রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করতেই আগেভাগে দলের নেতাকর্মীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার দুটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত- গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব দলকে নির্বাচনমুখী করা; দ্বিতীয়ত- সরকারবিরোধী রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বলেন, ‘নিজের দলকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলে মূলত অন্য দলগুলোকেও নির্বাচনমুখী করে তুলতে চান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি হয়তো মনে করছেন একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেশে জরুরি। এরমধ্য দিয়ে রাজনৈতিক যে শূন্যতা দেখা দিয়েছে সেটাও পূরণ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করতে পারলে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি কমবে। এটাও একটা কারণ হতে পারে। তবে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এখনই।’
আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, নির্বাচনের প্রস্তুতির নির্দেশনার মধ্য দিয়ে মূলত আওয়ামী লীগকে গোছানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন দলীয় প্রধান। মূলত সংগঠনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন মোকাবিলা করার মতো শক্তিশালী দেখতে চান দলীয় সভাপতি।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে ভয় পায় না। নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করার নির্দেশনার মধ্য দিয়ে দলের হাতে তিনটি কাজ তুলে দিয়েছেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। একটি হলো, দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ করা। দ্বিতীয়ত- সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলোর প্রচার এবং তৃতীয়টি হলো জনগণের দরজায় এখন থেকেই কড়া নাড়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দলেরই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া উচিৎ। আওয়ামী লীগ সেখানে পথপদর্শক হলো।’
আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) এস এম কামাল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে দলের নেতাকর্মীদের ভেতরে কিছু অনৈক্য দেখা দিয়েছে। মূলত নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে চাই আমরা।’তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এও চাই, সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনি ট্রেনে সওয়ার হোক।’
আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দলকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা আমাদের রাজনৈতিক কৌশল। অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও বলবো আন্দোলন-ষড়যন্ত্র বাদ দিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। তাতেই মঙ্গল।’