বাংলাদেশে কোনো ব্যক্তির করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার আনুষ্ঠানিক খবর এসেছিল গত বছরের ৮ মার্চ। তারপর থেকে আমরা প্রতিদিনই আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে দেখেছি। তার প্রায় চার মাস পর গত ২ জুলাই শনাক্তের সংখ্যা রেকর্ড করে সর্বোচ্চ অঙ্কে পৌঁছে যায়। সেদিন শনাক্ত হয় ৪ হাজার ১৯ জন। যদিও তার দুইদিন আগে ২৯ জুন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৪ জন এবং ১৭ জুন তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮ জন শনাক্ত হওয়ার খবর জানতে পারে দেশবাসী।ৎ
এই পরিসংখ্যান থেকে আমরা একটা চিত্র দেখতে পাচ্ছি, সেটা হলো প্রথম শনাক্তের পর চার মাস লেগেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ সংখ্যায় পৌঁছুতে। তারপর থেকে আস্তে আস্তে রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করে। এমনকি এই মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত তা প্রায় ৩ শতাংশে নেমে এসেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরু থেকেই তা বাড়তে থাকে। আজকে তা ৩ হাজার ৯০৪ জনে পৌঁছে গেছে। যা চতুর্থ সর্বোচ্চ।
তার মনে দাঁড়াচ্ছে ৭ মার্চ শনাক্তের যে সংখ্যা ছিল ৬০৬ জন, মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে তা গিয়ে পৌঁছালো ৩ হাজার ৯০৪ জনে। আমাদের প্রশ্ন এখনই যদি এমন পরিস্থিতি হয়; তাহলে জুন-জুলাই মাসে দেশে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? সেটা ভেবেই আমরা শঙ্কিত হচ্ছি। বিশেষ করে এই পরিস্থিতির মধ্যেও মানুষ যখন লাগাম ছাড়া চলাচল করছে।
আমরা এরই মধ্যে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জেনেছি, বাংলাদেশে করোনাভাইরসা ইউরোপ বা আমেরিকার মতো শীতে বৃদ্ধি পায়নি। বেড়েছে গরমের সময়। গত কয়েকদিনের পরিসংখ্যান দেখে নিশ্চিত করেই বলা যায় শনাক্তের সংখ্যা সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়বে।
এমন অবস্থায় আমাদের করণীয় কি? চিকিৎসকরা বারবার একটা কথাই বলছেন, আমরা প্রত্যেকেই যেন সেই আগের মত মাস্ক ব্যবহার করি এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করি। এছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে হাট-বাজার, দোকানপাট-গণপরিবহনে মাস্ক পরতেই হবে।
আমরা মনে করি, পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগে সরকারকে আবার কঠোর অবস্থানে যেতেই হবে। বিশেষ করে যারা মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা-সহ শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। হাট-বাজার, দোকানপাট-গণপরিবহন ব্যবহারে লাগাম টানতে হবে। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে ঘরের বাইরে আসা বন্ধ করার এখনই সময়। অর্থাৎ ভিড় বন্ধ করতেই হবে।
তা না হলে আরও খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে পুরো জাতিকে। তাই আর কোনোভাবেই সময়ক্ষেপণ নয়, বাস্তবতা মেনে উদ্যোগ নিতে হবে। আর তা এখনই। নিউজ সোর্সঃ তাহলে কী আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে?