ঢাকা, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৪৭ অপরাহ্ন
পায়রা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে বেড়ীবাঁধ
সাকিব মাহমুদ,বরগুনা:
বরগুনা সদর উপজেলার ৫ নম্বর আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া গ্রামের রামরা তুলাতলা এলাকায় পায়রা নদীর তীব্র স্রোতে ফের ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। একই স্থানে আগেও তিনবার বেড়ীবাধ ভেঙ্গে নদী গর্বে গেলেও নতুন বেড়ীবাধ দিয়েও ভাঙ্গন ঠেকানো যায়নি। এখনই ভাঙ্গন ঠেকানো না গেলে বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে যাবার আশংকা রয়েছে।
রবিবার (১ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, পায়রা নদীর করাল গ্রাসে প্রায় ৬শত মিটার এলাকা নদী গর্বে বিলিন হয়ে যাচ্ছে।  প্রবল স্রোতে বেড়ীবাধ দ্রুত ভেঙ্গে যাচ্ছে। গত বছর জিও ব্যাগ দিয়ে সাময়িক ভাবে তুলাতলা এলাকায় ভাঙ্গন রোধ করা গেলেও এবার বর্ষার শুরুতে ওই এলাকা আবার ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। পায়রা নদীর তীরবর্তী রামরা ও তুলাতলা এলাকায় প্রায় শতাধিক দোকান রয়েছে। অধিকাংশ দোকান মালিকরা তাদের দোকার সরিয়ে নিয়েছেন। কিছু দোকান নদী গর্ভে চলে গেছে।
২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রবল স্রোতে রামরা তুলাতলা এলাকার প্রায় ৬০-৭০ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তখন পায়নি কোন সরকারী সহায়তা। ওই ব্যবসায়ীরা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতে আবারও ভাঙ্গনের মুখে পরেছে তারা। কদিন ধরে লাগাতার বর্ষনে আবারও ওই এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। যে কোন সময় বেড়ীবাধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা নদী গর্ভে তলিয়ে যেতে পারে। হুমকির মধ্য রয়েছে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
ওই এলাকার সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য হারুনা আইরিন বলেন, গত বছর তুলাতলা এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করলেও এবার তীব্র গতিতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এখনই ভাঙ্গন রোধ করা না গেলে যে কোন সময় বেড়ীবাধ ভেঙ্গে আমার বাড়ীসহ রামরা, জাঙ্গালিয়া, সোনার বাংলা ও পাতাকাটা গ্রামের হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পরবে। তুলাতলা এলাকার ব্যবসায়ীরা আতংকে আছে। আবারও জিও ব্যাগ না দিলে অসংখ্য বাড়ী ঘর পায়রা নদীতে চলে যাবে।
ওই এলাকার আওয়ামীলীগ নেতা মহিউদ্দিন নান্টু বলেন, জিও ব্যাগ দিয়ে সাময়িক ভাবে ভাঙ্গন রোধ করা যায়। পায়রা নদীর প্রবল স্রোতে যে ভাবে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে তাতে কনক্রিটের সিসি ব্লক তৈরী করে নদী শাসন করতে হবে। নদী শাসন না হলে কয়েকটি গ্রাম নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে।
জাঙ্গালিয়া এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আবদুস সত্তার জোমাদ্দার বলেন, আমি ও আমার বড় ভাই আবদুর রশিদ জেমাদ্দার দুইবার ঘর ভেঙ্গে ভিতরে নিয়েছি। আমাদের লাখ লাখ টাকার জমি পায়রা নদীর ভাঙ্গনে চলে গেছে। আবারও বাড়ী অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে।
সরকারী চাকরীজীবী আবদুস সোবহান বলেন, জাঙ্গালিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা নদীর গর্ভে চলে গেছে। আমার জমি দিয়ে সেখানে মাদ্রাসা করেছি। কনক্রিটের ব্লক দিয়ে ভাঙ্গন রোধ করতে না পারলে কয়েকটি গ্রাম নদীতে চলে যাবে।
বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু বলেন, ওই এলাকা ভাঙ্গন ঠেকাতে আমি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। কনক্রিটের ব্লক নির্মান করে নদী শাসন করার কাজ প্রক্রিয়াধীন।
বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: কাওসার আলম বলেন, জিও ব্যাগের টেন্ডার হয়েছে। কিছু দিনের মধ্য জিও ব্যাগ ফেলে তুলাতলা এলাকায় ভাঙ্গন রোধ করা হবে। রামরা এলকায় বড় প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। সরকার আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা যায় ওই এলাকার ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x