ঢাকা, রবিবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৯ অপরাহ্ন
রাবিতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ‘ইচ্ছে’ স্কুল
Reporter Name

– ভাস্কর সরকার (রাবি প্রতিনিধি)ঃ যা পেতে ইচ্ছে করে, আমি তাকেই বলি সুন্দর । প্রত্যেকটি প্রাণেরই এক-একটা স্বতন্ত্র চেহারা থাকে । সুন্দরের কোনো নির্দিষ্ট চেহারা নেই, সে আপেক্ষিক ! ঠিক তেমনি এক সুন্দরের প্রত্যাশায়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মন্দিরের পাশে খামার বাড়িতে গড়ে উঠেছে ‘ইচ্ছে স্কুল’ ৷

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরেই বিভিন্ন কাজে সরব থাকেন তারা। সবাই শিক্ষার্থী, এরই পাশাপাশি ‘ইচ্ছে’র স্বেচ্ছাসেবক। কেউ হলে হলে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, কারেন্ট নিউজ ও বিভিন্ন সাময়িকী বিক্রি করেন। কেউ আবার ফুল, পিঠা উৎসবে পিঠা বিক্রি করেন। কেউ আল্পনা এঁকে অর্থ উপার্জন করেন।

এসব উপার্জনের টাকা বিভিন্ন কার্যক্রমে ব্যয় করা হয়। যেমন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষাদান, ঈদসামগ্রী বিতরণ। আরো আছে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, বয়স্ক শিক্ষা, শীতবস্ত্র বিতরণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিসহ বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম।

বলছিলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন সেবামূলক সংগঠন ‘ইচ্ছে’র কথা। ‘মেধা দেই শ্রম দেই, আর্তমানবতার সেবা করি, পৃথিবীকে বদলে দেই’ স্লোগানকে সামনে রেখে ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি।

প্রতিদিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা প্রদান করে থাকেন সংগঠনের কর্মীরা। যেসব শিশুরা এক সময় ক্যাম্পাসে ভিক্ষাবৃত্তি ও চুরিতে লিপ্ত ছিল, ‘ইচ্ছে’র কর্মীরা তাদের পরিবারকে বুঝিয়ে শিক্ষার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে।

এসব শিশুদের আনুষাঙ্গিক প্রায় সব চাহিদা সংগঠনটি পূরণ করে আসছে। তাদের চিত্তবিনোদনের জন্য নানা সময়ে দেখানো হয় শিক্ষামূলক মুভি ও কার্টুন। জাতীয় দিবসগুলোতে সেসব শিশুদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ, বিশেষ দিনে তাদের ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হয় ‘ইচ্ছে’র পক্ষ থেকে।

সংগঠনের নিবেদিত প্রাণ কর্মীদের মেধা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে সেই অর্থ আসে। তারা বিশ্বাস করেন, সংগঠনের প্রত্যেক কর্মীর ইচ্ছেগুলো এক একটি ডানার মতো। যে ডানায় ভর দিয়ে সব বাঁধন ছিন্ন করে আপন শক্তিতে এগিয়ে যাওয়া যায়। তাই সংগঠনটির কর্মীদের বলা হয় ‘ইচ্ছে ডানা’।

ইচ্ছে’র উপদেষ্টা মোশারফ হোসেন নাগরিক সংবাদকে বলেন, প্রতিটি শিশু হলো ফুলের মতো পবিত্র। সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার অধিকার নিয়ে পৃথিবীতে আসে। সামাজিক বিভিন্ন অসঙ্গতির কারণে তাদের জীবন বিকাশে বাধাগ্রস্ত হয়। আমরা দেখেছি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিশু বাদাম বিক্রি করে, ভিক্ষাবৃত্তিসহ নানা পেশায় জড়িত। তাদেরকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান ও তাদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য একদল শিক্ষার্থী তাদের দায়িত্ব নিয়েছি। দায়িত্ববোধ থেকেই তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। শুধু শিক্ষাই নয় আমরা চেষ্টা করি তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করার। করোনা মহামারির মধ্যে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় ওরা কি খাবে কার আশ্রয়ে দাঁড়াবে ? তাই সামাজিক দুরত্ব মেনে সীমিত পরিসরে হলেও আমরা আমাদের কার্যক্রম সচল রেখেছি। কেননা এসব ভাসমান শিশুদের দুঃখ-কষ্টের কথা শোনার কেউ নেই, দেখারও কেউ নেই ৷

x