ঢাকা, শুক্রবার ০৭ মার্চ ২০২৫, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন
ভৈরবে জোড়া খূন, অবশেষে পুলিশ প্রহড়ায় হাওড়ে ধান কাটছেন কৃষকরা
Reporter Name

২৯ এপ্রিল, জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব প্রতিনিধিঃ ভৈরবে জোড়া খূনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুনরায় যেন আর সংঘাত সৃষ্টি না হয় সেজন্য পুলিশের পাহারায় জোয়ানশাহী হাওড়ের ধান কাটছে^ন কৃষকরা। আজ বৃহস্পতিবার পুলিশের উপস্থিতিতে জমির ধান কৃষকরা কাটার পর এসব ধান তাদের ঘরে তুলছে^ন।

গত ১৭ এপ্রিল ভৈরবের আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া খলাপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু দলের লোকদের মাঝে সংঘর্ষে ২ জন নিহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় ৩ শতাধিক ঘরবাড়ি ভাংচুর ও মালামাল লুটপাট হয়। এ ঘটনায় ভৈরব থানায় উভয় পক্ষের ৫টি মামলা দায়ের হয়। ঐ সকল মামলায় প্রায় ৭ শত লোককে আসামী করা হয়। এরপর থেকে গ্রেফতার আতংকে লুন্দিয়া ও খলাপাড়া গ্রাম দুটি পুরুষ শুন্য হয়ে পড়ে। এদিকে   জোয়ানশাহী হাওড়ে বোরো ধান পাকতে শুরু করেছে^। একদিকে গ্রেফতার আতংক অপরদিকে হামলার আশংকায় হাওড়ের ধান কাটা নিয়ে কৃষকদের মাঝে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। ধান কাটার বিষয়টি বিবেচনায় এনে ভৈরব থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন আজ সকাল থেকে হাওরে অবস্থান নেয়। নির্বিঘে।ন ধান কাটতে কৃষকদের উদ্ধোবুদ্ধ করছেন পুলিশ। মামলার আসামী ব্যাতীত লোকজন তাদের জমি থেকে পুলিশের উপস্থিতিতে নির্বিঘ্নে তাদের জমি থেকে ধান কেটে ঘরে তুলেন। এ সময় প্রায় অর্ধশতাধিক পুলিশের একটি দল দুটি টিমে বিভক্ত হয়ে লুন্দিয়া ও খলাপাড়া এলাকায় অবস্থান নিয়ে নিরাপদে ধান কাটতে কৃষকদের উৎসাহিত করেন। এছ^াড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষিকর্মকর্তাসহ ব্লক সুপারভাইজাররাও হাওড়ে উপস্থিত থেকে কৃষকদের খোজ খবর নেন।

জানা যায়, হাওড়ে এবার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। বর্তমানে জমিতে অধিকাংশ ধান পেকে গেছে। গ্রামে খুন হওয়াই মামলার কারনে গ্রামগুলি এখন পূরুষ শূন্য অবস্হা বিরাজ করছে। ফলে পাকা ধান কাটা নিয়ে অনির্শ্বিয়তা দেখা দেয়। আসামী ব্যাতীত কাউকে গ্রেফতার বা হয়রানী করবেনা মর্মে আম্বসাস পেয়ে যাদের জমির ধান পেকেছে তারা পুলিশের উপস্থিতে জমির ধান কেটে নিচ্ছেন। এখন থেকে প্রতিদিন পাকা ধান কাটা অব্যাহত থাকবে বলেও পুলিশ জানায়।

কৃষকরা জানায়, সংঘর্ষে এ এলাকায় ২টি খূন হওয়ার পর গ্রেফতার এড়াতে সবাই গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন। যাদের জমি আছে তারাও গা ঢাকা দিয়েছে। তারা লোক মারফত আমাদের কাছে খবর পাঠায় তাদের জমির ধান কেটে দিতে। আমরা পারিশ্রমিক নিয়ে জমির ধান কেটে তাদের ঘরৈ তুলে দিচ্ছি।

আমাদের গ্রামে গিয়ে তাদের জমির ধান কেটে দিতে অনুরোধ করে। ধান কাটতে এসে প্রথমে আমাদের লাগছিল। পুলিশের উপস্থিতিতে ধান কাটতে পেরে এখন আমরা নিজেদেরকে নিরাপদ মনে করছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে কৃষি বিভাগ পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে আজ ধান কাটার ব্যবস্থা করে। তিনি বলেন আমি নিজে তদারকি করে আজ প্রায় ১৫ হেক্টর জমির পাকা ধান কাটার ব্যবস্থা করেছি।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি)  মোঃ শাহিন জানান, যারা মামলার আসামী নয় তাদের কোন ভয় নেই। কৃষি বিভাগের অনুরোধে আজ পুলিশের উপস্থিতিতে কৃষকরা নির্বিগ্নে নিরাপদে ধান কেটেছে। যতদিন জমিতে পাকা ধান থাকবে ততদিন পুলিশ উপস্থিত থেকে ধান কাটতে কৃষকদের সহযোগীতা করে যাবেন।

x