ঢাকা, শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২২ পূর্বাহ্ন
‘যত নেতা তত গ্রুপ’ সিলেট বিএনপিতে
দৈনিক ডাক অনলাইন ডেস্ক

বিদ্রোহ, পদত্যাগ, বলয়প্রথা—মাঠের রাজনীতির বাইরে এ বিষয়গুলো সিলেট বিএনপিকে সব সময় উষ্ণ রাখে। দেশে রাজনীতির এই খরার সময়েও তাই সিলেট বিএনপি আলোচনায়। কমিটি গঠন নিয়ে অসন্তোষ থেকে বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রায় তিন শ নেতা পদত্যাগ করেছেন। ছাত্রদল, যুবদলের কমিটি নিয়েও চলছে অসন্তোষ। আছে তিন বছর ধরে বিএনপির জেলা ও মহানগর কমিটি না হওয়ার ক্ষোভ। এই অবস্থায় স্থানীয় বিএনপিতে গ্রহণযোগ্য একক নেতৃত্বের অনুপস্থিতির বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। সেখান থেকে মুখরোচক আলোচনা—সিলেট বিএনপিতে এখন ‘যত নেতা তত গ্রুপ’।

স্থানীয় বিএনপির নেতা–কর্মীরা জানান, একটা সময় এম সাইফুর রহমান ছিলেন সিলেট বিএনপির একক নেতা। এরপর ইলিয়াস আলীর উত্থান হলে দুই ধারায় সক্রিয় ছিল সিলেট বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো। সাইফুর রহমানের মৃত্যু ও ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’ হওয়ার পর দল আর ঐক্যবদ্ধ হয়নি। উল্টো বলয় বেড়েছে, বলয়ের ভেতরে তৈরি হয়েছে উপবলয়ে অন্তঃস্রোত। ফলে দ্বন্দ্ব, রেষারেষি বেড়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিলেট বিএনপির একাধিক নেতা জানান, এখন দলের বড় একটি অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। দল ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন কমিটির বেশির ভাগ নেতা তাঁর বলয়ের। সাইফুর রহমান ও ইলিয়াস আলীর বলয়ে থাকা বেশ কয়েকজন নেতা মুক্তাদিরের পেছনে আছেন। এর বাইরে প্রয়াত সাইফুর রহমানের অনুসারীদের নেতৃত্বে আছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ‘নিখোঁজ’ ইলিয়াস আলীর অনুসারীরা মূলত সদ্য পদত্যাগকারী কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জামানের নেতৃত্বে সংগঠিত আছেন।

এ তিন বলয়ের বাইরে কয়েকটি উপবলয় দলের ভেতরে নানাভাবে সক্রিয় আছে বলে জানান বিএনপির নেতারা। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম, মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহরিয়ার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. বদরুজ্জামান সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী ও সহসভাপতি ফরহাদ চৌধুরী শামীম এই উপবলয়ের নেতৃত্বে আছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়ভাবে দলে চলমান অসন্তোষের একটা বড় কারণ, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর কমিটিতে মুক্তাদিরের অনুসারীদের বেশি ঠাঁই পাওয়া। গত কয়েক বছরে এই মেরুকরণ স্পষ্ট হয়েছে। তাতে অন্য গ্রুপগুলোর নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন জেলা ও মহানগর কমিটিতে ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করার অভিযোগ তুলে বিএনপির সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জামান গত ১৮ আগস্ট দল ছাড়ার ঘোষণা দেন। এতে দলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য হয়। সামসুজ্জামানের ঘোষণার পর তাঁর অনুসারী বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের জেলা ও মহানগর পর্যায়ের প্রায় তিন শ পদধারী নেতা কয়েক দিনের ব্যবধানে পদত্যাগ করেন।

২০১৮ সালে ছাত্রদল এবং ২০১৯ সালে যুবদলের সিলেট জেলা ও মহানগর কমিটি গঠনের সময়ও ত্যাগী, পরীক্ষিত নেতাদের অবমূল্যায়নের অভিযোগ উঠেছিল। ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পরদিন ৯ জন নেতা পদত্যাগ করেন। এর জের ধরে ওই বছরের ৩০ জুলাই ফয়জুর রহমান ওরফে রাজু নামের এক ছাত্রদল নেতা প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন।

যুবদলের কমিটি ঘোষণার পরও অস্থিরতা তৈরি হয়। তখন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ চারজন প্রভাবশালী নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিলে নেতারা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

নেতা-কর্মীরা জানান, সাইফুর রহমান ও ইলিয়াস আলীর অনুপস্থিতি, বিএনপির তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান সমশের মুবিন চৌধুরীর রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানো—সব মিলিয়র স্থানীয় বিএনপির নেতৃত্ব অনেকটা মুক্তাদিরের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এখন দলের বিভিন্ন কমিটিতে থাকা নেতাদের অন্তত ৭০ ভাগ তাঁর অনুসারী। তবে অপেক্ষাকৃত প্রবীণেরা মুক্তাদিরকে মেনে নিতে পারেননি বলে জানান তরুণ নেতারা।

জানতে চাইলে সামসুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন দলের আদর্শিক কর্মীদের কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। ছাত্রদল ও যুবদলের যোগ্য নেতাদের কমিটিতে রাখা হয়নি। সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটল। তিনি বলেন, ‘দলের স্বার্থে আমরা যেসব কথা বলছি, তা শোনা হচ্ছে না। এই দলের পেছনে আমার জীবনের অধিকাংশ সময় ব্যয় হয়েছে। অথচ আমিই অবমূল্যায়নের শিকার হয়েছি।’

সামসুজ্জামানসহ তিন শতাধিক নেতা–কর্মীর পদত্যাগ কিংবা বলয়ভিত্তিক রাজনীতিতে নেতৃত্বদানকারী কোনো নেতা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে রাজি হননি। এঁদের মধ্যে আরিফুল হক চৌধুরী শুধু বললেন, ‘আমি বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় আছি, থাকব। তবে স্থানীয় রাজনীতি প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে চাই না।’

সব পক্ষের অভিযোগের আঙুল যে আবদুল মুক্তাদিরের দিকে, সেই তিনিও স্থানীয় বিভেদের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু এটুকু বলতে পারি, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ। এর বাইরে আমার কোনো বক্তব্য নেই।’

জানতে চাইলে সিলেট বিভাগের দায়িত্বে থাকা বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হাসান বলেন, ‘দলের দুর্দিনের সঙ্গী সামসুজ্জামান। দলের মহাসচিব তাঁর ক্ষোভের বিষয়টি লিখিতভাবে জানাতে বলেছেন। বিষয়টি অবশ্যই সমাধানের চেষ্টা করা হবে। কারণ, জামানের মতো নিবেদিতপ্রাণ মানুষ দলে প্রয়োজন।’

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি: কাউন্সিলরদের ভোটে ২০১৬ সালে মহানগর বিএনপির কমিটি হয়। নাসিম হোসাইন সভাপতি, মো. বদরুজ্জামান সেলিম সাধারণ সম্পাদক ও মিফতাহ সিদ্দিকী সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। এ কমিটির মেয়াদ তিন বছর আগে শেষ হলেও আর কমিটি হয়নি।

নেতা–কর্মীরা জানান, মহানগর বিএনপির এই কমিটি গঠনের পর অনেক নেতা প্রবাসে চলে যান। কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. বদরুজ্জামান সেলিম দায়িত্ব গ্রহণের কিছুদিনের মধ্যেই যুক্তরাজ্যে চলে যান। প্রথম যুগ্ম সম্পাদক আজমল সাদেক এবং দ্বিতীয় যুগ্ম সম্পাদক শামীম সিদ্দিকী যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। আবার যুক্তরাজ্য থেকে ফিরে তৃতীয় যুগ্ম সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। ২৩৩ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটির অন্তত ২০ জন প্রবাসে আছেন বলে দলের নেতারা জানান।

মহানগর কমিটি গঠনের দিন জেলা কমিটিও গঠিত হয়েছিল। মেয়াদ শেষে ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর কেন্দ্র থেকে জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি কামরুল হুদা জায়গীরদারকে আহ্বায়ক করে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তিন মাসের মধ্যে তাঁদের সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের কথা থাকলেও তাঁরা তা করেননি।

গত বছরের ৩ মার্চ জেলার আহ্বায়ক কমিটির ৯ জন সদস্য সংবাদ সম্মেলন করে আহ্বায়কের বিরুদ্ধে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ আনেন। একইভাবে বিভিন্ন শাখা কমিটির নেতৃত্বে থাকা ও বাদ পড়া নেতাদের একটি অংশও আহ্বায়কের বিরুদ্ধে সরব হন। কামরুল হুদা জায়গীরদার বলেন, কমিটি গঠনে কোনো স্বেচ্ছাচারিতা ছিল না। কিছুটা ভুল–বোঝাবুঝি ছিল। তবে দলকে এগিয়ে নিতে সবাই এখন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন।

এ বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হাসান বলেন, ‘সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি শিগগিরই ঘোষণা করা হবে। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে জেলা কমিটিও করা হবে। নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিভাজন দূর করে আমরা দলকে এগিয়ে নিতে চাই।’

4 responses to “‘যত নেতা তত গ্রুপ’ সিলেট বিএনপিতে”

  1. Grisy says:

    Darmowe spiny bez depozytu za rejestrację to tylko jeden z wielu rodzajów bonusów w którym przyznawane są darmowe spiny. Czasem darmowe free spiny gracz otrzyma po wpłacie pierwszego depozytu, albo podczas specjalnych okoliczności jak swoje urodziny lub rocznica kasyna. Ekskluzywne darmowe spiny w każdym kasynie będą przyznawane z innego powodu. Do najpopularniejszych rodzajów należą: Jeśli otworzyłeś za zbyt wysoką kwotę, nie odważą się pozwolić ci zapłacić później ponownie. Nie chodzi tu o to, że policja po prostu idzie za operatorami takich gier, a prawo, jak napisano, gdzie jego tak duża Zbrodnia po prostu grać nie jest tylko taktyka straszenia, jego egzekwowane w ten sposób, jak również. Bodog został pierwotnie założony w 2023, co czyni go jednym z najstarszych witryn hazardowych online nadal istnieje.
    http://www.taehyunshop.com/bbs/board.php?bo_table=free&wr_id=375
    Nazywam się Stanisław Szymański. Pracuję jako redaktor naczelna dla jednej z najlepszych stron internetowych poświęconych kasynom online – kasynopolska10. Studiowałem w Warszawska Wyższa Szkoła Informatyki. Przed dołączeniem do KasynoPolska10 pracowałem jako analityk nisz hazardowych. Całe życie mieszkam w Warsaw i od kilku lat redaguję i piszę teksty związane z kasynem, automaty do gier itp. Myślę, że nasza strona będzie dla Ciebie przydatna! Złożyłem całą moją broń i zdaję się na Twoje zmiłowanie, więc co dzień się pocę przy lustrze. Co prawda nic mi nie przybyło jeszcze na koncie, żeby coś z tym fantem zrobić. Oznacza to także, kasyna do gry za darmo bez rejestracji że tu. Życzę ci, na prowincji. Dlatego nie rozumiem tego skąd w was tyle nienawiści, starano się podkreślać swoją polskość i rolę małego miasta w wielkich wydarzeniach. Kluczowa jest tu kwestia co tak naprawdę podlega pod opodatkowanie kryptowalut, że kontrwywiad dysponuje mocnymi dowodami.

  2. OBOpOjPW says:

    tadalafil generic vs cialis Proximal HCO 3 reabsorption is influenced by luminal HCO 3 concentration and flow rate, extracellular fluid volume, peritubular HCO 3 concentration, and P co 2, Cl, K, Ca 2, phosphate, parathyroid hormome, glucocorticoids, О± adrenergic tone, and angiotensin II 4

  3. IjoMsJFRB says:

    buy cialis without prescription The Ocular Response Analyzer ORA is a non contact tonometer that is less influenced by CB modifications after LRS 3 than the Goldmann applanation tonometer GAT, which is still the gold standard for measuring intraocular pressure IOP in normal corneas 15, 16, 17

  4. gon says:

    (TN) Gambling Problem? Call or Text the Tennessee REDLINE: 800-889-9789 Anyone who has played blackjack before won’t find anything new to contend with in the base game of Blazing 7’s. See what everyone is so excited about. Craps at WinStar is a wild ride of thrill and chance. Blazing 7s is a variant of blackjack that pays out when both dealers face-up and first cards are 7s. This game is similar to the standard blackjack game, but the payout is much higher. For instance, you can win 350x your side bet if your first two cards are 7s. (TN) Gambling Problem? Call or Text the Tennessee REDLINE: 800-889-9789 Earn 100 points and receive a $10 Free PlayEarn an additional 200 points and receive a $20 Free PlayEarn an additional 500 points and receive a $50 Free PlayEarn an additional 750 points and receive a $100 Free Play
    http://rosemedilab.com/bbs/board.php?bo_table=free&wr_id=24834
    Jackpot City Casino offers you over 850 top-quality games from an exclusive group of seven creative developers. Microgaming is the leading game supplier – renowned for its high-quality gaming industry standard and innovation since 1994. The site is easy to navigate, so it will only take you a little while to work your way around it and find new games to play. İl Emniyet Müdürlüğü’nde görevli 21 polis müdürü ve emniyet amiri başka illere tayin edilirken 7 emniyet müdürü ile 5 emniyet amiri İstanbul’a atandı Microgaming, one of the world’s most awarded software providers, powers the casino games at Jackpot City. They are well known for creating the latest developments in online casino technology and won the EGR Awards 2019 for their constant innovation with very high-quality software. The company is held in high regard for safety, being well respected for continuously building new safety measures to keep the casinos and players safe.

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x