ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৫:৩২ অপরাহ্ন
বসুরহাট পৌরসভায় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ১৪৪ ধারা জারি
মোঃ বেল্লাল হোসেন নাঈম

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট বাজারের রুপালী চত্তরে আ’লীগের দুটি গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৪৪ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) দুপুর ১২টা থেকে  রাত ১২টা পর্যন্ত বসুরহাট পৌরসভায় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউল হক মীর।

১.জারীকৃত আদেশ নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাধীন বসুরহাট বাজারসহ সমগ্র বসুরহাট পৌর এলাকায় প্রযোজ্য হবে।

২. কতৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত কোন ব্যক্তি /সংগঠন/ রাজনৈতিক দল / গণ জামায়েত সভা সমাবেশ/ বিক্ষোভ মিছিল/ শোভাযাত্রা ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহন করতে পারবে না।

৩. যে কোনো ধরনের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বসুরহাট বাজারসহ সমগ্র বসুরহাট পৌর এলাকার মধ্যে ৪ (চার) জনের অধিক ব্যক্তি জমায়েত হতে পারবে না।

৪. যে কোনো প্রকার রাজনৈতিক প্রচারনামূলক কর্মকান্ড গ্রহন করা যাবে না।

উপরোক্ত আদেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলাসহ আইন মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

বুধবার সন্ধ্যায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট বোন রোকেয়া বেগমের (৫৫) বাসায় হামলার ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় বসুরহাট বাজারের রুপালী চত্তরে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগ অনুসারীরা। অপরদিকে, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাদের মির্জার ব্যক্তিগত সহকারী ও উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন মাহমুদ তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একই স্থানে একই সময়ে উপজেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে পাল্টা প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয়। এতে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দিলে বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ১৪৪  ধারা জারি করার ঘোষণা দেয় উপজেলা প্রশাসন।

উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুর কাদেরের ছোট বোন রোকেয়া বেগমের বসুরহাট পৌরসভার থানার পোল সংলগ্ন বাস ভবন এইচ আর ভবনে কাদের মির্জার অনুসারী কেচ্ছা রাসেলের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ উপজেলা আ’লীগ অনুসারী নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং  পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে।

এই ঘটনার জেরে বুধবার রাত ১০টার দিকে বসুরহাট থানার সামনের সড়কে কাদের মির্জার বড় বোন তাহেরা বেগম (৬৯) ও ছোট বোন রোকেয়া বেগম (৫৫)  উপজেলা আ’লীগের অনুসারী নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে এই বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তারা বিক্ষোভ মিছিলে কাদের মির্জার অনুসারীদের নেতৃত্বে  ছোট বোন রোকেয়া বেগমের বাসায় হামলার প্রতিবাদে কাদের মির্জার শাস্তির দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

রোকেয়া বেগম কাদের মির্জার ছোট বোন এবং কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাতের মা। তাহেরা বেগমের (৬৯) কাদের মির্জার বড় বোন এবং  কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশীদ মঞ্জুর মা।

সেতুমন্ত্রীর ছোট বোন রোকেয়া বেগম অভিযোগ করেন, মির্জার গুন্ডা বাহিনী এই হামলা করেছে। আর কে আছে কোম্পানীগঞ্জে, সেতো এখন গডফাদার। পুলিশ তাকে পটেকশান দিচ্ছে, সে বিশাল ক্ষমতাধর। মির্জার গুন্ডা বাহিনী বাসায় হামলা করে আমার ছেলে রাহাতকে খুঁজতে থাকে। আমি তাদেরকে বলি আমি মন্ত্রীকে ফোন দিচ্ছি তারা বলে মন্ত্রী কি  করবে। তোর ছেলেকে বাহির করিদে তখন দেখবি,এখন কি করি। এ সময় হামলাকারীরা বাসায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।

সেতুমন্ত্রীর ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাত অভিযোগ করেন, কোম্পানীগঞ্জে আ’লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বিবদমান দ্বন্দ্বের জেরে কাদের মির্জা অনুসারী কেচ্ছা রাসেলের নেতৃত্বে আমার বাসায় হামলা করা হয়েছে। এ সময় তারা অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে।

এ বিষয়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার ফোনে যোগাযোগ করা হলে ব্যক্তিগত সহকারী সিরাজুল ফোন রিসিভ করেন। তিনি বলেন, মেয়র বিশ্রামে আছে। এ ধরনের কোন ঘটনার সাথে মেয়র অনুসারী কেউ জড়িত নয়। উনি শান্ত আছে,উনাকে উত্তেজিত করার জন্য এসব করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত (২৫ এপ্রিল) রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আরেক ছোট বোন তাহেরা বেগমের (৬৯) বসুরহাট পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের কোর্ট বিল্ডিং সংলগ্ন বাসায় ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সকালে পুলিশ অবিস্ফোরিত ৬টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে বালতির পানিতে ডুবিয়ে নিস্ক্রিয় করে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x