ঢাকা, রবিবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৫০ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া কেউ দমাতে পারবে না: নরেন্দ্র মোদি
Reporter Name
New Delhi: Prime Minister Narendra Modi addresses during a function on promotion and development of Yoga in New Delhi, Friday, Aug 30, 2019. (PTI Photo/Kamal Kishore)(PTI8_30_2019_000043B)

বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহস ও নেতৃত্ব এটা নিশ্চিত করেছিলো যে, কোনো শক্তিই বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না।

তিনি বলেন: বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া কেউ দমাতে পারবে না।

বঙ্গবন্ধুর প্রতি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে মোদি এসময় ৭ মার্চে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অংশ বাংলায় উচ্চারণ করেন।

মোদি বলেন: বঙ্গবন্ধু তার দেশের মানুষকে বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে তখন স্বাধীনতার জন্য দেশের আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা মুক্তিবাহিনীতে পরিণত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে, স্বাধীনতা এনেছে।

শুক্রবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নরেন্দ্র মোদি। এসময় এসব কথা বলেন তিনি।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে তিনি উপস্থিত হতে পেরে ও বাংলাদেশ তাকে আমন্ত্রণ জানানোয় ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন: আপনাদের সবার এই স্নেহ আমার জীবনের অন্যতম মূল্যবান মুহূর্ত। আমি আনন্দিত যে, আপনারা আমাকেও বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রার এই গুরুত্বপূর্ণ পর্বে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আজ ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বের পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হচ্ছে। আজ বাংলাদেশের জাতীয় দিবস এবং স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীও। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করছে।

এসময় ভারতীয়দের পক্ষ থেকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের মানুষকে শুভেচ্ছা জানান মোদি। একই সাথে স্মরণ করেন মুক্তিদ্ধের সময় বাংলাদেশের পাশে থাকা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সেই সাহসী সৈন্যদের, যারা মুক্তিযুদ্ধে রক্ত দিয়েছিলেন, আত্মত্যাগ করেছিলেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের
স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে খুব বড় ভূমিকা রেখেছিলেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন: আমার বয়স তখন ২২-২৩ বছর ছিলো, যখন আমি ও আমার অনেক সহকর্মী বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্য সত্যাগ্রহ করেছিলাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সমর্থন করায় আমি গ্রেপ্তার হয়েছিলাম এবং কারাগারেও গিয়েছিলাম।

তিনি কালজয়ী গান- “এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা, আমরা তােমাদের ভুলব না, আমরা তােমাদের ভুলব না”- বাংলায় উচ্চারণ  করে বলেন, যারা তাদের রক্ত দিয়ে বাংলাদেশকে মুক্ত করেছিলেন, আমরা তাদের ভুলব না।

বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে পেরে সম্মানিতবোধ করেন বলেও জানান নরেন্দ্র মোদি।

তিনি বলেন: একবিংশ শতাব্দীর আগামী ২৫ বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ঐতিহ্যের অংশীদার, আমরা উন্নয়নেরও অংশীদার। আমরা লক্ষ্যও ভাগাভাগি করি, চ্যালেঞ্জগুলােও ভাগাভাগি করি। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, বাণিজ্য ও শিল্পে যেখানে আমাদের জন্য একই ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনই সন্ত্রাসবাদের মতাে সমান বিপদও রয়েছে। এই জাতীয় অমানবিক ঘটনাবলীর পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবে রূপদানকারী শক্তিগুলাে এখনও সক্রিয় রয়েছে। আমাদের অবশ্যই তাদের থেকে সাবধানে থাকতে হবে এবং ওদের মােকাবিলা করার জন্য সংগঠিতও হতে হবে।

নরেন্দ্র মোদি বলেন: আমাদের উভয় দেশেই গণতন্ত্রের শক্তি রয়েছে, এগিয়ে যাওয়ার সুস্পষ্ট দূরদর্শিতা রয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ অগ্রযাত্রা এই পুরাে অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য সমান জরুরি। আর এজন্যে আজ ভারত আর বাংলাদেশ দু’টি দেশের সরকারই এই সংবেদনশীলতা উপলব্ধি করছে।

ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদার করার জন্য দু’টি দেশেরই তরুণদের মধ্যে আরও উন্নত যােগাযােগ সমান প্রয়ােজনীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশের ৫০ তরুণ উদ্যোক্তাকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানাতে চাই। তারা ভারতে আসুন, আমাদের স্টার্ট-আপ আর ইকোসিস্টেম উদ্ভাবনে যোগ দিন।

এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গান্ধী শান্তি পুরস্কার দিতে পারায় ভারতের জন্য গর্বের ব্যাপার বলে মন্তব্য করেন নরেন্দ্র মোদি।

তিনি বলেন: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে উপস্থিত থাকা এবং এমন একটি পুরস্কার তুলে দিতে পারা আমার জীবনের সেরা মুহূর্তগুলোর একটি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মুজিব কোট পরে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন এদিন।

তিনি অত্যন্ত উচ্ছ্বসিতভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দক্ষিণ এশিয়ার অনুপ্রেরণাদায়ক রাষ্ট্রনেতা হিসেবে স্মরণ করে তার প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা জানান।

নিউজ সোর্সঃ বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া কেউ দমাতে পারবে না: নরেন্দ্র মোদি

x