ঢাকা, মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪, ০৬:০৫ অপরাহ্ন
প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেন রাবির ১৩৮ জন
Reporter Name

ভাস্কর সরকার, (রাবি প্রতিনিধি): রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাবেক-বর্তমান নেতাকর্মী এবং আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানসহ এডহক’ এ সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ১৩৮ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ কর্মস্থলে যোগদান করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আজ বুধবার (১৯ মে) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে রাবি শাখা ছাত্রলীগের দলীয় টেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি এ হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিবিরের নৃশংস হামলায় পা হারানোসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতা ও এডহকে নিয়োগপ্রাপ্তদের অন্যতম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘রাবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সহায়তা করতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন সময়ে স্বাধীনতা বিরোধী, মৌলবাদী জামাত-শিবির চক্রের হামলাসহ নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই জামাত-শিবির চক্রের নৃশংস হামলায় পঙ্গুত্ব বরণ করেছি। ইতোমধ্যে অনেকের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স শেষ, তাই বেকার ও মানবেতর জীবন-যাপন করছিলাম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, রাবিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাত শতাধিক পদ দীর্ঘ দিন যাবত শূন্য রয়েছে। আমরা উক্ত শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে সিভি/জীবন বৃত্তান্ত জমা দেই। কিন্তু বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে পারেন নি। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এম আব্দুস সোবহান স্যার গত ৫ মে ১৯৭৩ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ এর ১২(৫) ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে শূন্য পদের বিপরীতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাবেক-বর্তমান নেতাকর্মী, আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারসহ আমাদের ১৩৮ জনকে এডহক’ ভিত্তিতে ছয় মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে নিয়োগ প্রদান করেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে প্রাপ্ত নিয়োগপত্রের আলোকে গত ৬ মে যোগদানও করেছি।

কিন্তু ওইদিনই আমাদের যোগদান প্রক্রিয়া চলাকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন এবং আমাদের নিয়োগকে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূত’ আখ্যায়িত করে। যদিও ১৯৭৩ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ এর ১২(৫) ধারা মোতাবেক, এই নিয়োগকে অবৈধ বলার কোনো সুযোগ নেই। নিয়মানুযায়ী, এই নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণার আগে’৭৩ এর অধ্যাদেশ-এর উপরিউক্ত ধারা বাতিল করা উচিত ছিল বলে আমরা মনে করি। এরপরই দৈনন্দিন রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. আব্দুস সালামকে দিয়ে আমাদের যোগদানের চলমান প্রক্রিয়া গত ৮ মে স্থগিত ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। আমাদের জানামতে, নিয়মিত উপাচার্যের প্রদানকৃত নিয়োগ, দৈনন্দিন রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য’ স্থগিত করতে পারেন না।

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৩ এর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুসারে এডহক’ নিয়োগ একটি বৈধ প্রক্রিয়া। অতীতে প্রায় সকল প্রশাসন-ই এডহক’ ভিত্তিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। গত ১০ ডিসেম্বর-২০২০ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞার পরও, ১১ জানুয়ারি -২০২১ তারিখে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার পদে ‘এডহক’ ভিত্তিতে একজনকে মানবিক কারণে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এডহক নিয়োগ বন্ধ রাখতে ২০০৯ সালেও একই রকম নিষেধাজ্ঞা মন্ত্রণালয় থেকে এসেছিলো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে নিজ অধ্যাদেশ বলে এডহক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

আমরা বেকার অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছি। উদ্ভুত এই পরিস্থিতিতে নিয়োগপ্রাপ্ত আমরা ও আমাদের পরিবার দুশ্চিন্তায় আছি। তাই আমাদের নিয়োগের ওপর আরোপিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দেয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে দ্রুত কর্মস্থলে যোগদানের মাধ্যমে কর্মময় জীবন-যাপন শুরুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জনাচ্ছি।

One response to “প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেন রাবির ১৩৮ জন”

  1. brainsclub says:

    … [Trackback]

    […] Read More to that Topic: doinikdak.com/news/16696 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x