আর জে শান্ত, ভোলা: ভোলা জেলা জুড়ে প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। গরম বাতাস শরীরে লাগছে আগুনের ফুলকীর মত। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নাই একটুখানীও। শিশু- নারী ও মধ্যবয়সী-বৃদ্ধরা গরমে কাবু হয়ে পড়ছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে রোজাদারদের
কর্মজীবী মানুষ বাইরে বের হয়ে সামান্য কাজ করতে না করতেই অতিরিক্ত গরমে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন।
জেলার বিভিন্ন স্থানে সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, গরম আবহাওয়ায় গাছের পাতাও যেন নড়ছে না। ফলে বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে এ জনপদের মানুষসহ জীব বৈচিত্রের।
কয়েক দিনের টানা তাপদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এদিকে প্রকৃতিও যেন নিরব হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন যাবত বৃষ্টি না হওয়ায় কোথাও কোথাও নলকূপের পানিতেও দেখা দিয়েছে সঙ্কট। নদী ও খালের পানিতে দেখা দিয়েছে লবণাক্ততা। ডায়রিয়ার জীবানুও ছড়িয়ে পরেছে পানিতে। গরমে শরীরের পানি শুন্যতায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েই চলছে জেলায়। যার ফলশ্রুতিতে গভীর নলকূপগুলোতে ব্যবহারে চাপ বেড়েছে।
শিবপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের আবু মিয়ার বাড়ির দরজার পুকুরে দেখা গেছে, এক কিশোর তাপদাহ থেকে একটু স্বস্তি পেতে পানির মধ্যে অনেক সময় দড়ে দাড়িয়ে আছে।
ধনিয়ার দড়িরাম শংকর গ্রামের আবুল কাসেম নামের এক কৃষক গরমে শরীর জ্বলে যাওয়ায়, টিউব ওয়েল থেকে অঝোরে মাথায় পানি ঢালছেন।
তীব্র খরতাপ ও ভ্যাপসা গরমে শরীর থেকে শুধু ঘাম ঝড়ছে। বাহিরে প্রচন্ড খরতাপে শরীর জ্বলে যাচ্ছে। ঘরে ফ্যানের বাতাসেও যেনো আগুনের ফুলকি ছড়াচ্ছে। কোথাও একটু শান্তির ছায়া নেই। বৈশাখের এই কাক ফাটা রৌদে ও গরমে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ ও রোজাদারেরা।
গরমে রাস্তা-ঘাটে মানুষের চলাচল কমে গেছে। মার্কেট, শপিংমলে ক্রেতাদের উপস্থিতি কমে গেছে, হতাশায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা, মানুষ এখন বাসা-বাড়িতে থাকা দায় হয়ে পরেছে। শিশু-কিশোর, নারী পুরুষ সহ সব মানুষেরা অনেকবার গোসল করে তাপদাহ থেকে স্বস্তির চেষ্টা করছে। দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের এলাকা হিসেবে পরিচিত উপকূলীয় জনপদ দ্বীপ জেলা ভোলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে এখন তীব্র তাপদাহ। প্রতিদিন বাড়ছে এ জেলার তাপমাত্রা।
গত শুক্রবার দুপুর ১টা ১৫ মিঃ য়ে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। প্রকৃতি যেন ছাড়ছে তৃপ্ত নিঃশ্বাস। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তির নিঃশ্বাস নাই। সূর্যের তীব্র তাপদাহে পুড়ছে-মানুষ, গবাদি পশু, সবুজ প্রকৃতি ও ফসলের ক্ষেতসহ পরিবেশের জীব বৈচিত্র।
জেলার আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ অঞ্চলরের উপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। এই দাবদাহ অব্যাহত আরো কয়েকদিন থাকবে। তবে বাতাসের আদ্রতায় জলীয় বাস্পের পরিমাণ বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে,
বাতাসে আগুনের মত ফুলকি ছড়াচেছ, পাশাপাশি বেড়েছে সূর্যের তাপ। এছাড়া আকাশে নেই কোনো মেঘের বলয়। এ গরম আরো কয়েকদিন থাকবে, বৃস্টি না হতে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা অনেক কম, কয়েক দিনের মধ্যে ঝড়-বৃষ্টির আভাসও দিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।