্য প্রফেসর মো. সুলতান-উল-ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
বিশিষ্ট ভূতত্ববিদ প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার ১৯৬২ সালে রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগ থেকে ১৯৮৪ সালে বিএসসি ও ১৯৮৫ সালে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণি লাভ করেন। ১৯৯৬ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসল আপন-টাইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি বিজ্ঞানে এমফিল ডিগ্রি ও ২০০১ সালে জার্মানির ড্রেসড্রেনের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে পরিবেশ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে ডিপ্লোমা অর্জন করেন। ২০০৫ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাইড্রোজিওলজিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৯০ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন ও ২০০৬ সালে প্রফেসর পদে উন্নীত হন। ২০১৯ সালে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ও পরিচালক পদে যোগ দেন। দীর্ঘ অধ্যাপনা জীবনে তিনি ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা, আবাসিক শিক্ষক, সহকারী প্রক্টর, নির্বাচিত সিনেট সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাথলেটিক্স ও এ্যাকুয়াটিক্স কমিটির সদস্যসহ অন্যান্য কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি জার্মানির ড্রেসড্রেন টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ জিওলজিক্যাল সোসাইটি, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর এডভান্সমেন্ট অব সায়েন্স, বাংলাদেশ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক্যাল এসোসিয়েশন, জার্মান ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ, হিমালয়ান ইউনিভার্সিটি কনসোর্টিয়ামসহ বেশ কয়েকটি পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানের সদস্য।
প্রফেসর সাত্তারের গবেষণার বিষয়ের মধ্যে আছে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবস্থাপনা, পানি ও মাটির মিথস্ক্রিয়া, মৃত্তিকা পদার্থ বিজ্ঞান, ভূগর্ভস্থ পানির মান পর্যবেক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে ভূপৃষ্ঠের পানির সম্পর্ক ইত্যাদি। এযাবত তাঁর প্রায় ৩০টি গবেষণা প্রবন্ধ দেশ-বিদেশে প্রকাশিত হয়েছে। গত ১০ বছরে তিনি প্রায় ১৫টি আন্তর্জাতিক সেমিনার ও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
প্রফেসর সাত্তার দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন। তিনি বাংলাদেশ হার্ট ফাউন্ডেশন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, রাজশাহী শ্যুটিং ক্লাব ও এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম টেনিস কমপ্লেক্সের আজীবন সদস্য। এছাড়া তিনি কাজীহাটা স্পোর্টিং ক্লাবের সহ-সভাপতি এবং এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম টেনিস কমপ্লেক্সের সভাপতি ছিলেন।
তিনি বিবাহিত ও এক পুত্রের জনক। তাঁর স্ত্রী ড. তানজিমা ইয়াসমিন প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ও বিভাগীয় সভাপতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x