লকডাউনে বন্ধ থাকার পর সিটি করপোরেশন এলাকায় আবারও শুরু হয়েছে গণপরিবহন চলাচল। তবে গত কয়েকদিন অফিসগামী যাত্রীর তুলনায় পরিবহন সংকট থাকলেও আজকের চিত্র ছিল ভিন্ন।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় সড়কে গণপরিবহনের তুলনায় যাত্রী কম। বলাই এক প্রকার যাত্রী সঙ্কটে পড়েছে রাজধানীর পরিবহনগুলো।
সরেজমিনে বুধবার সকালে দেখা যায়, সড়কে যাত্রীর তুলনায় গণপরিবহন বেশি। এছাড়াও যাত্রীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা থাকলেও চালক ও বাসের সহায়করা তা মানছেন না।
বর্ধিত ভাড়া ও অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলছে রাজধানীর গণপরিবহন। মিরপুর, কাজীপাড়া শেওড়াপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ ও প্রেসক্লাব এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।
রিকশা-অটোরিকশার দাপট কমেছে
বাস চলাচলের কারণে রাজধানীর সড়কে কমে গেছে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার দাপট। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লকডাউনের খবরে অনেকেই ঢাকা ছেড়েছেন আগেই। প্রয়োজনে যারা ঢাকায় রয়েছেন তারাই গত দু’দিন সড়কে নেমে গন্তব্যে যেতে দুর্ভোগে পড়েছেন। বাধ্য হয়ে তারা প্রায় সবাই সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা রিকশা চলাচল করেছেন। ফলে সড়কে প্রচুর চাপ দেখা গেছে। ভাড়াও আদায় করা হয়েছে গলাকাটা।
উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি
গণপরিবহনে যাত্রীরা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও অনেক সময় বাসের চালক ও সহায়করা সেটা মানছেন না। ফার্মগেট মোড়ে দেখা যায়, অল্প কিছু গণপরিবহনে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকলেও বেশিরভাগ পরিবহনে ছিল না। কিছু গণপরিবহনে দাঁড়িয়ে যাত্রী নিতে দেখা গেছে।
স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেনো জানতে একটি পরিবহনের চালক সেলিম মিয়া বলেন, আমরা চেষ্টা করছি মানার। যাত্রীরা সহযোগিতা করলেই আমাদের জন্য কাজটি সহজ হয়ে যায়। এছাড়া গাড়িতে যাত্রী উঠার সঙ্গে সঙ্গে আমরা মাস্ক পরিধানের কথা বলি।
গুলিস্তান থেকে আগারগাঁও মাত্র ২৩ মিনিট!
গুলিস্তান থেকে মাত্র ২৩ মিনিটে আগারগাঁও পৌঁছে উল্লোসিত আনোয়ার পারভেজ নামের এক যাত্রী। তিনি জানান, স্বাভাবিকভাবে সকালে আসতে গেলে আপনাকে প্রায় ঘণ্টাখানেকের জ্যামে থাকতে হবে। লকডাউনের জন্য দ্রুত আসা গেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বিকল্প পরিবহনে আগারগাঁও এসেছি। এখানে পাসপোর্ট অফিসে জরুরী কাজে এসেছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বাসে ছিলাম। অন্য যাত্রীরাও সহ বাসের চালক-সহায়করাও মাস্ক ব্যবহার করেছে। তবে গাড়িতে যাত্রীর সংখ্যা কম ছিল।
আলিফ পরিবহনের চালক সোহেল রানা বলেন, আজকের সড়কে অন্য দিনগুলোর তুলনায় যাত্রী সংখ্যা অনেক কম। যাত্রীদের চাপ যদি কম থাকে তাহলে মালিকরা সড়কে বাস কম নামাবেন। যাত্রী কম আর বেশিতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই, মালিকের গাড়ি চালাই। গাড়ি চললে আমাদের বেতন হবে।
শিয়া মসজিদ-আব্দুল্লাহপুর রুটে চলাচলরত ভুঁইয়া পরিবহনের সুপারভাইজর রুহুল আমিন জানান, গত দু’দিন বাসের অভাবে মানুষের নানা দুর্ভোগ দেখা গেছে। আজ বাস চলাচলের ফলে মানুষের আর সেই চলাচলের দুর্ভোগ নেই। তবে যাত্রী স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক কম রয়েছে।
সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়েই বাস চলাচল করছে বলেও জানান তিনি।
সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুধুমাত্র ঢাকাসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় বুধবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গণপরিবহন চলাচল করবে। এসময় শহরের বাইরের কোনো পরিবহন শহরে প্রবেশ করতে পারবে না এবং বের হতেও পারবে না। নিউজ সোর্সঃ গণপরিবহনে যাত্রী কম, স্বাস্থ্যবিধি সেভাবে মানছে না পরিবহনকর্মীরা