লক্ষ্মীপুরে হাসপাতাল থেকে ৩ দিনের নবজাতক চুরি করে নেওয়ার সময় রিমা আক্তার নামে এক তরুণীকে আটক করা হয়েছে। রোববার দুপুরে নোভা ট্রমা সেন্টার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের সামনে থেকে লোকজন তাকে আটক করে।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিমতানুর রহমান ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি একেএম আজিজুর রহমান মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে আটক রিমাকে পুলিশ সদর থানায় নিয়ে যায়।
আটক রিমা সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দারবাজার এলাকার ইতালি প্রবাসী সফিকুর রহমানের স্ত্রী।
শিশুর পরিবার ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, তিন দিন আগে নোভা ট্রমা সেন্টার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে সাবিনা আক্তার ওই ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। সদর হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক নার্গিস পারভিন ওই প্রসূতির সিজার করেন। এখনো শিশুটির নাম রাখা হয়নি। শিশুর বাবা সদর উপজেলার দালালবাজার ইউনিয়নের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার ব্যবসায়ী মো. সুমন।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রিমা হাসপাতালে এসে শিশুর মা সাবিনাকে বলেন, বাচ্চার অবস্থা ভালো নয়। চিকিৎসক নার্গিস পারভিন বাচ্চাটিকে দেখার জন্য বলেছেন। বাচ্চাটিকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে বলেছেন জানিয়েই সাবিনার কোল থেকে বাচ্চাকে নিয়ে রিমা কেবিন থেকে বের হয়ে যায়। পরে ২-৩ মিনিট হাসপাতালের অভ্যর্থনা কক্ষে রিমা বসে ছিলেন। তার পেছনে বাচ্চার নানিও আসে। হঠাৎ বাচ্চাকে নিয়ে রিমা দ্রুত হেঁটে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যায়।
এতে বাচ্চার নানি চিৎকার দিয়ে উঠে বলেন- ‘আমার নাতিকে নিয়ে মহিলা চলে যাচ্ছে।’ হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রিমা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠতে যায়। চিৎকার শুনে তাৎক্ষণিক হাসপাতালের লোকজন এসে বাচ্চাসহ রিমাকে আটক করে পুলিশে খবর দেন।
জানতে চাইলে মো. সুমন বলেন, শুক্রবার প্রসব ব্যথা উঠলে আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে সিজারের মাধ্যমে আমার দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়। আমার সন্তানকে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা শুনে গা শিউরে উঠেছে। রিমার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রসব ব্যথা নিয়ে সাবিনা আক্তারকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গাইনি চিকিৎসক নার্গিস পারভিন ওই প্রসূতির সিজার করেন। প্রসূতির কোলজুড়ে ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। সাবিনা এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাচ্চা চুরি করে নিয়ে যাওয়ার কথা শুনে তাৎক্ষণিক চোরকে আটক করা হয়।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিমতানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ সময় হাসপাতালে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখাসহ বাচ্চার মা-বাবা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হয়। রিমাকে আটক করে সদর থানায় পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply