গত ১০ মাসেও নিয়োগ হয়নি সরকারি কর্ম কমিশন থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত ২ হাজার ১২১ জন সহকারী শিক্ষকের। সরকারি চাকরি হওয়ার পর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছেড়ে দিয়ে তারা এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দ্রুত তাদের নিয়োগদানের জন্য অনুরোধ করছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান আছে। বর্তমানে সংশ্লিষ্টদের পুলিশ ভেরিফিকেশন চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের নিয়োগ সম্পন্ন করতে পারব।
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকসংকট নিরসনে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন ১২টি বিষয়ের ১ হাজার ৩৭৮টি সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকা পদে নিয়োগ দিতে ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষার (এমসিকিউ টাইপের) আয়োজন করে। ঐ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর। তাতে ১২টি বিষয়ে সম্মিলিতভাবে ৭ হাজার ১৬১ জন মৌখিক পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ হন। পরীক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ছিল ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা শুরু হবে। কিন্তু করোনা মহামারির প্রকোপ শুরু হলে পিএসসি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর মৌখিক পরীক্ষা শুরু করে। যা শেষ হয় গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর। মৌখিক পরীক্ষা শেষ হওয়া মাত্র পিএসসি ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকা পদে নিয়োগের জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে ২ হাজার ১৫৫ জনকে সুপারিশ করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে।
সুপারিশপ্রাপ্ত ২ হাজার ১৫৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ১২১ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা গত জুলাই মাসে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দেশব্যাপী কঠোর লকডাউনের কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। পরবর্তী সময় গত ১ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর শেষ হয়েছে। অন্যদিকে পিএসসির সুপারিশপ্রাপ্ত ২ হাজার ১২১ জন পরীক্ষার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশন গত জুলাই মাসের ১০ তারিখ শুরু হলেও তা এখনো চলমান আছে। তাছাড়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে পরীক্ষার্থীরা নানামুখী হয়রানির শিকার হন। ক্ষেত্রবিশেষে ভেরিফিকেশনের নামে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন ইত্তেফাককে বলেন, পিএসসির দায়িত্ব যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা। নিয়োগ দেওয়ার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ প্রতিষ্ঠানের। নিয়োগের বিষয়ে পিএসসির কোনো হাত নেই।