ঢাকা, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৩ অপরাহ্ন
চাকরির আবেদনে থাকবে না সত্যায়ন প্রক্রিয়া
অনলাইন ডেস্ক

অধিকাংশ সরকারি চাকরিতে আবেদনের ক্ষেত্রে ছবি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্র প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মাধ্যমে সত্যায়ন করতে হয়। তবে ব্যক্তিগতভাবে পরিচয় না জানায় অনেক কর্মকর্তা সত্যায়িত করতে চান না। এতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় চাকরিপ্রার্থীদের।

বর্তমানে অনেক সহজেই যে কারো তথ্য যাচাই-বাছাই করা যায়। তাই সত্যায়ন প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। সেজন্য এই প্রক্রিয়া বাদ দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকারও।

চাকরির আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া কাগজপত্র আসল কি না অথবা আসল ডকুমেন্টের অনুলিপি কি না, তা নিশ্চিত করার জন্যই মূলত সত্যায়িত করতে বলা হয়। নিয়ম অনুযায়ী কাগজপত্রে একজন সই করে সাক্ষ্য দেবেন। সাক্ষী এমন ব্যক্তি হবেন, যার সাক্ষ্য বিশ্বাস করার যুক্তিযুক্ত কারণ আছে।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা, অষ্টম গ্রেড থেকে তদূর্ধ্ব, বিশেষ ক্ষেত্রে সংসদ সদস্য, মেয়র বা স্থানীয় সরকারের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান, সরকারি অধ্যক্ষ, গণমাধ্যমের সম্পাদকসহ কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিকে সত্যায়নের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে।

তবে বর্তমানে এ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকসহ প্রায় সব বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়েরই নিজস্ব ওয়েবসাইটে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর নম্বরপত্রসহ হালনাগাদ তথ্য দেওয়া থাকে। নির্দিষ্ট ব্যক্তির রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও পাসের সাল দিয়ে যে কেউ যে কারো শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করতে পারে।

এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা আইডি নম্বর দিয়েও সহজেই যেকোনো ব্যক্তিকে শনাক্ত করা যায়। একজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করার এত আধুনিক উপায় থাকা সত্ত্বেও গেজেটেড কর্মকর্তার মাধ্যমে সত্যায়িত করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

জানা গেছে, ২০১৫ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সচিব পর্যায়ের একটি বৈঠকে সরকারি চাকরির আবেদনে সত্যায়িত করা লাগবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আবেদনকারীরা অনলাইনে যোগ্যতার ভিত্তিতে আবেদন করবেন এবং পরীক্ষায় বসার অনুমতি পাবেন। কেবল যারা পাশ করবেন, তাদের পরবর্তীতে মৌখিক পরীক্ষার সময় মূল সনদ দেখাতে হবে।

তবে এ সিদ্ধান্ত এখনো পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। অধিকাংশ সরকারি চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, প্রথম শ্রেণির সরকারি গেজেটেড কর্মকর্তার মাধ্যমে নাগরিকত্ব/চারিত্রিক সনদ, অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা সনদের সত্যায়িত ফটোকপি চাওয়া হয়।

আল হেলাল বাবু নামে একজন চাকরিপ্রার্থী  বলেন, ‘এখন অনলাইনে সার্চ দিলেই সার্টিফিকেট আসল নাকি নকল, তা সহজেই বের হয়ে যায়। এই যুগে এসেও সত্যায়িত করতে প্রথম শ্রেণির সরকারি গেজেটেড কর্মকর্তার দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। এতে আমরা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক কর্মকর্তা আছেন, তারা ব্যক্তিগতভাবে না চিনলে সত্যায়িত করতে চান না। ফলে একজন থেকে আরেকজনের কাছে আমাদের দৌড়াতে হয়।’

নুরুননবী নামে আরেকজন চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘দেশ ডিজিটাল হয়েছে। তবুও চাকরিতে আবেদনের সময় সেই পুরনো নিয়ম এখনো চলছে। অথচ সত্যায়িত করতে গেলে আমাদের অনেক হয়রানির শিকার হতে হয়, সময়ও নষ্ট হয়। আমরা এই পুরনো নিয়ম বাতিল চাই।’

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সত্যায়ন প্রক্রিয়া ধীরে-ধীরে থাকবে না। এগুলোর বিকল্প ব্যবস্থা চলে আসবে।’

তিনি বলেন, ‘হয়রানি যাতে না হয়, সুফল যাতে আনা যায়, সেজন্য আমরা কাজ করছি। আমরা ডিজিটালাইজেশনের যুগে প্রবেশ করেছি। এগুলো সহজ হয়ে যাবে। ভবিষ্যতে পরিকল্পনা আছে, যাতে করে জিনিসটা আরও সুন্দর করতে পারি।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এক্ষেত্রে কিছু গোপন কোড আমরা দিতে পারি। তাহলে সেখানে এগুলো থাকবে না। এছাড়া যখন সে (চাকরিপ্রার্থী) কাগজপত্রের কপি জমা দেবে, এরপর ভেরিফিকেশন হবে। তখন তথ্য ভুল দিলে ধরা পড়বে। তবে অরিজিনাল কপিটাই আমরা রাখতে চাইব ভবিষ্যতে।’

এদিকে, অনেকে সত্যায়িত করার ভুয়া সিল মোহর বানিয়ে জাল সই দিয়ে নিজের কাগজপত্র নিজেই সত্যায়িত করেন বলে জানা গেছে। এটি অপরাধ হলেও বিড়ম্বনা এড়াতেই তারা এই কাজ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি চাকরিপ্রার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সত্যায়িত করতে প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার কাছে যেতে হয়। অনেক কর্মকর্তা সত্যায়িত করতে চান না। তারা নানা অজুহাত দেখান। আমি কয়েকবার এই বিড়ম্বনায় পড়েছি। সেজন্য একটি সিল কিনে এনে এখন নিজেই সত্যায়িত করি।’

আরেক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘ভুয়া সিল মোহরের বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। কে জানে না বিষয়টি? নীলক্ষেত গেলেই ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে সিল বানিয়ে আনা যায়। এত সহজে সিল পেলে মানুষ তো গেজেটেড কর্মকর্তার কাছে যাওয়ার ঝামেলায় যেতে চাইবে না, এটাই স্বাভাবিক।’

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ফেইক হওয়ার (সত্যায়ন প্রক্রিয়া) সম্ভাবনা থাকে। অনেকে দেখা যাচ্ছে, সিল বানিয়ে নিজেরাই কাগজপত্র সত্যায়িত করছে। বিষয়টির সমাধান ডিজিটালাইজেশনের মধ্যেই আছে। আমরা এগুলো নিয়ে কাজ করছি।’

15 responses to “চাকরির আবেদনে থাকবে না সত্যায়ন প্রক্রিয়া”

  1. The other day, while I was at work, my cousin stole my apple ipad
    and tested to see if it can survive a twenty five foot
    drop, just so she can be a youtube sensation. My iPad is now broken and
    she has 83 views. I know this is totally off topic but I had to share it
    with someone!

  2. Asking questions are truly fastidious thing if you are not
    understanding something fully, however this
    paragraph provides pleasant understanding even.

  3. I enjoy what you guys tend to be up too. This type of clever work and coverage!
    Keep up the very good works guys I’ve incorporated you guys to my own blogroll.

  4. so much fantastic info on here, : D.

  5. Woah! I’m really loving the template/theme of this blog. It’s simple, yet effective. A lot of times it’s hard to get that “perfect balance” between user friendliness and appearance. I must say you have done a excellent job with this. Additionally, the blog loads super fast for me on Internet explorer. Excellent Blog!

  6. js加密 says:

    js加密 hello my website is js加密

  7. gbowin88 says:

    gbowin88 hello my website is gbowin88

  8. lotus4d2 says:

    lotus4d2 hello my website is lotus4d2

  9. barak4d says:

    barak4d hello my website is barak4d

  10. minjae says:

    minjae hello my website is minjae

  11. sakua says:

    sakua hello my website is sakua

  12. Krones says:

    Krones hello my website is Krones

  13. gazo says:

    gazo hello my website is gazo

  14. squid88 says:

    squid88 hello my website is squid88

  15. I wanted to thank you for this excellent read!! I definitely loved every
    little bit of it. I have got you saved as a favorite to check out new stuff you post…

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x