দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত দুই বছরে লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যবসাখাত। এরমধ্যে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসের বেশিরভাগই সময় কেটে গেছে লকডাউনে। ঈদুল আজহার আগে কয়েকদিন মার্কেট, শপিংমল খোলা থাকলেও সারা বছরের অন্যান্য সময়ের লোকসান পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি ব্যবসায়ীদের।
এমন অবস্থায় ঈদুল আজহার পর জুলাই মাসের শেষের দিকে অর্থবছরের দ্বিতীয় দফার লকডাউন ঘোষণা অনুযায়ী শেষ হবে চলতি মাসের ৫ আগস্ট পর্যন্ত। এ সময়ে ব্যবসায়ীদের টিকে থাকার দায়ে বিধি-নিষেধ তুলে দিয়ে সবধরনের দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতান খুলে দেওয়ার দাবি করেছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি।
রোববার (০১ আগস্ট) রাজধানীর নিউমার্কেটে দোকান মালিক সমিতির কার্যালয়ে এ দাবি জানান সমিতির নেতারা।
এ সময় সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, দেশে ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়। এরপর থেকে এ পর্যন্ত ২৭০ দিন দোকানপাট বন্ধ ছিল। বলেন, সব মিলিয়ে গত দেড় বছরে ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২৭ লাখ কোটি টাকা।
এ সময় দোকান খোলার বিষয়ে চার দফা দাবি পেশ করেন মালিক সমিতির এ নেতা।
এর মধ্যে রয়েছে দেশজুড়ে টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা, মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের নগদ প্রণোদনা দেওয়া।
বাংলাদেশে ৫৫ লাখ ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আছেন। এ খাতে কর্মচারী আছেন দুই কোটির বেশি। এই পরিস্থিতিতে তারা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনি এই খাত সংশ্লিষ্ট অন্যরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
করোনা সংক্রমণ রোধে ১ জুলাই থেকে দুই সপ্তাহের জন্য ঢাকাসহ সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। মাঝে ঈদের সময় সাতদিন বাদ দিয়ে আবার ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। এরমধ্যে রপ্তানিখাত সচল রাখতে ব্যবসায়ীদের দাবি পরিপ্রেক্ষিতে আজ থেকে (০১ আগস্ট) পোশাক কারখানা খুলেছে।
এর আগে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে চলতি বছরের মে মাসে ঈদুল ফিতরের পরদিন পর্যন্ত শুরু হয় সাধারণ ছুটি। পরে সরকার সাধারণ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়ে ঈদের আগে সারাদেশে যাত্রীবাহী সব পরিবহন চলাচলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে দফায় দফায় সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়লেও গার্মেন্টস কারখানা ও অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান চালু ছিল।