কোপা আমেরিকা ফাইনাল খেলাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মধ্যে মাঠে ঘাটে, এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রমশ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
ইতোমধ্যে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মধ্যে একাধিক স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে পুরো জেলায় হাজারো পুলিশ সদস্য ১১ জুলাই ভোর থেকেই দায়িত্ব পালন করবেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বড় পর্দায় ফাইনাল খেলা দেখা নিষিদ্ধের পাশাপাশি সবধরনের বিজয় মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুদূর দক্ষিণ আমেরিকায় ফুটবলের ফাইনালের এই বড় আসর বসছে আগামী ১১ জুলাই। কিন্তু এর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। আর বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই খেলা নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে একাধিক সংঘর্ষ হয়েছে।
আগামী ১১ জুলাই ভোর ৬ টায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কোপা আমেরিকার ফাইনালের বড় আসর। এই খেলা মুখোমুখি হবে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। এনিয়ে গত কয়েকদিন ধরে প্রধান দুই দলের সমর্থকদের মাঝে চলছে বাকযুদ্ধ।
তর্কবিতর্কের জেরে গত ৬ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের সাদেকপুর গ্রামে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ৪ জন আহত হয়েছেন। ফাইনাল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে হাজারো পুলিশ সদস্য ফাইনাল খেলার দিন (১১ জুলাই) ভোর ৬টা থেকে সতর্কতামূলক অবস্থানে থাকবেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, ১১ তারিখ ভোর ৬টা থেকে কোপা আমেরিকার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে। এই ফাইনাল খেলাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একাধিক স্থানে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাই জেলা পুলিশ থেকে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, খোলা জায়গায় বড় পর্দায়, কোন ক্লাবে বা চায়ের দোকানে কোথাও খেলা দেখার আয়োজন করতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে আমরা মাইকিং করে জানিয়ে দেব।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফাইনাল খেলার দিন ভোর ৫টা থেকে মাঠে থাকবে পুলিশের বিশেষ টিম। এছাড়াও জেলার ১১৬টি বিটে ৪ জন দল করে ১ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য মাঠে কাজ করবে। পাশাপাশি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা আগাম বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। খেলা শেষ হওয়ার পর কোনো অবস্থাতেই বিজয় মিছিল করা যাবে না। এ ব্যাপারে আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা চাইবো। কেউ যদি পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই বিষয়ে বিন্দুমাত্র কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
খেলা নিয়ে তর্কবিতর্কের জেরে গত ৬ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নে রেজাউল নামের এক ব্রাজিল সমর্থকের চাচা নোয়াব মিয়াকে (৬০) মারধর করেন আর্জেন্টিনা সমর্থক জীবন মিয়ার লোকজনেরা। এ মারধরের জেরে একই দিন রাতেই আর্জেন্টিনা সমর্থক জীবনের তিন সহযোগীকে বেদম প্রহার করেন ব্রাজিল সমর্থক রেজাউলের লোকজনেরা।
পরে উভয় পক্ষের ৪ জন একই হাসপাতাল চিকিৎসা গ্রহণ করেন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।