ঢাকা, শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ পূর্বাহ্ন
খাদ্য সংকট এড়াতে প্রতিকূল আবহাওয়াতেও ধান রোপণ করছে ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা
মোঃ জাহিদ হাসান মিলু, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:
উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও কৃষি প্রধান জেলা। জেলায় কৃষি আবাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান ফসল হলো আমন ধান। এবার প্রতিকূল আবহাওয়া ও সারের দামের জন্য আমন ধান রোপণে হতাশায় ও বিপাকে পড়েছেন ঠাকুরগাঁও এর কৃষকরা। অন্যান্য বার এ জেলায় বর্ষা মৌসুমে প্রাকৃতিকভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টি হলেও এবার আর তার দেখা নেই। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকা সত্যেও করোনাকালে দেশে খাদ্যের চাহিদা পূরণ করতেই কষ্ট করে হলেও কৃষকরা শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিয়ে রোপণ করছেন আমন ধান।
জেলায় মোট ১ লক্ষ ৭৬ হাজার হেক্টর আবাদি জমির মধ্যে আমন ধান রোপণ করা হয় ১ লক্ষ ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে। তাই এই জেলার প্রধান ফসল হিসেবে ধরা হয় আমন ধানকে।
গত বেশ কয়েক দিনে জেলায় দেখা যায়, শ্রাবণ মাসের অর্ধেক সময় পেরিয়ে গেলেও দেখা মেলেনি স্বাভাবিক বৃষ্টির। বৃষ্টির অভাবে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত মেশিনের মাধ্যমে জমিতে সেচ দিয়ে ধানের চারা রোপন করতে দেখা যায়। পরিমাণ মতো আকাশের বৃষ্টি না হওয়ার ফলে সবেমাত্র ধানের চারা লাগানোর কয়েক দিনের মধ্যেই জমি ফেটে হয়েছে চৌচির। সেচ দিয়ে ধান লাগানো হলেও কয়েক দিন পরেই জমিতে পড়ছে পানির টান। এতে রোদে লালচে হয়ে যাচ্ছে ধানের গাছ। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না হলে ক্ষেতে সেচ, আগাছা পরিষ্কার, রোগ ও পোকার আক্রমণ রোধে কৃষকদের গুণতে হবে বাড়তি খরচ। এ নিয়ে হতাশায় ও বিপাকে পড়েছেন, জেলার অন্যান্য উপজেলার থেকে সদর উপজেলার কৃষকরা বেশি।
কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, গতবার আমাদের এই দিকে এতো পানি হয়েছিল যে, ধানের গাছ পানিতে ডুবে যাচ্ছিল। আর এবার এমন প্রচন্ড রোদ মাটি থেকে ধুলা উড়ছে।
সদর উপজেলার ১০ নং জামালপুর ইউনিয়নের পারপূগী গ্রামের কৃষক মনছুর ও দবিরুল ইসলাম বলেন, মেশিনের পানি দিয়ে রোপা লাগাচ্ছি। কাজের লোক-জন পাওয়া যায় না। পর্যাপ্ত সারও পাওয়া যায় না। অল্প-স্বল্প সার দিয়ে রোপা লাগাচ্ছি। ধানের ফলন কেমন হবে আল্লাহই ভালো জানে। এভাবে কি করবো না করবো ভাবেই পাই না আমরা।
একই এলাকার কৃষক মুসলিম উদ্দীন বলেন, শ্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। সার পাওয়া যাচ্ছেনা। সারের দাম বেশি। এমন বিভিন্ন ধরণের সমস্যা। বিশেষ করে করোনাকালে যাতে দেশে খাদ্যের সংকট না হয় তাই কষ্ট হলেও ধান লাগাচ্ছি। সরকার যেন অন্তত সারের দামটা নিয়ন্ত্রণে রাখে ও বরেন্দ্রর ডিপ টিউবওয়েল এর মাধ্যমে সেচের সুবিধা করে দেয় তাহলে ভালো হয়।
এছাড়াও পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষক, রবিউল ইসলাম বলেন, এমনিতে পানির অভাব অন্যদিকে সারের দাম বেশি। তাও আবার সার ঠিকভাবে পাওয়া যায় না। সরকার নির্ধারিত সারের মূল্যের থেকেও দাম বেশি নিচ্ছেন সার বিক্রেতারা। এমনকি দোকান থেকে ক্রয়কৃত সারের রশিদ চাইলেই তখন দোকানদাররা বলে সার নাই। কিভাবে আমরা কৃষি করবো।
জেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর জেলায় ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১ লক্ষ ১০ হাজার ৩শ ৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপন সম্পূর্ন করা হয়েছে। যা লক্ষমাত্রা ৮১% (একাশি পারসেন্ট)  বা ৮১ ভাগ এবং উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লক্ষ ৩১ হাজার মেট্রিক টন ধান। এছাড়াও সেচ ব্যবস্থার জন্য জেলায় প্রায় ১৪ শ গভীর নলকূপ আছে তার মধ্যে প্রায় ৯শ ৫০টি গভীর নলকূপ সচল আছে আমন ধান রোপন ও ক্ষেতে সেচ ব্যবস্থার জন্য ।
এছাড়াও কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় এখন পর্যন্ত ইউরিয়া ১ হাজার ২শ ৮৪ মেট্রিক টন, টিএসপি ২শ ৯৭ মেট্রিক টন, ডিএপি ৫শ ৭৯ মেট্রিক টন, এমওপি ৫শ ৭৯ মেট্রিক টন সার মজুদ আছে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আবু হোসেন বলেন, এবার জেলায় যদিও বৃষ্টি পাতের পরিমাণ কম তারপরও আমন ধান রোপনে তেমন কোন বিঘ্ন ঘটেনি। আশা করছি এ বর্ষা মৌসুমে যথেষ্ঠ পরিমাণে বৃষ্টি হবে। বৃষ্টি হলে তেমন কোন সমস্যা হবে না। এছাড়াও তিনি সারের সংকট ও দামের বিষয়ে জানান, সার এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণে মুজদ আছে। সারের কোন সংকট আমাদের জেলায় নেই। এছাড়াও খুচরা বাজারে ইউরিয়া’র বস্তা ৮শ টাকা প্রতি কেজি ১৬ টাকা, টিএসপি’র বস্তা ১১শ টাকা প্রতি কেজি ২২ টাকা, ডিএপি’র বস্তা ৮শ টাকা প্রতি কেজি ১৬ টাকা ও এমওপি’র বস্তা ৭৫০ টাকা প্রতি কেজি ১৫ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি সারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম নেয় তাহলে কৃষকরা সেটা আমাদের অবগত করলে আমরা তৎক্ষনাত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ সারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম নিতে পারবে না।
সারের বাজার মনিটরিং এর বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, কৃষি অফিসার ও ইউএনওদের মনিটরিং জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা সার ও বীজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে সভা করেছি। এখানে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, যদি কেউ কৃত্রিমভাবে সারের সংকট তৈরী করে বা করার চেষ্টা করে তাহলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। এছাড়াও কৃষকরা যাতে কোনোভাবে হয়রানির স্বীকার না হয় সে ব্যপারে আমরা আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

9 responses to “খাদ্য সংকট এড়াতে প্রতিকূল আবহাওয়াতেও ধান রোপণ করছে ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা”

  1. Lnuapj says:

    purchase lasuna for sale – himcolin without prescription purchase himcolin generic

  2. Rxrcgc says:

    buy generic besivance online – sildamax online buy purchase sildamax pill

  3. Tggbns says:

    gabapentin sale – oral sulfasalazine order sulfasalazine 500 mg pills

  4. Lndmuh says:

    purchase benemid online – etodolac usa order generic carbamazepine 200mg

  5. Qcjwrg says:

    order celecoxib 100mg sale – order flavoxate for sale indomethacin 75mg ca

  6. Bqkczw says:

    buy colospa without prescription – mebeverine where to buy purchase cilostazol sale

  7. Fwhdip says:

    voltaren oral – diclofenac 50mg over the counter buy aspirin 75 mg sale

  8. Jaxyci says:

    buy rumalaya generic – purchase endep pill amitriptyline for sale

  9. Erkdaw says:

    buy pyridostigmine cheap – purchase pyridostigmine generic azathioprine 50mg ca

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x