নাটোরের বড়াইগ্রামের জোনাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে একটি নিন্দুক পক্ষ মিথ্যা ও অপপ্রচারে তৎপর হয়ে উঠেছে বলে সত্যতা মিলেছে। ওই ইউপি চেয়ারম্যানের মা ঈদের আগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় ও মায়ের চিকিৎসার জন্য তিনি রাজশাহীতে অবস্থান করায় এবং তার অনুপস্থিতিতে চাল বিতরণ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা তৈরি হবে এমন আশঙ্কায় ৫৬ বস্তা চাল বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহি অফিসার জাহাঙ্গীর আলমের অনুমতি সাপেক্ষে গুদামে সংরক্ষণ করে।
এদিকে এই ৫৬ বস্তা চাল গুদামের সংরক্ষণ করার ঘটনাটিকে পুঁজি করে ইউপি চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার শুরু করে তার বিরোধী একটি চক্র। ওই চক্রের সদস্যরা ফেসবুকে ও একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে অপপ্রচার করে যে, ঈদের আগে চাল পেল না দুঃস্থ অসহায় মানুষ। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল ইউনিয়নে। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে জেলার সকল ইউনিয়ন এবং পৌরসভার দুঃস্থ ও অসহায় মানুষদের মাঝে চাল বিতরণ সম্পন্ন হলেও ব্যতিক্রম ঘটেছে এই ইউনিয়ন পরিষদে। এই ইউনিয়নে দুঃস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য ২০ টন ৩৯০ কেজি চাল বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু ৫৬ বস্তা চাল অর্থাৎ ৩ হাজার ৩ শ ৬০ কেজি চাল রেখে দেয়া হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এই চাল ঈদের আগের দিন রাতে ইউনিয়ন পরিষদের গুদাম থেকে অন্যত্র সরানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু স্থানীয়রা সারারাত ধরে এই চাল পাহারা দেন যাতে কেউ সরাতে না পারে।
স্থানীয় এক যুবক সোহেল রানা জানান, রাতে এই চাল সরানোর চেষ্টা করা হলে তারা থানা পুলিশ, উপজেলা নির্বাহি অফিসার, বড়াইগ্রাম থানা এবং র্যাব সিপিসি-২ কে জানানো হয়। কিন্তু কেউই এগিয়ে আসেনি এই চাল রক্ষা করতে। অবশেষে তারা নিজেরাই এই চাল পাহারা দেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে জোনাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক জানান, আমার একটি বিরোধীপক্ষ আছে তারা এটা নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আপনি ৫৬ বস্তা চাল কেন বিতরণ না করে গোডাউনে রেখেছেন এমন প্রশ্ন করা হলে চেয়ারম্যান জানান, আমার মা ভীষণ অসুস্থ তাই আমি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছিলাম এ কারণে চাল বিতরণ সম্ভব হয়নি।
সেক্ষেত্রে আপনার সচিব তো বিতরণ করতে পারতেন, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সচিব আমার সাথেই হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে ফোনে জানিয়েছিলেন যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মায়ের চিকিৎসার জন্য অবস্থান করার কারণে চাল বিতরণ করা সম্ভব হয়নি, পরে বিতরণ করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ কে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, যদি এই ধরনের কোন কিছু ঘটে থাকে তাহলে, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আপাতত উপকারভোগীদের মাঝে অবিতরণকৃত চাল বৃহস্পতিবার সকালে বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান তোজাম্মেলের বিরুদ্ধে তার বিরোধী পক্ষের অব্যাহত মিথ্যা ও অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, ইউপি সচিব, ইউপি সদস্যগণ ও স্থানীয় সুধী সমাজ। তারা হিংসাত্মক রাজনৈতিক চর্চায় লিপ্ত থেকে আওয়ামী লীগ ও এর নেতৃত্বাধীন সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ ও কলঙ্কিত করার চেষ্টা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি দলের জন্য ক্ষতিকর নোংরা রাজনীতি পরিহার করে সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা করার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান।
Leave a Reply