ঢাকা, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
পায়ে হেঁটে হজ্ব পালন করেছেন দিনাজপুরের হাজী মহিউদ্দিন
জাহিদ হাসান অন্তর দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ

বাংলাদেশ থেকে হেঁটে হেঁটে সৌদি আরব যেয়ে পবিত্র হজ্ব পালন করেছেন দিনাজপুর সদর উপজেলার রামসাগর দিঘীপাড়া বায়তুল আকসা জামে মসজিদের সাবেক ইমাম হাজী মো. মহিউদ্দিন।

পায়ে হেঁটে হজ্ব করতে যেতে তার সময় লেগেছিলো আঠারো মাস। এ আঠারো মাসে তিনি পাড়ি দিয়েছেন কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ।

হাজী মো. মহিউদ্দিন দিনাজপুর সদর উপজেলার রামসাগর দিঘীপাড়া গ্রামের মৃত মো. ইজার পন্ডিত ও মমিরন নেছার ছেলে।

১৯১৩ সালে জন্ম নেওয়া এই অদম্য মানুষটি বয়স এখন ১০৩। হাজী মহিউদ্দিন দীর্ঘদিন রামসাগরে অবস্থিত বায়তুল আকসা মসজিদের ইমাম ছিলেন।

পায়ে হেঁটে হজ্বপালন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৯৬৮ সালে হজ্ব করার উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে দিনাজপুর থেকে রওনা দেন৷

দিনাজপুর থেকে রংপুর হয়ে প্রথমে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে যান। সেখানে পায়ে হেঁটে হজ্ব পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করলে, তৎকালীন কাকরাইল মসজিদের ইমাম মাওলানা আলী আকবর পায়ে হেঁটে যেতে ইচ্ছুক অন্য এগারো জন হাজীর সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন। শুরু হয় বারো জনের হজযাত্রা।

চট্টগ্রাম দিয়ে ভারত হয়ে পাকিস্তানের করাচি মক্কি মসজিদে গিয়ে অবস্থান করে সৌদি আরবের ভিসার জন্য আবেদন করেন। আট দিন পর সৌদি ভিসা পান। ভিসা পেয়ে পাকিস্তানের নোকঠি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইরানের তেহরান হয়ে ইরাকের বাগদাদ ও কারবালা দিয়ে মিসর পাড়ি দিয়ে সৌদি আরব পৌঁছান। পথে ফেরাউনের লাশ দেখার ইচ্ছাও পূরণ হয় তাদের।

সৌদি আরবে যেয়ে হজ্ব পালন শেষে আল্লাহর রাস্তার ধুলো পায়ে লাগিয়ে হেঁটে হেঁটেই ফিরে আসেন নিজ পরিবারের কাছে।

এমন কষ্ট করে হজ্ব পালন প্রসঙ্গে তার অনুভূতি হলো, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র স্থান থেকে ঘুড়ে এসে নিজেকে ধন্য মনে করেন। তিনি কোনো কষ্ট করেছেন বলে মনে করেন না।’

হাজী মো. মহিউদ্দিন বয়সের কারণে মসজিদের ইমামতি ছেড়ে দিয়েছেন। বর্তমানে তার জীবনে সহযোগী বলে কেউ নেই। এই শেষ বয়সেও নিজের কাজ নিজেকেই করতে হয়।

জীবন নির্বাহের জন্য তিনি রামসাগর পাথরঘাটায় বিভিন্ন ধর্মীয় বই বিক্রি করেন।বই বিক্রির আয় দিয়েই চলছে তার জীবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x