ভাস্কর সরকার (রাবি প্রতিনিধি): সমগ্র বিশ্বে নভেল করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রকোপ শুরুর পর বাংলাদেশও এর আক্রমন থেকে বাদ পড়েনি ৷ এমতাবস্থায় গতবছর ১৭ মার্চ ২০২০ সালে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক যোগে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কয়েক মাস পর টিভিতে ও অলাইনে ডিজিটাল ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ক্লাস শুরু হলেও শতভাগ সকল শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি।
স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরের ক্লাসে উঠেছেন পরীক্ষা ছাড়াই। আর অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসি ও সমমানের ফলফলের ভিত্তিতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল ঢালাও ভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অটো পাশ কিংবা পরবর্তী ইয়ারে উত্তির্ণের ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি কিংবা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোনো সিদ্ধান্তে উপনিত হতে পারেনি ৷ স্বায়ত্তশাসিত অর্থ ‘এর স্বায়ত্তশাসন আছে’। এছাড়াও, কাজের জগতে প্রয়োগ, এর অর্থ এটি স্বনির্ভর। বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসন এটি অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত নীতিগুলির মধ্যে একটি। এটি প্রকাশ করে যে সাংগঠনিক এবং পরিচালনার দিকগুলি অন্যান্য সংস্থা এবং সত্তাগুলির থেকে স্বাধীনভাবে পরিচালিত হবে ৷ সেক্ষেত্রেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ক্লাস পরিক্ষা নেয়ার ব্যাপারে স্বাধীন কোনো সিদ্ধান্ত আজ পর্যন্ত নিতে পারেনি ৷
দীর্ঘ দিন এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশুনায় অনীহা, বাড়িতে হতাশাগ্রস্থ হয়ে বসে থাকা, কেউ জীবিকার তাগিদে বইপত্র ত্যাগ করে কর্ম গ্রহণ, নারী শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ বিবাহ করে সংসার জীবনে পদার্পণ ইত্যাদি সহো ছাত্ররা মেরুদণ্ডহীন শিক্ষা বিমুখ একটা জাতিতে পরিণত হয়েছে ৷
এমতাবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে আগামী ২৪ তারিখ থেকে আন্দোলনে যাচ্ছে রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। আগামী ২৪ মে সকাল ১১ টায় বিক্ষোভ কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন শুরু হবে তারা জানায়। কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য চলছে প্রস্তুতি।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ইউনিটি তৈরি করে রাজশাহী শহরের জিরো পয়েন্টে সকাল ১১টায় উপস্থিত হওয়ার জন্য জোর প্রচারণা চালাচ্ছে ৷
শিক্ষার্থীরা ক্ষোভের সাথে বলেন, বর্তমানে আমাদের শিক্ষক সমাজের শিক্ষকসুলভ আচরন বিলুপ্তপ্রায়। মহামারীর কারনে গত দেড় বছর ধরে সকল ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কবে খুলবে এর কোন নিশ্চয়তা নাই। অথচ দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কুফল নিয়ে কোন শিক্ষককেই কোন প্রকার কথা বলতে দেখলাম না। এতোদিন আমরা জানতাম আমাদের শিক্ষকরা শিক্ষকতা করেন, এখন দেখি আসলে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে চাকরি করেন। আমাদের লেখাাপড়া বন্ধ থাকলে তাদের কি আসে যায়, মাস শেষে বেতন তো ঠিকই পাচ্ছে। যদি কয়েকমাস পড়ালেখার পাশাপাশি বেতন বন্ধ থাকত, ঠিকই শিক্ষকরা ব্যানার হাতে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে যেত। এখন তো মাথা আমাদের তাই ব্যাথাও আমাদের। এ মাসের শেষে বিশ্ববিদ্যালয় না খুললে আমরাও কঠোর হুশিয়ারি দিব ৷
আমাদের হতাশার প্রতিটি নিঃশ্বাস অবশ্যই আঘাত হানবে নীতি নির্ধারকদের মূল্যবোধে ৷
… [Trackback]
[…] Info on that Topic: doinikdak.com/news/17739 […]
… [Trackback]
[…] Info to that Topic: doinikdak.com/news/17739 […]