ঢাকা, শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৮ অপরাহ্ন
হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য হারিকেন, কেরোসিন বাতির ল্যাম্প
মোঃ মনিরুল ইসলাম পাইকগাছা

এক সময় প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শহর ঘুটঘুটে কালো অন্ধকার নিবারণের প্রধান উপকরণ ছিল কেরোসিন তেলের ল্যাম্প অনেকে যাকে কুপিবাতি হিসাবে চেনেন আর ছিল হারিকেন। সেই গ্রাম বাংলার কেরোসিন শিখার কুপিবাতি ও হারিকেনের দম্ভ ও অহংকার বিদ্যুতের ছোঁয়ায় আজ ভেঙ্গে চুরমার। এখন শুধুই স্মৃতি। কালের আবর্তে ইতিহাস ঐতিহ্যের স্রোতধারায় মরতে বসেছে ওই কুপিবাতি ও হারিকেন। আর এ শিল্পের সাথে জড়িত কারিগররাও এখন এ পেশা ছাড়তে শুরু করেছে।

আধুনিকতার পদভারে বিজলি বাতির দাপটে বর্তমান সময়ে কেরোসিন যুগের বিলুপ্তিতে গ্রামীণ ঐতিহ্য কুপিবাতি ও হারিকেনের প্রয়োজন ফুরিয়ে এসেছে। এইতো কয়েক বছর আগের কথা সন্ধ্যা হলেই গ্রাম ও গ্রাম্য বাজারে কুপি ও হারিকেনের মিটিমিটি আলোয় চেনা যেত হাট-বাজারসহ গ্রামের সেই চিরচেনা রুপ। বর্তমানে পাল্টে যাওয়া এক সভ্যতায় বৈদ্যুতিক বাতির আলোর ঝলকানিতে কুপি বাতি ও হারিকেনের স্থান দখল করে নিয়েছে বাহারী বৈদ্যুতিক বাল্ব,সোলার, আইপিএস, চার্জার লাইট, টর্চ লাইট, মোবাইল লাইটসহ আরো কত কি। ফলে দশ গ্রামে আর চোখে পড়ে না গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী কেরোসিন শিখার এই নিদর্শটি। বর্তমানে এটি শুধুই স্মৃতি।

এ যুগের গ্রাম গঞ্জের ছেলে মেয়েদের কাছে কুপিবাতি ও হারিকেনের স্মৃতি এখন রুপকথার গল্প। ইদানীং কালে গ্রামের দাদী তার নাতনিকে হারিকেন ও কুপিবাতির গল্প শোনাতেও লক্ষ করা গেছে। বর্তমানে এই নিদর্শনটির কদর অন্য কারো কাছে না থাকলেও প্রযুক্তির এই যুগেও রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পীরগাছা গ্রামের জেহের উদ্দিন এর বাড়িতে দেখা মেলে বাতির’। আজও তার বাড়িতে নেই বৈদ্যুতিক সংযোগ। তিন কন্যা সন্তানের জনক জেহের উদ্দিনের বাড়িতে রান্না,খাওয়া ও সন্তানদের লেখাপড়ার মত গুরুত্বপূর্ণ কাজটিও হচ্ছে কেরোসিন কুপিতে।

বর্তমানে গ্রামের অনেক নিম্নআয়ের সৌখিনমানুষ সযত্নে বিভিন্ন রকমের কুপিবাতি ও হারিকেন শখের বসে সংরক্ষণ করেছেন নিদর্শন হিসেবে। তৎকালীন সময়ে ছোট বড় দু’ধরণের কুপিবাতির ব্যবহার ছিল। মাটি, লোহা, কাচ, টিন, পিতল আর বড় ছিল টিনের তৈরি ভুটুয়া। আবার গ্রামাঞ্চলে এই কুপিবাতি অনেকের নিকট ন্যাম্পো হিসেবে পরিচিত ছিল। ছোট ও বড় কুপিবাতি থেকে বেশি আলো পাওয়ার জন্য কাঠ,লোহা বা বাঁশের তৈরি স্ট্যান্ড ব্যবহার করা হতো। আর হারিকেনের আলো বেশী পেতে উচু জায়গায় বেধে ঝুলিয়ে রাখা হতো।

কিন্তুু বর্তমান সময়ে শতভাগ বিদ্যুৎতায়িত হওয়ায় আবহমান গ্রাম বাংলার আপামর জনসাধারণের অন্ধকারে আলো দেওয়া কুপিবাতি ও হারিকেন বিলুপ্তির পথে। আর নতুন প্রজন্মকে দেখতে হলে যেতে হবে জাদুঘরে।

2 responses to “হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য হারিকেন, কেরোসিন বাতির ল্যাম্প”

  1. 토렌트 says:

    … [Trackback]

    […] Info to that Topic: doinikdak.com/news/25844 […]

  2. … [Trackback]

    […] Find More on that Topic: doinikdak.com/news/25844 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x