ঢাকা, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:১২ পূর্বাহ্ন
সুস্থ হচ্ছে ইসরায়েল, ৮১ শতাংশ টিকাকরণ
Reporter Name

গোটা পৃথিবী যখন নতুন করে ‘গৃহবন্দি’ হয়ে পড়ছে, দরজা খুলে দিচ্ছে ইসরায়েল। দেশবাসীর উদ্দেশে আজ একটি নির্দেশিকা জারি করেছে ইসরায়েল সরকার— প্রকাশ্য স্থানে আর মাস্ক পরার দরকার নেই। এত দিনের কড়া নিয়ম, কৃচ্ছ্রসাধন এবং টিকাকরণে চূড়ান্ত সাফল্যই এনে দিয়েছে এই খোলা বাতাস। তবে চূড়ান্ত সতর্কতা বজায় রাখা হচ্ছে। কারণ, বাকি পৃথিবী এখনও ‘অসুস্থ’।

এ দেশে ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স হলেই টিকা দেওয়া হচ্ছে। এই বয়সসীমায় থাকা বাসিন্দাদের মধ্যে ৮১ শতাংশেরই ফাইজ়ার-বায়োএনটেক কোভিড টিকার দু’টি ডোজ় দেওয়া হয়ে গিয়েছে। ইজ়রায়েলের মোট জনসংখ্যা ৯৩ লক্ষ। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, এর মধ্যে ৫৩ শতাংশেরও বেশি বাসিন্দার টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।

গত বছর ডিসেম্বরে সর্বপ্রথম টিকাকরণ শুরু করেছিল ব্রিটেন। প্রথম ছাড়পত্র পায় ফাইজ়ার-বায়োএনটেক জুটির কোভিড টিকা। তার পরে টিকাকরণে ছাড়পত্র দেয় আমেরিকা। এর পরপরই টিকাকরণ চালু করেছিল ইজ়রায়েল। কিন্তু বাকি দুই দেশে টিকাকরণ গতি হারালেও ইজ়রায়েল শুরু থেকেই এক নম্বরে। সবচেয়ে দ্রুত গতিতে টিকাকরণ চলেছে এ দেশে। সেই সঙ্গে কড়া করোনা-বিধি বজায় রাখা হয়েছে এত দিন। এই মুহূর্তে ইজ়রায়েলে করোনা-সংক্রমণ ও হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি, দুই-ই একেবারে কমে গিয়েছে।

তবে করোনা-যুদ্ধে এ হেন সাফল্যের পরেও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সম্পূর্ণ ঢিলে দিতে রাজি নয় ইজ়রায়েল সরকার। ব্রাজিল ও ভারতে নয়া সংক্রমণ ঢেউ আছড়ে পড়েছে। নতুন মিউট্যান্ট স্ট্রেনের ধাক্কায় অর্ধেক ইউরোপে লকডাউন। আমেরিকাতেও পরিস্থিতি খুব সহজ নয়। তা ছাড়া ইজ়রায়েলে ছোটদের (১৬ বছরের নীচে) টিকাকরণ বাকি। মাস্ক পরা নিয়ে কড়াকড়ি শিথিল হলেও রাস্তাঘাটে প্রত্যেককে মাস্ক সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে। স্কুল-কলেজ সম্পূর্ণ ভাবে খুলে দেওয়া হচ্ছে এ দেশে। কিন্তু বদ্ধ জায়গা কিংবা বড় কোনও জমায়েত, অনুষ্ঠানে মাস্ক পরতে হবে এখনও। বিদেশিদের ইজ়রায়েলে প্রবেশেও কড়াকড়ি বজায় রাখা হচ্ছে। সীমিত সংখ্যক বিদেশিকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। বিদেশ-ফেরত ইজ়রায়েলিদেরও দেশে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে একমাত্র উপসর্গহীন হলেই। তার পরেও একটি নির্দিষ্ট সময় নিভৃতবাসে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। নতুন মিউট্যান্ট স্ট্রেনগুলিকে নিয়ে চিন্তায় সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরায়েল ৭ জনের শরীরে ভারত-স্ট্রেন মিলেছে।

টিকাকরণে সাফল্য নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ‘‘করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে গোটা বিশ্বে আমরাই সব চেয়ে এগিয়ে।’’ ইসরায়েল দৈনিকে আজ শিরোনামে লেখা হয়েছে ‘ব্রিদিং ফ্রিলি’। অর্থাৎ ‘স্বাধীন ভাবে শ্বাস নিন।’ ১৯ বছর বয়সি অমিতাই হলগার্টেন বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন পরে এই প্রথম মাস্ক ছাড়া বেরিয়েছি। অদ্ভুত লাগছে। কিন্তু ভাল লাগছে।’’

প্রাথমিক স্কুল থেকে হাইস্কুল, ফের কচিকাঁচাদের কোলাহলে ভরপুর। তবে পরিস্থিতির উপরে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। ক্লাসরুমের ভেন্টিলেশন প্রক্রিয়া ঠিক মতো কাজ করছে কি না, তা দেখতে বলা হয়েছে তাঁদের। পারস্পরিক দূরত্ব বজায় থাকছে কি না, তা-ও দেখার। কারণ, দেশবাসীর এই অংশেরই টিকাকরণ হয়নি এখনও। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, ‘‘১৬ বছরের নীচে টিকা দেওয়া হয়নি। বাচ্চাদের নিরাপদে রাখতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x