ঢাকা, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৩ অপরাহ্ন
দৃষ্টিনন্দন কৃষ্ণচূড়া ফুলের মায়ায় জড়িয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
Reporter Name

ভাস্কর সরকার, রাবি প্রতিনিধিঃ

কৃষ্ণচূড়া, লালে রাঙা আগুন ঝরা

প্রিয়ার খোপার ফুল।

কৃষ্ণচূড়া, হাওয়ায় খেলা পাপড়ি দোলা

বঁধুর কানের দুল।

কবিচিত্তে এমনই ভাবের উদয় হয় প্রস্ফুটিত কৃষ্ণচূড়ার অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করে ৷

গ্রীষ্মের তাপদাহে চারদিকে কাঠফাটা রোদ্দুর, মাঝে মধ্যে দমকা হাওয়া সহো হঠাৎ বৃষ্টি । প্রকৃতি তার রুক্ষতা ছাপিয়ে নিয়মমতো আপন মহিমায় নিজেকে মেলে ধরেছে। পসরা সাজিয়েছে বিভিন্ন রঙয়ের হাজারও ফুলে ফুলে। সবুজ কচি পাতার ফাঁকে আগুন রূপের মোহময়তা নিয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল। চলতি পথে হঠাৎ করে পথিকের চোখে এনে দিচ্ছে শিল্পের দ্যোতনা। মন ছুঁয়ে রঙিন দৃষ্টিতে অবাক হয়ে সে সৌন্দর্য উপভোগ করছে সবাই।

এমনই নয়নাভিরাম কৃষ্ণচূড়া ফুলের মায়ায় জড়িয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এ যেন এক কৃষ্ণচূড়ার ক্যাম্পাস। গ্রীষ্মের শুরুতেই ক্যাম্পাস যেন লাল রঙে ছেয়ে গেছে। সূর্যের সবটুকু উত্তাপ কেড়ে নিয়েছে টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া। প্রখর রোদে পুড়ে জানান দিচ্ছে তার সৌন্দর্যের বার্তা। প্রকৃতিতে নীল আকাশের ক্যানভাসে জ্বলছে গাঢ় রক্তিম রঙ, এ যেন লাল রঙের এক মায়াবী ক্যানভাস।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছোট বড় কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো আলোক ছটায় তার দ্যূতি বিলিয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের সামনে, পশ্চিমপাড়া, পরিবহন মাকের্টসহ রাস্তার পাশের গাছগুলোর নজর কাড়ছে সে দৃশ্যে। সবুজ সবুজ চিকন পাতা। ফাঁকে ফাঁকে লাল লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল। তার ফাঁকে ডালে ডালে পাখিদের কলকাকলী উড়াউড়ি। হালকা বাতাসে যখন ডালগুলো দোল খায় মনে দোলা দিয়ে যায়। লাল, কমলা, হলুদ ফুল এবং উজ্জ্বল সবুজ পাতা আকর্ষণ করে। কৃষ্ণচূড়ার ঝরে পড়া পাপড়িতে সবুজ ঘাসের উপর সৃষ্টি করেছে যেন রক্তলাল পুষ্পশয্যার। দেখলেই যেন চোখ জুড়িয়ে যায়।

‘কৃষ্ণচূড়ার আগুন রঙে পুড়ছে প্রেমিক মন, পুড়বে জেনেই অনল পানে পতঙ্গের আস্ফালন।’ কৃষ্ণচূড়ার রূপের আগুনে প্রকৃতি প্রেমিকদের হৃদয় ঠিকই পুড়ছে। এমন রূপের আগুনে আরও বেশি পুড়ে যেতে চায় ওই পোড়া হৃদয়গুলো। ‘কৃষ্ণচূড়া ঝরা পথে হাঁটবো দুজন একসাথে, হাতে রেখে হাত মনের সুখে।’ প্রেমিক হৃদয়ের সে ইচ্ছে এবার পূরণ হচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায়। গাছগুলো ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে ঠিকই। কিন্তু প্রেমিক হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ।

কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জরি কর্নে-আমি ভূবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্নে’- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার এমন পঙতি দিয়ে বোঝা যায় কতটা সৌন্দর্য কৃষ্ণচূড়া প্রকৃতিকে দান করেছে।?

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘গন্ধে উদাস হওয়ার মতো উড়ে/তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জুরী’।

খরতাপ রৌদ্দুরে কৃষ্ণচূড়ার অপরূপ সৌন্দর্য প্রকৃতির সাজ সাজ রব আমাদের এক অপার প্রাপ্তির কথা বলে। মনে এক অনাবিল সুখ এনে দেয়। শহুরে জীবনের রুক্ষতা, যানজট, ভ্যাপসা গরম আর ধুলোবালির বাইরে ক্যাম্পাসের এ কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে বসে এক প্রশান্তির নিশ্বাস নেয়া যায়, কিছুক্ষণের জন্য হলেও মন হারিয়ে যায় প্রকৃতির মাঝে।

2 responses to “দৃষ্টিনন্দন কৃষ্ণচূড়া ফুলের মায়ায় জড়িয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়”

  1. … [Trackback]

    […] Read More to that Topic: doinikdak.com/news/18077 […]

  2. … [Trackback]

    […] Read More on to that Topic: doinikdak.com/news/18077 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x