সড়ক ও মহাসড়কের উন্নয়নে ৩টি পৃথক প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯৮ কোটি ৬০ লাখ ৭৩ হাজার ৬৩৯ টাকা।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল সভায় ক্রয় প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আজ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১২তম এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১৪তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ২টি এবং ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ৮টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।
এর মধ্যে ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে উপস্থাপিত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ৪টি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ১টি, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ১টি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১টি এবং সেতু বিভাগের ১টি প্রস্তাব ছিল। এর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি ক্রয় প্রস্তাবে কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়নি।
এছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদপ্তর অপর একটি প্রস্তাবে পুনঃদরপত্রের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ অনুমোদিত ৬টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ৫৬৬ কোটি ৭১ লাখ ৭৯ হাজার ১৬০ টাকা।
এসময় মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার বলেন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক ‘শরীয়তপুর (মনোহর বাজার)-ইব্রাহিমপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের প্যাকেজ নং-ডব্লিউপি-২ এর পূর্ত কাজের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। কাজটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে রিলায়েবল বিল্ডার্স লিমিটেড, এমডি ময়েনউদ্দিন (বাঁশি) লিমিটেড এবং ওরিয়েন্ট ট্রেডিং অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেড। প্রকল্পে ব্যয় হবে ১০৩ কোটি ৩৭ লাখ ৪৪ হাজার ৩৬ টাকা।
তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক ‘শরীয়তপুর (মনোহর বাজার)-ইব্রাহিমপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের প্যাকেজ নং-ডব্লিউপি-০৩ এর পূর্ত কাজ যৌথভাবে এমডি বদরুল ইকবাল লিমিটেড, হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড এবং ওয়েস্টার কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ১০৬ কোটি ৮৪ লাখ ৭০ হাজার ৯১৫ টাকা।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক ‘আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ক চারলেনে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের প্যাকেজ নং ডব্লিউপি-০৩ এর পূর্ত কাজ সম্পাদন এবং রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ভারতের আফকন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের দরপত্রে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৭৮৮ কোটি ৩৮ লাখ ৫৮ হাজার ৬৮৮ টাকা।
বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক মেসার্স পি কে এগ্রি লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি টন চালের দাম পড়বে ৪১১ দশমিক ৯৩ ডলার। এতে মোট ব্যয় হবে ১৭৪ কোটি ৬৫ লাখ ৮৩ হাজার ২০০ টাকা।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের খাদ্য মন্ত্রণালয় কৃষি মন্ত্রণালয়কে সাথে নিয়ে একদম ইন্টিগ্রিটেড ওয়েতে দেখে, কী পরিমাণ চাল দরকার। এগুলো নির্ধারণ হয় আমাদের প্রয়োজন এবং আমাদের আগামীর প্রয়োজন। আমাদের নেক্সট ফসল কখন আসবে, সেটাকে মাথায় রেখে আমাদের কাজটি করতে হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা বেশি চাল কিনবো না, বেশি কিনলে আমাদের কৃষক সম্প্রদায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার গমও বাড়তি কিনব না, যাতে আমাদের ভোক্তাদের সাফার (ভুগতে) করতে না হয়। এই দুইয়ের সমন্বয়ে আমরা কাজগুলো করে থাকি।