ঢাকা, সোমবার ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:১৩ অপরাহ্ন
করোনার বেড়াজালে জয়পুরহাটের বেসরকারি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার আশংকা
নাহিদ আখতার (জয়পুরহাট )

করোনার কালোছায়ায় জয়পুরহাটে স্বাভাবিক জীবন যাপনে যেমন পড়েছে  বিরুপ প্রভাব , তেমনি শিক্ষা ব্যবস্থার উপরও পড়েছে এর কালোছায়া। বিশেষ করে কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ এর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ জীবনের পড়েছে কালো ছায়া, শিক্ষকরা আছেন খুব কষ্টে। স্কুল পরিচালকগনও পড়েছেন বেড়াজালে।

এদিকে করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে মুক্ত কবে হবে তাও অনিশ্চিত।  যে কোন বিকল্প উপায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার অনুরোধ শিক্ষকগনের।

জয়পুরহাট প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে জয়পুরহাট জেলায় প্রায় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষক আছেন কয়েক হাজার। কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক সমিতির তথ্যমতে এসকল স্কুলের বেশির ভাগ  শিক্ষকের সংসারের যাবতীয় খরচ চলে স্কুলের সামান্য সন্মানী ও প্রাইভেটের আয় দিয়ে।

করোনার কারনে প্রায় ১ বছর ৯ মাস সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী  সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রাইভেট, কোচিং বন্ধ থাকায় জয়পুরহাটের এই সকল কিন্টারগার্ডেন স্কুলের শিক্ষকগন মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

জয়পুরহাট নর্থবেঙ্গল স্কুলের পরিচালক রবিউল ইসলাম এবং শাহীন ক্যাডেট একাডেমির পরিচালক ইকবাল হোসেন  দৈনিক ডাক কে জানান- শিক্ষক, কর্মকর্তা,কর্মচারীর বেতন, সঙ্গে স্কুল ভবন ভাড়া, বিদ্যুৎ,পরিবহন সহ যাবতীয় খরচের পুরোটারই জোগান আসে ছাত্রছাত্রীর বেতন,আবাসিক ভাড়া,পরিবহন ভাড়া ও প্রাইভেট ফি থেকে। যেহেতু স্কুল বন্ধ তাই প্রতিষ্ঠান চালানো এখন কঠিন। প্রতিমাসে বিল্ডিং ভাড়া সহ প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। পৈত্রিক জমি বিক্রি করে কোন রকম টিকে আছি, এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না।

এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা হয়ে হড়েছে ঘড় বন্দি ফলে কিন্ডারগার্টেন ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার চেয়ে অন্যান্য বিষয়ের উপর আগ্রহী হওয়ার প্রবনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বিশেষ করে ভিডিও গেম,কিশোর গ্যাংগ, এ্যান্ড্রয়েট মোবাইলে নেটওয়ার্ক অনিয়ন্ত্রিত থাকায় কিশোর, কিশোরীরা অসামাজিক কাজের  প্রতি  আসক্ত হয়ে পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে এদের শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়ার আশংকা করছেন – সচেতন অভিভাবকগন।

এদিকে পেশা শিক্ষকতা না হলেও নিম্নবিত্ত  পরিবারের বড় সন্তান হওয়ার কারনে নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করে নিজের পড়াশোনা, মেসভাড়ার পাশাপাশি ছোট ভাইবোনের পড়াশোনার খরচে বাবাকেও আর্থিক সহযোগীতা করতে হয় এমন স্টুডেন্ট কাম টিচারদের সংখ্যাও কম না, জয়পুরহাটে।,এদের অবস্থা আরও খারাপ। না পাড়ছে নিজে চলতে না পারছে বাবাকে সহায়তা করতে।

এসকল শিক্ষক ও স্টুডেন্ট কাম শিক্ষক ও কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত আজ জাতি। অচিরেই এমন কালোছায়া থেকে আল্লাহ্ তালা মুক্ত করবেন  জয়পুরহাট তথা গোটা দেশ ও বিশ্বকে। আবারও আমরা ফিরে পাব মুক্ত জীবন, স্বাভাবিক হবে কাজকর্ম, শিক্ষার্থীরা ফিরে পাবে ছাত্রজীবন-এমনটিই প্রত্যাশা সকলের।

x