আবুল কাশেম রুমন,সিলেট: নিজে জাহির করেন জনতার সম্মুখে মস্তবড় এক মানুষ হিসেবে কখনো নিজেকে আইনজীবী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী আবার কখনো অধ্যাপিকা পরিচয় দিতো। এসব পরিচয় দিয়েই প্রতারণা করাই ছিলো তার পেশা। তবে এবার নিজেকে আয়কর আইনজীবী পরিচয় দিয়ে জামিন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এক নারীর কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে বিপাকে পড়লেন লিলি। এ জন্য তাকে ধরা পড়তে হলো সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যদের হাতে।
বুধবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে আদালতপাড়ার বার হল নং-২ এর সামনে থেকে তাকে আটক করেন আইনজীবীরা। লিলি মেজরটিলায় এন.আর টাওয়ারে ৩৫/২ নং বাসায় ভাড়াটে থাকেন।অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শংকু রানী সরকার লিলি নিজেকে আয়কর আইনজীবী পরিচয় দিয়ে সিলেটে দীর্ঘ দিন থেকে আইনি সহায়তা দেয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদ পেতে নিরীহ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। গত ১ মাস আগে মিরাবাজারের গৃহকর্মী শিল্পী বেগমের অটোরিকশা চালক ছেলে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। গাড়িতে অবৈধ পণ্য পাওয়ায় তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ কারাগারে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে অন্যজনের মাধ্যমে শংকু রানী সরকার লিলির সঙ্গে পরিচয় হয় গৃহকর্মী শিল্পী বেগমের। এ সময় লিলি নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দেন এবং শিল্পী বেগমের ছেলেকে জামিন পাইয়ে দেয়ার জন্য ৪৫ হাজার টাকার চুক্তি করেন। পরে শিল্পী বেগম এক মাসে ৩-৪ কিস্তিতে ভুয়া আইনজীবী লিলিকে ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে দেন। কিন্তু লিলি মামলার শুনানির তারিখ নিয়ে নানা টালবাহানা শুরু করেন।
বুধবার শিল্পী বেগমের ছেলের মামলার আরেকটি শুনানির তারিখ ছিলো। ওই দিন জামিন পাইয়ে দেয়ার কথা চ‚ড়ান্ত করেন প্রতারক লিলি। কিন্তু বুধবারও ছেলের জামিন না হওয়ায় সিলেট বার হল নং-২ এর সামনে লিলির কাছে ৪৫ হাজার টাকা ফেরত চান শিল্পী বেগম। এতে লিলি ক্ষিপ্ত হয়ে শিল্পী বেগমকে মারধর শুরু করেন।
এ সময় ঘটনাস্থলে আইনজীবী ও লোকজন জড়ো হলে শিল্পী বেগম বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলেন। তখন আইনজীবী ও জনতা প্রতারক লিলিকে আটক করেন। এ সময় প্রতারক শংকু রানী সরকার লিলি উত্তেজিত হয়ে নিজেকে একাধারে আয়কর আইনজীবী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও বিশ্বনাথ কলেজের অধ্যাপিকা পরিচয় দেন। পরে তাকে পুলিশের ভয় দেখালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিজের ভুল শিকার করলে শংকু রানী সরকার লিলিকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়নি।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা বার আইনজীবীর সমিতির সভাপতি বলেন, আমরা প্রতারক মহিলাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করতাম। কিন্তু সে অপরাধ শিকার করে মাফ চাওয়ায় এবং ভুক্তভোগির টাকা ফেরত দেয়ার শর্তে মুচলেকা দিয়ে তাকে ছেড়ে দেই।