ঢাকা, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৩১ অপরাহ্ন
সবাই ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশ ভয় পায়, করোনাকে নয়!
দৈনিক ডাক অনলাইন ডেস্ক

ব্যবসায়ী, ক্রেতা, চালক কিংবা যাত্রী ওরা ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশকে ভয় পায়, কিন্তু করোনাকে ভয় পায় না। এমন চিত্র এখন রাস্তায় কিংবা কোন মার্কেটে গেলে চোখে পড়বেই। ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিজিবি কিংবা পুলিশ দেখলে “আইয়ে আইয়ে”বলে দোকানের ভিতরে ক্রেতা রেখে দ্রুত দোকানপাট বন্ধ করে দিবে। সড়কের যাত্রীরা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে পুলিশ চেকপোস্ট পার হয়ে যাবে কিংবা গাড়ি ঘুরিয়ে দ্রুতবেগে স্থান ত্যাগ করবে। এগুলো চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের দৈনন্দিন চিত্র।

ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা পুলিশের সাথে সংবাদ সংগ্রহকালে দেখা গেছে, ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিজিবি কিংবা পুলিশকে দেখলে সবাই ধাম ধাম করে দোকানের সার্টার নামিয়ে দেয়, দোকানের সামনে পাহারাদার বসিয়ে ১/২টি সার্টারের অর্ধেক নামিয়ে ধুমছে বিকিকিন করছে, মাস্কহীনরা পকেট থেকে তড়িৎগতিতে মুখে মাস্ক লাগিয়ে নেয় কিংবা যাদের থুতনির নীচে মাস্ক নামানো থাকে তারা দ্রুত মাস্ক তুলে মুখ ঢেকে নেয়। পুলিশ বা ম্যাজিস্ট্রেট দেখলে ৯০ ভাগ লোকজন এমন করে। এ যেন ম্যাজিস্ট্রেট বা পুলিশকে ভয় পাওয়া করোনাকে নয়। এমন চিত্র লকডাউন সময়ের হাজীগঞ্জের সর্বত্র।

করোনা মহামারি থেকে জাতিকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিতে সরকার ঘোষিত লকডাউন চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে চলমান লকডাউন আরো ৫ দিন বাড়িয়ে ১০ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত নেয়া হয়েছে। যতই দিন অতিবাহিত হচ্ছে ততই সাধারণ মানুষ কিংবা ব্যবসায়ীদের করোনা উপেক্ষা করার প্রবনতা প্রবল হয়ে উঠছে। কিছুতেই কাউকে মানিয়ে রাখা যাচ্ছে না। যেন করোনা সরকারের চাপিয়ে দেয়া কোন একটা কিছু।

লকডাউন চলাকালীন সময়ে সরজমিনে ঘুরে হাজীগঞ্জ বাজার, আঞ্চলিক মহাসড়ক কিংবা ছোট বাজারগুলোতে ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা পুলিশের উপস্থিতি দেখা মাত্র মুহুর্তের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করাসহ সবাই সটকে পড়তে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট বাজারগুলো হতে ম্যাজিস্ট্রেট বা পুলিশ চলে গেলে আবারো জমে উঠে জনসাধারণের হাটা-চলাসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

এমন বিষয়গুলো সাদামাটা চোখে দখলে মনে হয় ৯০ ভাগ লোকজন করোনাকে ভয় পায় না, ভয় পায় পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটকে। যেন করোনাকে ঠেকিয়ে রাখার দায় একা সরকারের, জনগণের কোন দায়িত্ববোধ নেই।

হাজীগঞ্জর ব্যবসায়ীদের কাছে প্রশাসন অনেকটাই দিশেহারা হওয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এদিন চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রচুর সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলতে দেখা গেছে। তবে যেখানে পুলিশের চেকপোস্ট রয়েছে সেখানে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে এই সকল চালকরা। চালকরা বাধাপ্রাপ্ত হলেও যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছা কিন্তু থেমে নেই। এক পরিবহন থেকে নেমে কিছু দূর হেটে আবার আরেক পরিবহন পেয়ে যাওয়ার কারণে মানুষজন অন্য স্বাভাবিক সময়ের মতো রাস্তায় বেরিয়ে আসছে।

বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে ও হাজীগঞ্জ বাজারে দেখা যায়, বাজারে প্রবেশ পথে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট রয়েছে। চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের  হাজীগঞ্জের পশ্চিম মাথা তথা পৌর বাস টার্মিনাল ও পূর্ব মাথা তথা পৌর ভবনের সামনে চেকপোস্ট রয়েছে। এ ছাড়া হাজীগঞ্জ রামগঞ্জ সড়কের ডাকাতিয়া নদীর দক্ষিণ পাড়ে রান্ধুনীমুড়া উচ্চ বিদ্যালয়রের সামনে আরেকটি চেকপোস্ট রয়েছে। সিএনজি চালিত অটোরিকশা এই সকল চেকপোস্টে  আসলে পুলিশ যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ঘুরিয়ে দেয়। এ সকল চেকপোস্টে যাত্রীরা নেমে কিছুটা পথ হেটে ফের ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা কিংবা রিকশায় করে ১০ টাকায় জনপ্রতি বাজার অভ্যন্তরে চলে আসে। যাত্রীরা বাজারে কাজ সেরে একইভাবে ফের গন্তব্যে পোঁছে যান। ভয় শুধু পুলিশকে। কেন,কী কারণে চেকপোস্ট বসানো হলো সেই চিন্তা মোটেও কারো নেই। চেকপোষ্ট পার হতে পারলেই চোখে মুখে খুশির ঝিলিক ফুটে উঠতে দেখা গেছে। এ দিন পুলিশ বাধ্য হয়ে বেশ কিছু ব্যাটারি ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা আটক করে।

এ ছাড়াও  দেখা গেছে, হাজীগঞ্জ বাজার অভ্যন্তরে ৮০ ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা। বাজারে সড়কের উভয় পাশে তরকারি ও ফলের দোকানগুলোতে মাস্কবিহীন অবস্থায় অধিকাংশ ক্রেতার সমাগম। বাজারের সকল মার্কেটের দোকানগুলো খোলা থাকাসহ কমবেশি ক্রেতা দেখা গেছে দোকানগুলোতে। তবে পুলিশ কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট কখন এসে পড়ে এমন একটা আতঙ্ক দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের মাঝে। তারা পুলিশ কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট ভয় পায়, করোনাকে ভয় পায় না এমন একটা ভাব।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার জানান, আমরা প্রতিনিয়ত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আসছি। করোনা থেকে সর্তক থাকতে বারবার ব্যবসায়ীদেরকে বলে আসছি। আমরা যতক্ষণ বাজারে থাকি ততক্ষণ ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখছে।

3 responses to “সবাই ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশ ভয় পায়, করোনাকে নয়!”

  1. I could not refrain from commenting. Exceptionally
    well written!

  2. I loved as much as you’ll receive carried out right
    here. The sketch is tasteful, your authored subject matter stylish.
    nonetheless, you command get bought an edginess over that you wish be delivering the following.
    unwell unquestionably come more formerly again since exactly the same nearly very often inside
    case you shield this hike.

  3. My brother recommended I might like this web site.

    He was totally right. This post actually made my day. You cann’t imagine simply how much time I had spent
    for this information! Thanks!

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x