ঢাকা, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১১ পূর্বাহ্ন
কলেজছাত্রীর মামলা গৌরীপুর উপজেলা যুবলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে
তাপস কর, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. সানাউল হকের বিরুদ্ধে সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের জন‍্য এক কলেজছাত্রী মামলা দায়ের করেছে।

ময়মনসিংহ জেলা শিশু ও নারী নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে গত ১৬ জুন এ অভিযোগপত্র দায়ের করা হয়। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) কে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন।

শুক্রবার পিবিআই পরিদর্শক মো. ফিরোজ হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ওই কলেজছাত্রী গর্ভধারণের বিষয়ে ডাক্তারি ও হাসপাতালের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। তদন্ত কাজও শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

ভিকটিম ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তিনি গৌরীপুরের একটি কলেজের শিক্ষার্থী। রাস্তায় আসা-যাওয়ার সময় একটি ছেলে তাকে উত্ত্যক্ত (ইভটিজিং) করে আসছিল। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর গৌরীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে থানায় যান। সেখানে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. সানাউল হকের সঙ্গে দেখা হয় এবং তিনি জিডি করার কাজেও সহযোগিতা করেন, মোবাইল ফোনের নম্বর নেন।

ওই কলেজছাত্রী অভিযোগে বলেন, তার ৮ দিন পর ২৯ ডিসেম্বর সানাউল হক আমাকে মোবাইল ফোনে জানায়, জিডি ময়মনসিংহ ডিবি অফিসে তদন্ত চলছে। এখনি ডিবি অফিসে আমাকে যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর অফিসে সামনে আমাকে দাঁড় করিয়ে ভিতরে যান সানাউল হক। ডিবি অফিস থেকে বের হয়ে বলেন, অফিসার নেই, চলো খেয়ে আসি।

এই বলে নদীর পাড়ের একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে দুপুরের খাবারের পর একটি কক্ষে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর তিনি বিয়ে করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে থাকেন। আমি ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে দ্রুত সময়ে মধ্যে বিয়ে ও দ্বিতীয় সন্তান নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে।

এরপর  ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নিকাহ রেজিস্ট্রি অফিসের সিলমোহরযুক্ত ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে রেজিস্ট্রিকৃত কাবিনের কাবিননামা হাতে তুলে দেন এবং গাজীপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যায়।

ওই কলেজছাত্রী গত ১২মার্চ গৌরীপুরের বাসায় গেলে সানাউল হক তার সঙ্গে সব সম্পর্ক এবং অন্তঃসত্ত্বা সন্তানও অস্বীকার করে। ওইদিন কলেজ ছাত্রী কাবিননামা ও গর্ভের সন্তানের বিষয়টি তার বড় ভাই মো. নজরুল ইসলামকে জানালে তিনিও অপমান-অপদস্থ করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এদিকে কলেজছাত্রী কাবিননামার সত্যতা যাচাই করতে ময়মনসিংহ নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে আবেদন করেন। নিকাহ রেজিস্ট্রার ও কাজী আব্দুল মান্নান গত ২৪ জুন দেয়া প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ করেন পৃষ্ঠা নং ৫৩, বহি নং ০২/১৯, তারিখ ১০/০৯/২০২১৮ইং তারিখে কোনো প্রকার বিবাহ রেজিস্ট্রি হয় নাই। কাবিনানামাটি বানোয়াট, ভুল ও মিথ্যা।

এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. সানাউল হক জানান, আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে ও বানোয়াট। তাকে হেয় ও প্রতিপন্ন করার জন্যই এই মামলা করা হয়েছে। তিনি তার নামে দায়ের কৃত মামলাটি মিথ‍্যে বলে দাবি করেন।

One response to “কলেজছাত্রীর মামলা গৌরীপুর উপজেলা যুবলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে”

  1. … [Trackback]

    […] Find More to that Topic: doinikdak.com/news/31793 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x