ঢাকা, মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৩ অপরাহ্ন
নগরকান্দায় শশুর বাড়িতেই মীমের মৃত্যু -মামলা পিবিআইর হাতে
মিজানুর রহমান নগরকান্দা (ফরিদপুর)

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের গোয়াল পুতা গ্রামের শশুর বাড়িতেই মোসাঃ মুন্নী আক্তার মিম (২০) এর মৃত্যু হয়।নিহত মিমের পিতা – মাতার দাবী আত্মহত্যা নয় মিমকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে ২৭মে ২০২১ ইং রোজ বৃহস্পতিবার মেয়ের মা সাগরী বেগম বাদী হয়ে নগরকান্দা থানায় একটি মামলা করেন।

২৬ মে রোজ বুধবার দিবাগত রাতে মীম গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। শশুর বাড়ির লোকজন তড়িঘড়ি করে মিমের লাশ মাটিতে নামিয়ে হাসপাতালে নেয়ার চেস্টা চালায়।এসময়ের মধ্যে প্রতিবেশী কর্তৃক মিমের আত্মহত্যার খবর জানতে পারে তার বাবা /মা।মিমের মৃত্যুর খবর শুনে তার বাবার বাড়ির লোকজন ছুটে যান মীমের শশুর বাড়ির গোয়াল পুতা গ্রামে আঃ রশিদ মৃধার বাড়িতে। মৃত্যুর খবর পেয়ে নগরকান্দা থানা পুলিশ ঘটনা স্থল গিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মর্গে পাঠায়।পোস্টমর্টেম শেষে নিহত মীমের লাশ তার বাবার বাড়ি শংকর পাশা গ্রামে দাফন সম্পন্ন করা হয়।

মুন্নী আক্তার মিম ও তার স্বামী মুহাইমিনুল মৃধা অরফে বাবু মৃধা একইসাথে কৃষ্ণনাডাঙ্গী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একই শ্রেণীতে পড়াশোনা করতো।স্কুলে যাওয়া আসার মধ্যে দিয়ে তাদের দুইজনের মাঝে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক।প্রেমের সম্পর্কের বিষয় দুই পরিবারের মাজে জানাজানি হলে মেয়ের বাবা /মা অন্যত্র মেয়ের বিয়ে ঠিক করেন।বিয়ের কথা বাবু মৃধা জানতে পারে এবং মীমকে ফুসলিয়ে বিয়ের কথা বলে ফরিদপুর আদালত নোটারী পাবলিক এর কার্যালয় গিয়ে বয়স বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা দেনমোহরানায় বিবাহের এ্যাফিডেভিট করে।যার রেজিঃ নং ৩১৮৮ তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০২০। নোটারী পাবলিক এ্যাফিডেভিট করে।

দুই পরিবারের লোকজন খোঁজাখোজি করে ছেলে মেয়ের সন্ধান পায় এবং পুনরায় দুই পরিবারের সম্মতি ক্রমে বিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করতে নিজ উপজেলা রেখে ছেলে পক্ষের চাপে পাশের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লা গন্জ ইউনিয়নের ইউনিয়নের কাজী মৌলভী আবু জাফরের মাধ্যমে ৭ লাখ টাকায় বিয়ে রেজিষ্ট্রী করায়।যার বই নং ১০৩,পাতা নং ২৬ তাং ১৬/০২/২০২১।বিয়ে করে মীমকে বাড়িতে স্থান করে দেয় শশুর বাড়ির লোকজন। প্রথমে কয়েক দিন ভালোই কাটছিলো কিন্তু বেশি দিন সেই সুখ সইতে পারেনি শশুর বাড়ির লোকজনের অত্যাচার, নির্যাতন আর অকথ্য গালমন্দে।সে কারনেই মিমের আত্মহত্যা বলে দেয় বিবেকের রায়ে।

মিমের জন্ম ০১-০২-২০০৪, নিবন্ধন বহিনং ৪,নিবন্ধন তারিখ ০১-০১,২০১১ ডাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদ।জন্ম নিবন্ধনে মিমের বয়স কম থাকলেও ছেলে পক্ষ ফরিদপুর নোটারীর পাবলিক কার্যালয় গিয়ে ০১-১২-২০২০ ইং তারিখে এ্যডভোকেট এম এ সালাম এর মাধ্যমে বিবাহের এ্যাফিডেভিট করে।
মীম মতন তার জা– আর এক মীম বাবু মৃধ্যার ভাই লাভলু মৃধ্যার স্ত্রী নির্যাতন নিপিড়নে শশুর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে স্বামী, শশুর, শাশুড়ীর নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নগরকান্দা থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নং ০৫ তাং ০২-১২-২০১৪। মীম সদরপুর থানার নয়াকান্দি গ্রামের বিল্লাল শেখের মেয়ে। নিহত মীমের মামলাটি বাংলাদেশ পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। মীমের আত্মহত্যার প্রচারণায় বাধ্য করছে এবং যে সকল ব্যক্তি কিশোরী মীমের বয়স বাড়িয়ে এ্যাফিডেভিট ও বিবাহের রেজিষ্ট্রি করছেন তাদের বিচার দাবী করেন এলাকাবাসী। নিহত মীমের মা সাগরী বেগম বলেন মামলার শুরুতেই আমারা যা মামলায় লিখতে বলি তা রাইটার লিখেনা এবং মামলা পিবিআই তদন্ত করছে সঠিক তদন্ত না হলে পুনরায় আবার তদন্ত চাইবো আদালতে।এছাড়া আমার মেয়ে মীম হত্যার সঠিক বিচার চাই।মীমের শশুর বাড়িতে গিয়ে কাউকে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

x