ঢাকা, শুক্রবার ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন
নবীগঞ্জে নারীকে একাধিক বার ধর্ষণ: আড়াই মাসেও দেয়া হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের দিনমুজুরের মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আড়াই মাস অতিবাহিত হলেও এখনো আদালতে দাখিল করা হয়নি। মেডিকেল রিপোর্টসহ নানা জটিলতার কারণে আটকে আছে তদন্ত প্রতিবেদন। এরফলে বিচার নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন ধর্ষণের শিকার নারী ও তার পরিবার।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের দিনমজুর রহমত মিয়ার কন্যার সাথে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল কাজীরবাজার বেকামোড়া গ্রামের সুজন মিয়া (২৮)। চলতি বছরের গত ২৭ ফেব্রুয়ারী রাতে রহমত মিয়ার কন্যাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সন্ধ্যায় সিএনজিতে করে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায় সুজন মিয়া। পরে সুজনের পাশ্ববতী রেখা বেগমের বাড়িতে নিয়ে তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন করে । পরে সুজনের বাড়িতে নিয়েও যুবতীকে (৫ মার্চ) পর্যন্ত আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে তার উপর চলে পাশবিক শারীরিক নির্যাতন। পরে সে চিৎকার চেচামেচি করলে স্থানীয় লোকজনের সহায়তা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ২৩ মার্চ ধর্ষণের শিকার নারী বাদী হয়ে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ মৌলভীবাজারের বেকামোড়া গ্রামের প্রেমিক সুজন মিয়া (২৮), সুহিন মিয়া (২৭), রেখা বেগম (৩৮), লুবন মিয়া (২৫), জসিম মিয়া (৩৮), আলী হুসেন (৩৫) কে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরর পর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী হবিগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকের ৭ কার্য দিবসের মধ্যে স্বাক্ষীদের জবানবন্দিসহ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।
এরপর হবিগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) উপ পুলিশ পরিদর্শক আবুল কাশেমকে মামলার তদন্তের দায়িত্বভার দেয়া হয়। সরেজমিনে এসে মামলার তদন্ত করেন উপ পুলিশ পরিদর্শক আবুল কাশেম। কিন্তু আড়াইমাস অতিবাহিত হলেও এখনো আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি।

এদিকে বিচার নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে বাদীর পরিবার। প্রতিনিয়ত বাদী ও বাদীর পরিবারকে নানা ধরণের হুমকি দিয়ে আসছে আসামীরা।

ধর্ষণের শিকার নারীর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মামলার তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া হচ্ছেনা, এরফলে বিচার নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছি। এরা অধিকাংশ মৌলভীবাজারের আখাইলকুড়া ইউপির বেকামুড়া উত্তর এলাকার আলোচিত জগলুল হক মতিন হত্যা মামলার আসামি। জামিনে রয়েছে। তারা মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছে বাদীনিকে।

হবিগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) উপ পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবুল কাশেম বলেন, মামলার বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করেছি, বার বার আমাদের পক্ষ থেকে মেডিকেল রিপোর্ট পাঠানোর জন্য তাগিদ দেয়া হচ্ছে কিন্তু মেডিকেল রিপোর্ট না আসায় রিপোর্ট দিতে বিলম্ব হচ্ছে। আশা করছি খুব দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে পারবো।

x