ডেলটা বা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতেও। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী এক সপ্তাহেই ঢাকা মেডিকেলের কোভিড ইউনিটে আর রোগী ভর্তি নেওয়া সম্ভব হবে না। সংক্রমণের লাগাম টানতে এলাকাভিত্তিক লকডাউনকেই ভালো উপায় বলছে আইইডিসিআর। তবে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার প্রস্তুতিও সমানতালে বাড়ানোর তাগিদ দেন বিশেষজ্ঞরা।
আট থেকে ১০ দিনের মধ্যে হাসপাতাল ভরে যাবে। তখন আমরা আর হাসপাতালে জায়গা দিতে পারব না। এই যে আমরা সামনে একটা পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি সেটা ভয়াবহ।
ভাইরাস তার নিজস্ব ধরন অনুসারে পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে নিজের রূপ বদলায়। এরই ধরাবাহিকতায় কোভিড ১৯ যুক্তরাজ্যে আলফা, দক্ষিণ আফ্রিকায় বিটা, ব্রাজিলে গামা আর ভারতে ডেলটা ভ্যারিয়েন্টে রূপান্তরিত হয়েছে। আর এদেশে সীমান্ত এলাকায় দাপিয়ে বেড়িয়ে ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট এখন দখল নিচ্ছে গোটা দেশ।
এর প্রভাবে রাজশাহী, খুলনার পরে এবার এগিয়েছে রাজধানীর দিকে। দুই সপ্তাহে আগেই যেখানে ঢাকা মেডিকেলে ১০ থেকে ২০ জন কোভিড রোগী আসতো। চলতি সপ্তাহে সেই সংখ্যা ৩০ থেকে ৩৫শে দাঁড়িয়েছে। চাপ বাড়ছে রাজধানীর অন্যান্য কোভিড হাসপাতালেও।
এরই মধ্যে স্থানীয়ভাবে লকডাউন হয়েছে বেশ কিছু এলাকা। ঢাকায় সংক্রমণ রোধে বন্ধ রাখা হয়েছে দূরপাল্লার সব যান। সংক্রমণের চেইন ভেঙে ফেলতে এ লকডাউনই উত্তম পথ বলে জানায় আইইডিসিআর।
ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ৩৬ থেকে ৪০ জন করে রোগী যদি ভর্তি হয় আট থেকে ১০ দিনের মধ্যে হাসপাতাল ভরে যাবে। তখন আমরা আর হাসপাতালে জায়গা দিতে পারব না। এই যে আমরা সামনে একটা পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি সেটা ভয়াবহ।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এসএম আলমগীর বলেন, যত বেশি ট্রান্সমিশনে ভাইরাস থাকবে ততবেশি রূপ বদলাবে। যে কোনো লকডাউনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ট্রান্সমিশন সাইকেলটাকে ব্রেক করা। এটার চেষ্টা করা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গাতে। আর এটা অন্যতম পন্থা।
পাশাপাশি টেস্ট, আইসোলেশন আর হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ দেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রিদওয়ান উর রহমান।
তিনি বলেন, টেস্ট আর আইসেলেশন বাড়াতে হবে। আর পাশাপাশি লকডাউন রাখতে হবে। একসঙ্গে অনেক রোগী হবে সেটা ঠোকানোর মতো অবস্থা আমাদের হাসপাতালে নেই।
একইসঙ্গে টিকাদান কর্মসূচিকে আরও গতিশীল কারার পরামর্শ তাদের।