করোনা টিকার তৃতীয় ডোজও দেবে জার্মানিসহ ৯ দেশ
করোনায় বেশি উপসর্গ হতে পারে এমন ব্যক্তিদের করোনা টিকার তৃতীয় বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে। সোমবার এমনটাই ঘোষণা করেছে জার্মানি। তবে জার্মানিই প্রথম নয়।
করোনা টিকার তৃতীয় ডোজও দেবে জার্মানিসহ ৯ দেশ
জনগণের জন্য তৃতীয় ডোজ ঘোষণা করা দেশের তালিকায় জার্মানি নবম। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগের জেরেই এই সিদ্ধান্ত।
ইসরায়েল ইতিমধ্যেই ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের বুস্টার দেওয়া শুরু করেছে। সেপ্টেম্বর থেকে জার্মানি এবং ব্রিটেনও থার্ড ডোজ শুরু করবে। ফাইজার বা মডার্নার বুস্টার ডোজ দেবে জার্মানি। কিন্তু বিশ্বজুড়ে যেখানে বহু মানুষ প্রথম ডোজই পাননি এখনও, সেখানে তিনটি করে ডোজ দেওয়া নিয়ে সমালোচনাও করছেন অনেকে।
ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী এখনও পর্যন্ত ৪.৫ বিলিয়ন ডোজ করোনা টিকা বণ্টন করা হয়েছে। এর একটা ছোট অংশই এখনও পর্যন্ত নিম্ন-আয়ের দেশগুলিতে গিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ। সেখানে মোট জনসংখ্যার ৬০%-এর জন্য যথেষ্ট পরিমাণে টিকা পৌঁছেছে বা রয়েছে। এদিকে চতুর্থ বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়া। সেখানে মোট জনসংখ্যার মাত্র ২৬%-কে দেওয়ার মতো টিকা পৌঁছেছে। এই সংখ্যা মাত্র ৩% মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকায়। সাব-সাহারান আফ্রিকায় ১.২%।
এদিকে করোনা টিকা কার্যক্রমে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত টিকার আওতায় আনা হয়েছে ১ কোটির বেশি মানুষকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানা যায়, এ পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৯ হাজার ৯৯৩ জনকে। যাদের ৪৪ লাখ ১৬ হাজার ১৩১ জন পেয়েছেন দ্বিতীয় ডোজও।
তবে চলতি বছরের মধ্যে দেশের ৪০ শতাংশ নাগরিককে কোভিড-১৯ টিকার দুটি ডোজ দেওয়া সম্পন্ন করতে যে হারে টিকা প্রয়োগের প্রয়োজন, তা থেকে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০২২ সালের মধ্যে দেশের ৬০ শতাংশকে টিকাদানের ক্ষেত্রেও অনেক পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে আছে দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশ। সেগুলো হল- ভুটানে শূন্য দশমিক ০৪ শতাংশ, মালদ্বীপে শূন্য দশমিক ০৮ শতাংশ, আফগানিস্তানে শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ।
উন্নয়নশীল বিশ্বে টিকাদান পর্যবেক্ষণে আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাংক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত টাস্ক ফোর্সের প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। তবে ভুটান ও মালদ্বীপ উভয় দেশেই বাংলাদেশের তুলনায় জনসংখ্যার অনুপাত অনেক কম। সে হিসেবে এই দু’টি দেশ তাদের মোট জনগোষ্ঠীর বড় অংশকে টিকা দিয়ে ফেলেছে।
সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশে ৪০ শতাংশ নাগরিককে টিকা দিতে ১৩ কোটি ১৮ লাখ ডোজ টিকা লাগবে। আর ৬০ শতাংশকে টিকা দিতে লাগবে প্রায় ২০ কোটি ডোজ টিকা।
টাস্ক ফোর্স বলছে, যদি এই বছরের মধ্যে ৪০ শতাংশ মানুষকে টিকাদান সম্পন্ন করতে হয়, তবে বাংলাদেশকে দিনে শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ হারে টিকা দিতে হবে। আর ২০২০ সালের মাঝামাঝিতে ৬০ শতাংশকে টিকা দিতে হলে দিনে শূন্য দশমিক ৩৫ শতাংশ হারে টিকা দিতে হবে।টাস্ক ফোর্সের ধারণা, বাংলাদেশ এখন যে হারে টিকা দিচ্ছে, তাতে এই বছর মাত্র ১৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে।
ক’দিন আগে জাপান থেকে কোভ্যাক্সের অধীনে দ্বিতীয় চালানে ৭ লাখ ৮১ হাজার ৩২০ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট (এসআইআই) থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ১.২ কোটি ডোজ পেয়েছে।
উল্লেখিত অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশের পক্ষে শতভাগ টিকা প্রদানের লক্ষ্য অর্জন করা কষ্টসাধ্য হবে। উন্নয়নশীল ও জনসংখ্যা বহুল দেশগুলোর প্রয়োজনীয় টিকা পাওয়ার অনিশ্চয়তার মধ্যে উন্নত দেশগুলোর তৃতীয় বুস্টার ডোজ দেয়ার এই সিদ্ধান্ত প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা।
… [Trackback]
[…] Find More here to that Topic: doinikdak.com/news/44037 […]
… [Trackback]
[…] Read More Info here to that Topic: doinikdak.com/news/44037 […]
… [Trackback]
[…] Read More on on that Topic: doinikdak.com/news/44037 […]