ঢাকা, সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
দৌলতদিয়ায় পারের অপেক্ষায় ৮০০ গাড়ি, ১৩ কি.মি যানজট
দৈনিক ডাক অনলাইন ডেস্ক

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে পণ্যবাহী ফেরি চলাচলের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে। এতে ঘাট থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট তৈরি হয়েছে। তাই যানবাহনের চালক ও সহকারীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।

এদিকে দীর্ঘদিন পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। তবে ভরা বর্ষার কারণে অনেকে ঝুঁকি এড়াতে লঞ্চের পরিবর্তে ফেরিতে চলাচল করছে। এ কারণে ঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়।

সারা দেশে বুধবার (১১ আগস্ট) থেকে গণপরিবহন চলাচলের সিদ্ধান্তের পর থেকে ঘাট এলাকায় যানবাহনের সংখ্যা বাড়ে। তবে বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকে ঘাট এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের সারি দেখা যায়নি।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঘাট এলাকায় অবস্থান করে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বাংলাদেশ হ্যাচারিজ পর্যন্ত চার কিলোমিটার এলাকায় সড়কের দুই লাইনে প্রায় ৪০০ পণ্যবাহী ট্রাক ও কিছু যাত্রীবাহী বাস ফেরি পারের জন্য অপেক্ষা করছে। এর মধ্যে এক সারিতে বাস ও আরেক সারিতে ট্রাক দেখা যায়।

এসব ট্রাক গতকাল রাতে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌঁছালেও এখন পর্যন্ত ফেরি পার হতে পারেনি। দীর্ঘ সময় ধরে মহাসড়কে আটকে থাকতে হচ্ছে চালক ও শ্রমিকদের। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। টয়লেট, পানি ও খাবারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তাদের ভোগান্তি চরমে। এ ছাড়া সময়মতো মালামাল পরিবহন করতে না পেরে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

অন্যদিকে ঘাট এলাকায় যানজট কমাতে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ১৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার দূরে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় থেকে আহলাদিপুর জুট মিল পর্যন্ত চার কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ৪০০ পণ্যবাহী ট্রাক ও কার্ভাড ভ্যানকে আটকে রাখা হয়েছে, যা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরা থেকে কাঁচামাল নিয়ে ঢাকার কারওয়ান বাজার যাচ্ছিলেন কাভার্ড ভ্যানচালক আলাউদ্দিন শেখ। তিনি বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করে রাতে গোয়ালন্দ মোড় আহ্লাদীপুরে আটকা পড়ি। রাতে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকায় আমাদের আজ ভোরে ছেড়ে দেয়। ঘাটের কাছে এসেও তিন ঘণ্টার মতো আটকে আছি। কখন যে ফেরির নাগাল পাব জানি না।

খুলনা থেকে ঢাকাগামী ট্রাকচালক রুবেল হোসেন বলেন, এখানে মনে হচ্ছে শুধু যাত্রীবাহী বাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি পার করা হচ্ছে। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। শুনলাম শিমুলিয়ায় ঠিকমতো ফেরি চলছে না। তাহলে ওখান থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার জন্য কয়েকটি ফেরি নিয়ে এলেই তো এখানকার সমস্যা কমে যায়।

গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই বিনয় কুমার ঢাকা পোস্টকে জানান, লকডাউন শিথিল হওয়া এবং দুই রুটের গাড়ি এক রুটে আসায় বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা অপচনশীল পণ্যবাহী যানবাহনকে আটকে রাখছি এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এগুলোকে ফেরি পারের জন্য ছেড়ে দিচ্ছি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। একটি ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাময়িক বন্ধ রেখে মেরামতকাজ করা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত কাজ শেষে ফেরিটি চালু করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া মাওয়া থেকে আরও তিনটি বড় ফেরি আজই এই রুটে যোগ হবে।

তিনি বলেন, লকডাউন শিথিল হওয়ায় এবং শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফেরি চলাচল সীমিত হয়ে যাওয়ার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে অত্যধিক।

x