টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানের চার উপজেলায় দেখা দিয়েছে বন্যা। এতে জেলা সদর, লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি এবং আলীকদম উপজেলায় পানিতে তলিয়েছে কয়েকশ ঘরবাড়ি।
বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো পাহাড়ি ঢলে সড়কে ধস, পাহাড়ধস এবং বন্যার পানিতে সড়ক ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এলাকাগুলোতে।
অন্যদিকে অব্যাহত ভারি বর্ষণে বান্দরবানে সাঙ্গু, মাতামুহুরী এবং বাকখালী তিনটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্লাবিত এলাকাগুলোতে বন্যার পানি ক্রমশ বাড়ছে।
এ ঘটনায় জেলা সদরের শেরেবাংলানগর, ইসলামপুর, আর্মিপাড়া, বনানী সমিল এলাকা, লামা উপজেলার হাসপাতালপাড়া, বাজারপাড়া, মধুঝিরি, রুপসীপাড়া, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম, বাইশারী, সোনাইছড়ি এবং আলীকদম উপজেলার শীলেরতোয়া, লাইনঝিরি এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার।
অপরদিকে রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি এবং সদর উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে পড়েছে। পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে প্রশাসন এবং বান্দরবান ও লামা পৌরসভার পক্ষ থেকে। জেলার সাত উপজেলায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা হয়েছে।
বান্দরবানের মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত চব্বিশ ঘণ্টায় ১৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ বছর বর্ষা মৌসুমে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড এটি। বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ও পাহাড়ধসের শঙ্কা বাড়ছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে। বৃষ্টিতে উপজেলাগুলোতে পাহাড়ধসে সড়ক, ঘরবাড়ি ও বৃষ্টিতে সড়কধসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোলা আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।