উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বর্ষনে এক সপ্তাহ যাবৎ সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এদিকে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন।
গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি ১৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শনিবার সকালে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাধ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ৪৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ দুটি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার আশংকা রয়েছে।
এক সপ্তাহ যাবৎ পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল ইতিমধ্যেই বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এ সকল এলাকার বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি উঠে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন দুর্গতরা। বন্যা কবলিত এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে রোপা আমন ক্ষেত ও বীজতলা, আখ, পাট, তিল ও সবজি বাগানসহ বিভিন্ন ফসল।
এদিকে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে জেলার যমুনা নদী তীরবর্তী এলাকায় শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন। জেলার কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়ন এবং চৌহালী উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে শুরু হওয়া ভাঙ্গনে শুক্রবার নদীতে বিলীন হয়েছে অন্তত ২০টি বসতভিটাসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি।
নদীর পার থেকে ঘড়-বাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র সড়িয়ে নিচ্ছেন ভাঙ্গন কবলিতরা। কাজিপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ি, নাটুয়ারপাড়া, চরগিরিশ, মনসুরনগর, নিশ্চিন্তপুর ও তেকানী ইউনিয়নে শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন। এসব এলাকার ১২টি গ্রামে ধীরে ধীরে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন জানান, নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের ডিক্রীদোরতা গ্রাম ও জিআরডিপির ৬ নম্বর নৌকাঘাট পয়েন্টে ব্যাপক আকারে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। এলকাবাসী আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বাড়ি ঘর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি ও নতুন স্থাপন করা বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোঃ মাছুদুল হক বলেন, যমুনায় পানি বৃদ্ধিজ অব্যাহত রয়েছে। বন্যা পূর্ভাবাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে আরও দু-একদিন পানি বাড়তে পারে, এ সময়ের মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রমও করতে পারে।