ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৮ অপরাহ্ন
কৃষকের ছেলে-মেয়েরা খাদ্যে কষ্ট পাবে এটা হতে পারেনা
Reporter Name
যুক্তরা‌ষ্ট্রের বি‌শেষ স্বীকৃ‌তি পা‌চ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনা

বাংলাদেশ কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা বলেছেন, কৃষকের ছেলে-মেয়েরা খাদ্যে কষ্ট পাবে এটা হতে পারেনা। ন্যায্যমূল্য যাতে আমাদের কৃষকরা পায়, তার জন্য আমরা যথাযথ দাম নির্দিষ্ট করছি এবং কৃষকদের সহায়তা দিচ্ছি, কৃষকের গুদামে যাতে খাদ্য সংরক্ষিত থাকে, প্রত্যেক কৃষকের ঘরে খাদ্য যেন থাকে। কারণ যারা উৎপাদন করবে তারা খাবার পাবে না বা তাদের ছেলে-মেয়েরা খাদ্যে কষ্ট পাবে এটা হতে পারেনা। আমরা সে ব্যবস্থাটাও ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে হাতে নিয়েছি।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগে যে সমস্ত কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি এবং আমরা সেই সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। এবারেও যেমন ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক তারাও সেধরনের সহযোগিতা পাবেন। তার জন্য একটা থোক বরাদ্দ আমরা রেখে দিচ্ছি। আমাদের দেশে উৎপাদন যাতে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হতে পারে- তার জন্য যথাযথ- মাটি পরীক্ষা করা থেকে শুরু করে সর্ব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।

বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী কৃষক লীগের সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। এরপর তিনি বলেন, আজকের দিনে আমি পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যিনি কৃষিকে সব থেকে গুরুত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ, কৃষি আমাদের উন্নয়নের সব থেকে বড় মাধ্যম। বাংলাদেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা,শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সেবা সব ধরনের মৌলিক অধিকার পূরণের জন্য জাতির পিতা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে। আমি এই প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে বাংলাদেশের সকল কৃষক-কৃষাণী, তাদেরকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। কারণ, তাঁরা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে খাদ্য উৎপাদন করেন।

সেই খাদ্য খেয়েই আমরা বেঁচে থাকি। কাজেই তাদের প্রতি আমাদের সব সময় সমর্থন রয়েছে এবং তাদের সহযোগিতা করা- এটা আমরা বিশেষ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের কর্তব্য মনে করে। এবং কৃষকদের সমস্যা সমাধানের জন্য জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা যখন প্রথম সরকার গঠন করলাম তখনেই পদক্ষেপ নিতে শুরু করি। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর যখন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল হয়ে গেলো এদেশের কৃষকদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে শুরু করল এবং যাদের গুলিতে সার চাইতে গিয়ে ১৮ জন কৃষককে জীবন দিতে হলো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখন সরকারে এসেছে, তখন থেকে কৃষকদের আর কোন কষ্ট থাকতে পারেনি, কারণ আমরা তাদের প্রতি যথায ব্যবস্থা নিয়েছি। বর্গাচাষীরা যাতে বিনা জামানতে ঋণ পায় আমরা কৃষিব্যাংকের মাধ্যমে তাদের বিনা জামানতে ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সারের দাম যা বিএনপি সরকারের আমলে ৯০ টাকা ছিল, তা আজ ১২ টাকায় আমরা নামিয়ে এনেছি। গবেষণার মাধ্যমে উন্নত বীজ আমরা উৎপাদন করছি এবং সেই বীজ আমরা সরবরাহ করছি। আমরা সেই সাথে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ- যেটা জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল- আমরা সেই লক্ষ্য কার্যকর করে দিচ্ছি এবং সেখানে আমরা ৭০ শতাংশের উপর ভর্তুকি দিচ্ছি।

আমরা কৃষি-যান্ত্রিকীকরণ করে যাচ্ছি যাতে আমাদের কৃষকরা আরও অধিক পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন করতে পারে। আমরা উন্নতমানের বীজ সরবরাহ, প্রতিটি কৃষি-উপকরণ কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। সেই সাথে সাথে আমরা সেচ কাজে কৃষক যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন সেখানে আমরা ভর্তুকি দিচ্ছি এবং কৃষকের বিদ্যুৎ সরবরাহ যাতে নিশ্চিত হয় তার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি এবং বর্তমানে সেচকাজে আমরা সোলার-প্যানেল ব্যাবহারও আমরা শুরু করে দিয়েছি।

ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। কৃষক একটা মোবাইল ফোন ধরে ছবি তুলে তার ফসলের কী অবস্থা, মাটির কী অবস্থা বা মাটি পরীক্ষা করা এবং কী ধরনের সার ব্যবহার করবেন, কতটুকু ব্যাবহার করবেন বা কীটনাশক ব্যাবহার করবেন কীনা বা কতটুকু করবেন সব পরিমান যাতে পেতে পারে সেই ধরনের কৃষি তথ্য যাতে তারা পেতে পারেন সে তথ্যকেন্দ্রসমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। সেখান থেকে কৃষক তার প্রয়োজনীয় ত্য সংগ্রহ করতে পারেন। কারন আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর মোবাইল ফোনও আমরা সকলের হাতে হাতে আমরা তুলে দিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x