দিনাজপুর জেলার বিরামপুরে আত্মহত্যার প্ররোচনা ও দ্রুত আলামত নষ্টের অভিযোগে আদালতের নির্দেশে জেসমিন আক্তার(৩০) নামে এক গৃহবধুর লাশ কবর থেকে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকারের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলোন করা হয়েছে। এর আগে গত বুধবার (২৫ আগষ্ট) দুপুরে উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের পলিখিয়ার মামুদপুর গ্রামে ওই গৃহবধুকে দাফন করা হয়।
নিহত গৃহবধু জেসমিন আক্তার বিরামপুর উপজেলার ২নং কাটলা ইউনিয়নের পলিখিয়ার মামুদপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বিদ্যুতের স্ত্রী।
মঙ্গলবার (৩১ আগষ্ট) দুপুরে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকারের উপস্তিতিতে উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের পলি খিয়ারমামুদপুর গ্রামের কবর থেকে নিহত গৃহবধু জেসমিনের লাশ উত্তোলন করা হয়।
মামলা সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ১২ বছর আগে উপজেলার জোতবানি ইউনিয়নের চকশুলবান গ্রামের জেসমিন আক্তারের সাথে একই উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের পলিখিয়ার মামুদপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বিদ্যুতের সহিত বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকেই তাঁদের সংসারে বিবাদ লেগেই থাকত। সোমবার(২৩ আগষ্ট) দুপুরে নিজ বাড়িতে ওঠানে তুচ্ছ ঘটনায় স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ বেধড়ক মারপিট করতে থাকে স্বামী আব্দুর রাজ্জাক বিদ্যুৎ।
এঘটনার কিছুক্ষন পরে আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে কীটনাশক পান করেন জেসমিন আক্তার। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওই দিন সন্ধায় বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর একদিন পর বুধবার (২৫ আগষ্ট) ভোরে জেসমিন আক্তারের মৃত্যু হয়। বিষয়টি থানা পুলিশকে না জানিয়ে বুধবার দুপুরে স্থানীয় দুই ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় পারিবারিক ভাবে আপোষ -মিমাংসা করে আলামত নষ্ট করার উদ্দেশ্যে জেসমিন আক্তারের লাশ দ্রুত দাফন করানো হয়।
এদিকে,গত বৃহস্পতিবার (২৬আগষ্ট) আত্মহত্যার প্ররোচনা এবং দ্রুত আলামত নষ্টের অভিযোগে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ হামিদুর রহমান বাদি হয়ে বেশ কয়েক জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে নিহত জেসমিন আক্তারের স্বামী আব্দুর রাজ্জাক বিদ্যুৎকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে দিনাজপুর কারাগারে প্রেরণ করেন।
এবিষয়ে বিরামপুর থানার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন কুমার মহন্ত বলেন, আত্মহত্যার প্ররোচনা ও দ্রুত আলামত নষ্টের অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ইতোমধ্যে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য আদালতের অনুমতি নিয়েই আজ মঙ্গলবার (৩১ আগষ্ট) লাশ উত্তোলোন করা হয়েছে। লাশটি ময়না তদন্ত জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হবে। ময়না তদন্ত শেষে যথা নিয়মে আবারো দাফন কার্য সম্পূর্ণ করা হবে।
কবর থেকে লাশ উত্তোলনের সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার , সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার ওয়াহেদুননবী, বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন কুমার মহন্ত, অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) মতিয়ার রহমান ও সর্ঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply