ঢাকা, শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২০ পূর্বাহ্ন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে প্রস্তুত পরিবার, অনুমতির অপেক্ষা
Reporter Name

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতে বিমান ভাড়াসহ পাসপোর্ট নবায়ন, ভিসাসহ আনুষঙ্গিক কাজ দ্রুত শেষ করা হচ্ছে। পরিবারের সদস্যরা তাকে যুক্তরাজ্যে নিতে চান। সরকারের অনুমতি পেলেই আজ-কালের মধ্যেই সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশে নেওয়া হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছেন।

বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পোস্ট কোভিডসহ নানা জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় ‘মানবিক’ কারণে তিনি এ আহ্বান জানান। খালেদা জিয়া কখন যাবেন, প্রস্তুতি চলছে কিনা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, চেয়ারপারসনের বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি তার পরিবার দেখছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে মেডিকেল বোর্ড হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে বৈঠক করে। এতে উপস্থিত একজন চিকিৎসক গণমাধ্যমকে জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো-এটা কোনভাবেই বলা যাবে না। আগে যেখানে প্রতিদিন দুই লিটার অক্সিজেন লাগতো, এখন সেখানে তিন লিটার  লাগছে। কখনো চার লিটার পর্যন্ত লাগছে। তার এক্স-রে রিপোর্ট ভালো আসেনি। এছাড়া অন্যান্য রিপোর্টও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সেসব রিপোর্টও খুব বেশি ভালো নয়। ডায়াবেটিস এখনো অনিয়ন্ত্রিত।

বেগম খালেদা জিয়ার করোনা নেগেটিভ এসেছে কি না সে বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, করোনা রোগীর ১৪ দিন অতিক্রম হলে তার রিপোর্টকে নেগেটিভ ধরা হয়। কিন্তু খালেদা জিয়া এখন পোস্ট কোভিড জটিলতায় বেশি ভুগছেন। বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন,‌ ‌’খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখন ভালো না। এ অবস্থায়  বেশি দুরত্বের জার্নি না করার সুপারিশ করেছেন তারা। বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে মেডিকেল বোর্ডের কোন চিকিৎককে নেয়ার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওই চিকিৎসক জানান, সাধারণত যে দেশের হাসপাতালে রোগী নেওয়া হয় সেখানকার চিকিৎসক এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দায়িত্ব পালন করেন। এরপরও খালেদা জিয়ার সাথে মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক যেতে পারেন।

জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সরকার ইতিবাচক। বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদেশে নেওয়ার আবেদন পর্যালোচনা করে ‘যত দ্রুত সম্ভব’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতামত পাঠানো হবে।

বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার লিখিত আবেদনটি ভাই শামীম এস্কান্দার বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডি বাসায় নিয়ে যান। পরে রাতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে আবেদনটি মতামতের জন্য আইন সচিবের কাছে পাঠানো হয়।

সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সরকারের নির্বাহী আদেশে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায়  খালেদা জিয়ার সাজা ও দণ্ডাদেশ স্থগিত করা হয়েছিল। এখানে দুটি নির্দিষ্ট শর্ত দেওয়া ছিল। সেই শর্তে বলা হয়েছিল, মুক্ত থাকার সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। শর্তগুলি মেনে তারা স্থগিতাদেশ গ্রহণ করেছিলেন এবং খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেছিলেন। এখন আদালতের কিছু করার নেই। এখন দেখতে হবে ৪০১ ধারায় যখন আমরা কার্যসম্পাদন করে দিয়েছি; সেক্ষেত্রে এ শর্তগুলি শিথিল করার কোনো সুযোগ আছে কিনা। আবেদন দেখে খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন কিনা সেটা পর্যালোচনা করে মতামত দেওয়া হবে। সুত্র

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x