ঢাকা, শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন
বিরামপুরে সরকারি ঘর দেয়ার নামে দরিদ্র মর্জিনার টাকা ইউপি চেয়ারম্যানের পকেটে
মিজানুর রহমান মিজান, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ

সরকারি ঘর দেয়ার নামে অসহায়, হতদরিদ্র ও স্বামী হারা মর্জিনা বেগমের ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বিরামপুর উপজেলার ২নং কাটলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজির হোসেন। ঘর না পেয়ে মর্জিনা এখন ঐ টাকা ফেরত পেতে চেয়ারম্যানের পিছে পিছে ঘুরছেন।

মর্জিনা বেগম দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা ২নং কাটলা ইউনিয়নের উত্তর কাটলা গ্রামের আবু সাঈদের স্ত্রী। ঘরে তাঁর দুই মেয়ে আর এক ছেলে রয়েছে।

সরেজমিনে জানা যায়, স্বামী আবু সাঈদ অনেক আগেই তাঁকে ছেড়ে চলে গেছেন। বহু কষ্টে ছেলে-মেয়েদের বড় করছেন তিনি। বড় মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত হলেও অর্থের অভাবে বিয়ে দিতে পারছেন না। কয়েক শতক জায়গার ওপর মর্জিনার একটি ছোট কুঁড়ে ঘর রয়েছে। স্বামীহারা সন্তানদের নিয়ে এই কুঁড়ে ঘরে তাঁর কষ্টের বসবাস। অল্প একটু ঝড়-বৃষ্টি হলেই তাঁর ঘর নড়-বড় করে। প্রতিনিয়ত ছেলে- মেয়েদের নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয় তাঁকে।
অনেক আশা ছিল সরকারের দেওয়া পাকা বাড়িতে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে নিরাপদে বসবাস করবেন মর্জিনা। তাই মানুষের কাছ থেকে ধার-দেনা আর এনজিও থেকে লোন নিয়ে ৪০ হাজার টাকা জোগাড় করে স্থানীয় চেয়ারম্যান নাজির হোসেনকে দেন সরকারি ঘর পাওয়ার আশায়। সে আশায় গুড়ে বালি। আশায় বুক বাঁধলেও আজও তাঁর আশা পূরণ করেননি ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন। তবুও আশা আর স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি এই অসহায় গরিব মর্জিনা বেগম। এখনো তাঁকে দেখা যায় ২নং কাটলা ইউনিয়ন পরিষদে স্বপ্নে দেখা ঘরের খোঁজে।

উপজেলার ২নং কাটলা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে দেখা হয় ভুক্তভোগী মর্জিনা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, হারা গরিব মানুষ, স্বামী নাই, অনেক কষ্ট করে ছোলপল মানুষ করুছু। ঘর দুয়ার নাই, চেয়ারম্যান মোক সরকারি ঘর করে দিবি। এই তঙ্কে এনজিও থেকে লোন করে ও চায়ে মাঙ্গে চেয়ারম্যানের শালা শহিদুলের হাতে ৪০ হাজার টাকা চেয়ারম্যান নাজিরের কাছে দেউ। চেয়ারম্যান মোক কইছিলো তোমার কাগজপাতি সব হয়ে গেইছে। এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ হবে। তিন বছর হলো। কিন্তু, আজ পর্যন্ত চেয়ারম্যান মোর ঘরের ব্যবস্থা করে দিলি না। মোর মতো গরিব মানুষক, আর কত কষ্ট করবা নাগবে?

টাকা নিয়ে মর্জিনাকে ঘর কেন দিচ্ছেন না? এমন প্রশ্ন করলে ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন মুঠোফোনে বলেন, আমি তাঁর কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি। এগুলো মিথ্যা এবং বানোয়াট কথা।

এ বিষয়ে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার বলেন, আমি এ বিষয়ে অবগত নই। কেউ ‍আমার কাছে কোনো অভিযোগও করেনি। অভিযোগ করলে আমি এবিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x