ঢাকা, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৪ অপরাহ্ন
আব্বার দেখানো পথেই চলি: সম্রাট
নিয়াজ শুভ

কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাক। তার হাত ধরেই এগিয়ে গেছে দেশীয় চলচ্চিত্র। এই শিল্পের কয়েক প্রজন্মের কাছে তিনি আইকনিক অধ্যায়। চার বছর আগে ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই কিংবদন্তি। তিনি এখন আকাশের তারা। তবুও তার নাম শ্রদ্ধায়, ভালোবাসায়, ভক্তিতে জ্বলজ্বল করছে ভক্ত থেকে শুরু করে পরিবারের প্রতিটি সদস্যের অন্তরে। বাবার স্মৃতিচারণে একান্তে কথা বললেন নায়করাজ রাজ্জাকের ছোট ছেলে খালিদ হোসাইন সম্রাট। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিয়াজ শুভ

বাবাকে ছাড়া চারটি বছর কেমন কাটলো?

সম্রাট: মাথার উপর ছায়াটা নেই। সময়ে-অসময়ে আব্বাকে মিস করি। কখনো তার স্মৃতি ভুলে থাকিনি। তিনি আমাদের সঙ্গেই আছেন। এই চার বছরে অনেক কিছু হারিয়েছি, আবার অনেক কিছু অর্জনও করেছি।

বাবার সঙ্গে কোন স্মৃতিটি বেশি মিস করেন?

সম্রাট: আব্বার আদেশ-উপদেশগুলো খুব মিস করি। কখন কি করতে হবে আব্বা সব বলে দিতেন। আমার বাচ্চারা তাদের দাদুকে খুবই মিস করে। একসাথে ঘুরতে যাওয়া, পিকনিক করা, খাওয়ার টেবিলে বসে আড্ডা সবই মিস করি।

 

 

 

মায়ের সঙ্গে নায়করাজের দুই ছেলে বাপ্পারাজ ও সম্রাট

 

 

 

বাবাকে বলা হয়নি এমন কোন কথা…

সম্রাট: না…তেমন কিছু নেই। আব্বার সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতাম। তিনি সব বিষয়েই জানতেন। তবে আমাদের কাজের বিষয়ে বেশ কিছু প্ল্যান ছিলো। আব্বা চাইতেন আমি যাতে সেগুলো পূরণ করি। এখন সেগুলো পূরণ হচ্ছে, কিন্তু সাফল্যের কথাগুলো আব্বাকে গিয়ে বলতে পারছি না। আব্বা জানলে খুব খুশি হতো। উনি এগুলো দেখে যেতে পারলেন না।

বাবার মৃত্যুতে আপনাদের জীবনে কেমন পরিবর্তন এসেছে?

সম্রাট: সবাইকে একদিন এই দুনিয়া ছেড়ে যেতে হবে। তিনি চলে যাওয়ার সময় বেশ সুস্থই ছিলেন। তার কোন সমস্যা ছিলো না। আসর নামাজ পড়ার জন্য ওযু করে রেডি হচ্ছিলেন এমন সময়ই তার চলে যাওয়া। প্রথম কথা, তাকে ছাড়া আমরা কীভাবে চলবো? আব্বাকে ছাড়া চলার কথা আমরা ভাবতেই পারিনি। সময়ের সাথে এখন সব মানিয়ে নিতে হচ্ছে। পরিবার চলানো থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তের ভারও এখন আমাদের ভাইদের ওপর চলে এসেছে। যেকোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আমরা আলোচনা করি, আব্বার দেখানো পথেই চলি।

সেটা কতটা প্রভাব ফেলেছে?

সম্রাট: শুরুতে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। এভাবে আব্বা চলে যাবেন, মানসিকভাবে সেই বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলাম না। আজকে একটা হাদিস পড়লাম- আল্লাহ মানুষের মনটা সেভাবেই বানিয়েছে, যাতে চলে যাওয়া মানুষটার স্মৃতি ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের এমন কিছু হয়নি। প্রতিটি মুহূর্তে, প্রতিটি কাজে আমরা আব্বাকে খুব মিস করি।

এবারের প্রয়াণ দিবসে কেমন আয়োজন ছিলো?

সম্রাট: প্রত্যেকবারের মতো এবারও ফজরের নামাজ পড়ে আব্বার কবর জিয়ারত করতে গিয়েছি। বাসায় নিজেরা মিলাদ পড়েছি, গরিব মানুষদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। আমাদের রাজলক্ষ্মী মার্কেটের যে মসজিদ আছে, সেখানে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছিলো। আব্বা চলে যাওয়ার পর গত চার বছর ধরে রূপগঞ্জে আব্বার নামে একটি মাদরাসা চালিয়ে আসতেছি। ওখানেও খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x