ঢাকা, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৫ অপরাহ্ন
প্রধানমন্ত্রীর অনুদান হাতিয়ে নিলেন কাউন্সিলর, ফেরত দেওয়ালেন মেয়র
দৈনিক ডাক অনলাইন ডেস্ক

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে চৌর্যবৃত্ত করে হাতিয়ে নেওয়া প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঈদ অনুদান ফেরত পেল দুস্থরা। মির্জাপুর পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি শামিম খান চৌর্যবৃত্ত করে প্রধানমন্ত্রীর জিআর ক্যাশ বরাদ্ধের (জেনারেল রিলিফ) টাকা হাতিয়ে নেন।

সোমবার (১৯ জুলাই) ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামীম খান ওয়ার্ডের ২৫ জন দুস্থ মানুষের জাতীয় পরিচয় পত্র পৌর পরিষদে জমা দিয়ে কৌশলে ১২ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেন। বিকেলে বিষয়টি জানতে পেরে শামীমসহ কাউন্সিলরদের পরিষদে ডাকেন পৌর মেয়র সালমা আক্তার। এ সময় মেয়র শামীমকে চাপ দিলে তিনি প্রতারণার কথা স্বীকার করেন। পরে পৌর মেয়রের নির্দেশে জিআর ক্যাশ বরাদ্ধের অনুদানের টাকা ফেরত দেন।

জানা গেছে, মির্জাপুর পৌরসভায় চারশ দুস্থ মানুষের জন্য ৫০০ টাকা করে দুই লাখ টাকা প্রধানমন্ত্রীর জিআর ক্যাশ বরাদ্ধ দেওয়া হয়। ৯ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ৩ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলররা প্রত্যেকেই জাতীয় পরিচয় পত্রসহ ২৫ জনের নামের তালিকা জমা দেন। এছাড়াও পৌর মেয়র ৯ ওয়ার্ডের আরও ১০০ জনের তালিকা জমা দেন।

সোমবার দুপুর থেকে জিআর প্রকল্পের নগদ টাকা বিতরণ শুরু করেন মেয়র। ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম খান তরিঘরি করে আগেই তার দেয়া নামের তালিকা অনুযায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত নারী কাউন্সিলর চন্দনা দের কাছ থেকে ২৫ জনের ১২ হাজার ৫০০ টাকা কৌশলে তুলে নেন। কিন্তু তালিকাভুক্ত প্রকৃত দুস্থরা বরাদ্ধকৃত টাকা পাননি বলে অভিযোগ পান পৌর মেয়র। বিষয়টি জানার পর জরুরীভাবে শামীমসহ সব কাউন্সিলরদের পৌর পরিষদে ডাকেন। সেখানে ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামীম বলেন, ‘আমার কাছে থাকা পরিচয়পত্রের ফটোকপি অফিসে জমা দিয়ে আমি প্রতারণা করে টাকা তুলে নিয়েছি।’

পরে পৌর মেয়রের নির্দেশে পৌর কাউন্সিলর শামীম ওই টাকা ফেরত দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

এ বিষয়ে তালিকায় থাকা সরিষাদাইর গ্রামের প্রকাশ কর্মকারের স্ত্রী মমতা কর্মকার জানান, তিনি পৌরসভা থেকে কোনো টাকা পাননি। তাকে টাকা দেওয়া হবে এ বিষয়টিও কেউ জানায়নি।

পাহাড়পুর গ্রামের হামেদ মিয়ার ছেলে মির্জাপুর খেয়া ঘাটের মাঝি মোবারক হোসেনের কাছে পৌরসভা থেকে ৫০০ টাকা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে  বলেন, কেউ তো টাকা দেয়নি। ওয়ার্ড কাউন্সিরর আপনার নাম দিয়ে টাকা এনেছেন জানতে চাইলে বলেন, এতো কষ্ট করে ওকে নির্বাচিত করলাম আমাদের টাকাও মেরে খেলো।

তালিকায় নাম থাকলেও টাকা না পাওয়ার কথা জানান, সরিষাদাইর গ্রামের ছোরহাব মিয়ার স্ত্রী হাছনা বেগম, খন্দকার আফতাবের ছেলে খন্দকার শরীফ, নরেশ ঘোষের মেয়ে রুমা ঘোষ ও ঠাকুরবাড়ির নারায়ণ চক্রবর্তী গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী।

মির্জাপুর পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার শিমুলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, স্বচ্ছভাবে প্রধানমন্ত্রীর জিআর প্রকল্পের নগদ টাকা বিতরণের বিষয়ে একাধিকবার পরিষদের সভা করা হয়। তারপরও ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামীম প্রতারণার আশ্রয় নেন। তার কাছ থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা ফেরত নিয়ে তালিকা অনুযায়ী বিতরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x