ঢাকা, শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ০৪:০৪ অপরাহ্ন
কাবুল বিমানবন্দরে রকেট হামলার দায় স্বীকার আইএসের
অনলাইন ডেস্ক

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোমবারের রকেট হামলার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগান অনুসারী ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রোভিন্স (আইএস-কে)। আইএসের টেলিগ্রাম চ্যানেল নাশের নিউজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই দায় স্বীকার করা হয়েছে।

আরও হামলা এবং সহিংসতার আশঙ্কায় আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা যখন সৈন্য পুরোপুরি প্রত্যাহারের শেষ পর্যায়ে রয়েছে, তখন সোমবার সকালের দিকে কাবুলের বিমানবন্দর লক্ষ্য করে রকেট হামলা হয়। তবে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা   ধেয়ে আসা ৫টি রকেট অকার্যকর করেছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।

বিমানবন্দরের উত্তর দিক থেকে এসব রকেট ছোড়া হয়েছে বলে মার্কিন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হামলায় কোনও  হতাহত হয়নি। এদিকে, হামলার কয়েক ঘণ্টা পর আইএসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় খিলাফতের সৈনিকরা কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ছয়টি কাতিউশা রকেট নিক্ষেপ করেছে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) কাবুল বিমাবনবন্দর এলাকায় পর পর দু’টি আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়। বোমা হামলার পর গুলিবর্ষণও করে সন্ত্রাসীরা। ভয়াবহ সেই হামলায় এখন পর্যন্ত ১৭০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ১৩ জন মার্কিন সেনা সদস্য এবং বাকিরা সবাই বেসামরিক আফগান নাগরিক।

রোববার কাবুলে আইএসের আত্মঘাতী এক হামলাকারীকে লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় এক পরিবারের ছয় শিশুসহ অন্তত ১০ জনের প্রাণহানি ঘটে। ইসলামিক স্টেটের এক আত্মঘাতী হামলাকারী বিমানবন্দরে হামলার চেষ্টা করায় তাকে টার্গেট করে ড্রোন ছোড়া হয় বলে দাবি করেছে পেন্টাগন। তবে ভুল নিশানায় ড্রোনের আঘাতে শিশুসহ ১০ জনের প্রাণহানির ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠায় এই ঘটনা তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সৈন্য পুরোপুরি প্রত্যাহার ৩১ আগস্টের মধ্যে শেষ হবে বলে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন গত এপ্রিলে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে আল-কায়েদার জঙ্গি হামলার পর আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক বাহিনী অভিযান শুরু করে। ২০ বছরের সেই আফগান যুদ্ধের অবসানে আগামীকাল দেশটি থেকে সব বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহারের কথা রয়েছে।

মার্কিন অভিযানে ২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যুত ইসলামি কট্টরপন্থী গোষ্ঠী তালেবান আবারও ক্ষমতায় ফিরেছে গত ১৫ আগস্ট। তালেবানের শাসনের ভয়ে হাজার হাজার আফগান দেশ ছেড়ে পালাতে মরিয়া হয়ে বিমানবন্দরে ভিড় করছেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আফগানিস্তানে তাদের সহযোগীদের সরিয়ে নিচ্ছে।

 

যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সামরিক বাহিনী এখন পর্যন্ত কাবুল থেকে এক লাখ ২২ হাজারের বেশি আফগানকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে। মঙ্গলবার উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘটবে এবং শেষ ফ্লাইটে আমেরিকার কয়েক হাজার সৈন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কাবুল ছাড়বে।

শেষ মুহূর্তে এসে মার্কিন সামরিক বাহিনী এখন নিজেদের এবং আমেরিকান কূটনীতিকদের নিরাপদে কাবুলের বাইরে নিয়ে যাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করেছে।

সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x