নওগাঁতে প্রেমিকা আত্মহত্যার পেছনে জড়িত থাকার সন্দেহে ফেনীর মহিপাল লুদ্দার পাড় এলাকায় দুই ফেরিওয়ালা সহোদরকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়েছে প্রেমিক ডায়মন্ড। এদের মধ্যে আল আমিন(২৫) ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত অপর বড় ভাই তোফাজ্জলকে আশংকা জনক অবস্থায় ঢাকায় নেয়া হয়েছে।
নিহত, আহত ও ঘাতকের বাড়ির নওগাঁ জেলার মান্দা থানায়। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ফেনী পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ডের লুদ্দার পাড়ের একটি কলোনীতে এই ঘটনা ঘটে।
ফেনী মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার উদ্ধার করে ফেনী ২৫ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ জেলার মান্দা থানার রাজেন্দ্র বাটি গ্রামের নুরুল ইসলাম মন্ডলের দুই ছেলে আলামিন মন্ডল, তোফাজ্জল মন্ডল এবং একই এলাকার ইউনুস আলী প্রামাণিকের ছেলে ডায়মন্ড প্রামাণিক গত ৭-৮ বছর ফেনীর শহরের লুদ্দারপাড় এলাকায় হাজী ফরিদ কলোনির একই রুমে থাকতো। তারা শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্লাস্টিক সামগ্রী ফেরি করে বিক্রি করতো। গত তিন মাস আগে ডায়মন্ডের নিজ বাড়ির পার্শ্ববর্তী প্রেমিকা পপি দাস আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় আলামিনের হাত রয়েছে সন্দেহে তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল ডায়মন্ড।
কলোনির বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন জানান, ডায়মন্ড গত ৮-৯ দিন আগে বাড়ি থেকে ফেনী আসে। সে কদিন থেকে নিজের হাতে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিত। ব্যবসায় যেত না। পাশের চা দোকানে বসে থাকতো। দোকানে অনেককে বলেছে প্রেমিকা পপি তার মোবাইল ফোনে কল করলে আলামিন কল রিসিভ করে ডায়মন্ড সেজে তাকে গালমন্দ করে। এতে অপমান বোধ থেকে পপি নওগাঁতে আত্মহত্যা করে। এ কারণে গত ৮-৯ দিন ধরেই পরিচিতদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে ডায়মন্ড।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার প্রতিদিনের মতো রাতের খাওয়া শেষে ১০টার দিকে ঘুমিয়ে পড়ে আলামিন মন্ডল ও তার ভাই তোফাজ্জল মন্ডল। রাত আড়াইটার দিকে ডায়মন্ড আলামিনকে ঘুমন্ত অবস্থায় এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকলে তার বড় ভাই তোফাজ্জল বাধা দেন। এ সময় তাকেও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ডায়মন্ড। আলামিন ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এ সময় আহত তোফাজ্জলের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং দু’জনকেই উদ্ধার করে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তোফাজ্জলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এই তিন যুবকের প্রতিবেশী বক্কর মিয়া জানান, তারা ধারণাও করতে পারেননি ডায়মন্ড হত্যাকাণ্ডের মত ঘটনা ঘটাতে পারে। রাতে প্রচুর বৃষ্টির কারণে পাশে কক্ষে থেকেও তারা বিষয়টি বুঝতে পারেননি। বিষয়টি বুঝতে পারলে ডায়মন্ডকে আটক করতে পারতেন তারা।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ফেনীর পুলিশ সুপার খন্দকার নুরুন্নবী ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের বলেন, প্রেমিকা আত্মহত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তদন্তে ডায়মন্ড একাই আলামিনকে হত্যা ও তার ভাইকে ছুরিকাঘাত করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে। ডায়মন্ডকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারের পরই হত্যার রহস্য জানা যাবে।
নিহতের চাচা আমিনুল জানান, আলামিন বছর তিনেক আগে বিয়ে করেন। এরমধ্যেই জন্মের সময় এক কন্যা সন্তানের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী জয়নব বিবি দ্বিতীয়বারের মতো চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা।