আর্থিক সুবিধা দিতে রাজি না হওয়ায় এক বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতীয় বানিয়ে জেলে পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিয়ারত হোসেনের বিরুদ্ধে। পরে তাঁকে তাৎক্ষণিক বদলি (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়েছে। আজ শনিবার তিনি নতুন কর্মস্থল সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানায় যোগ দিয়েছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রশান্ত হালদারের ভাষ্য, এসআই জিয়ারত হোসেন ১৬ এপ্রিল ডেমরাইল গ্রামের বাড়ি থেকে মনোরঞ্জন মণ্ডল ও তাঁর ছেলে সরোজিৎকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যান। বাবা-ছেলেকে তিনি কখনো তক্ষকের ব্যবসায়ী, কখনো মাদক ব্যবসায়ী, আবার কখনো জুয়াড়ি বলে দাবি করেন। এসআই মনোরঞ্জনকে ছেড়ে দেন। পরে একই গ্রামের দেবেন ও সুভাষকে হাতকড়া পরিয়ে সরোজিৎদের বাড়িতে নিয়ে যান এসআই জিয়ারত। এ সময় বেড়াতে আসা মনোরঞ্জনের বড় ছেলে স্বপন মণ্ডলের ভায়রা শ্যামনগর উপজেলার কাচড়াহাটি গ্রামের কমলেশ মণ্ডলকে (২৩) পাচারকারী বলে হাতকড়া পরান এসআই।
একপর্যায়ে এসআই আর্থিক সুবিধার মাধ্যমে চারজনকে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। টাকা না পেয়ে দেবেন, সুভাষ, সরোজিৎ ও কমলেশকে এবং তাঁর (ইউপি সদস্য প্রশান্ত হালদার) ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি থানায় নিয়ে যান। পরের দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দেবেনের আত্মীয় নিখিল কয়ালের মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকা পেয়ে মোটরসাইকেলসহ দেবেন, সুভাষ ও সরোজিৎকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর কমলেশকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
কমলেশের ভাই শ্যামনগর উপজেলার কাচড়াহাটি গ্রামের হরিদাস মণ্ডল বলেন, ভাইকে কালীগঞ্জ থানায় ধরে নিয়ে গেছে জানতে পেরে তিনি কয়েকজন আত্মীয়কে নিয়ে ১৭ এপ্রিল সকালে থানায় যান। তাঁরা জাতীয় পরিচয়পত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমানের কাছে দিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। রাত নয়টার দিকে তাঁরা আবারও থানায় গেলে কমলেশকে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এসআই জিয়ারত।
কমলেশের ভাইয়ের ভাষ্য, এসআই জিয়ারত মামলাটি দুর্বল ধারায় অভিযোগপত্র দেবেন আশ্বাস দিয়ে তাদের কাছে ১৫ হাজার টাকা চান। তাঁরা টাকা দিতে অসম্মতি জানিয়ে চলে আসেন। পরে তাঁরা জানতে পারেন, ২৩ বছরের কমলেশকে ৪০ বছর দেখিয়ে ভারতীয় নাগরিক বানিয়ে তাঁর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। ওই মামলার বাদী সহকারী উপপরিদর্শক জিল্লুর রহমান।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই জিয়ারত হোসেন দাবি করেন, ভারতীয় নাগরিক হিসেবে কোনো কাগজপত্র না থাকলেও মুখের কথা অনুযায়ী কমলেশকে মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার পর তাঁকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে মামলা করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমলেশ কোনো পরিচয়পত্র দেখাতে পারেননি।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হুসাইন বলেন, এসআই জিয়ারতের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তার বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে। তবে তাঁকে কী কারণে বদলি করা হয়েছে তা তিনি বলতে চাননি।
কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদি বলেন, ‘অন্যায়ভাবে কমলেশকে ভারতীয় বানিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর প্রতিকার হওয়া উচিত।
… [Trackback]
[…] Information to that Topic: doinikdak.com/news/9223 […]
… [Trackback]
[…] Find More Info here to that Topic: doinikdak.com/news/9223 […]
… [Trackback]
[…] Read More here on that Topic: doinikdak.com/news/9223 […]